নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় গৃহবধূকে ধর্ষণ করতেই সিঁধ কাটা হয় এবং এরপর চুরির নাটক সাজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি আবুল খায়ের ওরফে মুন্সি মেম্বার (৫০)।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, আবুল খায়ের মুন্সি তার সহযোগী মেহরাজকে (৪৮) দিয়ে ঘরের সিঁধ কাটিয়ে গরু বেপারী হারুনকে (৪২) নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করেন। সেসময় মেহরাজ ওই নারীর পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পরপরই সিঁধ কাটার কাজে ব্যবহৃত কোদাল, কাঁচি, কালো প্যান্ট ও কানটুপি জব্দ করেন পুলিশ।
আরো পড়ুন :মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ : প্রধান আসামি আ.লীগ নেতা গ্রেফতার
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গ্রেপ্তার সাবেক ইউপি সদস্য আবুল খায়ের মুন্সিকে প্রধান আসামি ও হারুনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ আবুল খায়ের ও বুধবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়ন থেকে মেহরাজকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হারুনের সহযোগিতায় ওই নারীকে আবুল খায়ের মুন্সি ও হারুন পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। মেহরাজ পাশের রুমে থাকা কিশোরীকে (১২) ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় স্বর্ণের কানের দুল ও ঘরে থাকা নগদ টাকা নিয়ে যান তারা। পরে ওই কিশোরীর হাতের বাঁধন খুলে দেন এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বললে তাদের প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেন।
মূলত হারুন গৃহবধূর বসতঘরে মালামাল রয়েছে বলে মেহরাজকে চুরি করতে ইন্ধন যোগান। মেহরাজ রাজি হলে সিঁধ কেটে ঘরে প্রবেশ করেন তারা। পরে হারুনের সঙ্গে মুন্সী মেম্বারকে দেখে মেহরাজ অবাক হন এবং বুঝতে পারেন ধর্ষণ করতেই তাকে দিয়ে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজীব, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) নিত্যানন্দ দাস, চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের একটি বাড়িতে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে সিঁধ কেটে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।