অনুকুল আবহাওয়া আর দাম ভাল পাওয়ায় উচ্চ ফলনশীল জাতের সুখসাগর পেঁয়াজ চাষে ঝুকে পড়েছেন মেহেরপুরের চাষিরা। বিগত ১৮ বছর ধরে এ জাতের পেয়াজ চাষ করছেন তারা। চাষিরা বলছেন- অন্যান্য জাতের পেয়াজের চেয়ে সুখসাগর জাতের পেয়াজে ফলন বেশি ও উৎপাদন খরচ কম। কৃষি বিভাগ বলছে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় পেঁয়াজের চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫শ ৩৬ হেক্টর জমিতে। যার অধিকাংশই সুখসাগর পেঁয়াজ। প্রতি বিঘা জমির পেঁয়াজ চাষে খরচ ৮০-৯০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সুখসাগর পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ১০০ -১৫০ মণ পর্যন্ত। গেল বছর সুখসাগর পেঁয়াজ উত্তোলনের ভরা মৌসুমে বিক্রি হয়েছে ৫ থেকে ৬শ টাকা মণ দরে।
এবছর এখন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ দরে। এলসির মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজ আমদানি না করা হলে এই দাম অক্ষুন্ন থাকবে। সুখসাগর পেঁয়াজ উত্তলনের ভরা মৌসুমে এর দাম কমে যায়। তারপরেও এক হাজার থেকে ১২শ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পারলেও দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে মনে করে চাষী।
মুজিবনগর উপজেলার শিবপুরের পেঁয়াজ চাষী সালাম জানান, তিনি গত ৫ বছর যাবত পেয়াজ চাষ করছেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া পেয়াজ চাষের জন্য উপযোগি। এবার দুই বিঘা পেয়াজ চাষ করেছেন। পেঁয়াজ চাষে বিঘা প্রতি প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়। এলসি পেয়াজ আমদানী না হলে দ্বিগুণ লাভ হয়। আগামীতে আরো দুই বিঘা পেয়াজ আবাদ করবেন বলেও জানান তিনি।
গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের পেয়াজ চাষি সাইফুল জানান, সুখসাগর পেঁয়াজ চাষে লোকসান পুষিয়ে নিতে অনেক চাষী এখন সাথী ফসল হিসেবে পোঁয়াজের সাথে কলার চাষ করে আসছে। তারপরেও পেঁয়াজ উত্তোলনের ভরা মৌসুমে এলসির মাধ্যমে দেশে পেঁয়াজ আমদানি না করার দাবী জানায় চাষিরা।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, সুখ সাগর পেঁয়াজের জাত উন্নত মানের। ফলনও বেশ ভাল। চাষিদেরকে এ জাতের পেঁয়াজ চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি উন্নত জাতের পেঁয়াজ চাষের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উৎপাদনও ভাল এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।