সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা দিতে না পাড়ায় স্ত্রী রেহেনা পারভিনকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ আাব্দুল আজিজকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যৃদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর গ্রামের এন্তাজ সরদারের ছেলে মোঃ আাব্দুল আজিজ (৫০)। তবে এসময় আসামী আদালতের কাঠগোড়ায় ছিল না।
আদালত সূত্র জানা যায়, ১৯৯৪ সালে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর গ্রামের এন্তাজ সরদারের ছেলে মোঃ আাব্দুল আজিজের সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবরদাড়ি গ্রামের মোঃ আব্দুল মান্নানের মেয়ে রেহেনা পারভিনের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে রেহেনাকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতো মোঃ আজগার আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় ১৯৯৭ সালের ২০ এপ্রিল বিকেল তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বাড়িতে রেহেনা পারভিনকে স্বামী মোঃ আাব্দুল আজিজ পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় রেহেনা পারভিনের চাচা শওকত আলী সরদার পরদিন বাদী হয়ে আজগার আলী ও তার ভাই রুহুল কুদ্দুসসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন। ১৯৯৮ সালে আসামী মোঃ আাব্দুল আজিজ ও তার ভাই রুহুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ (ক) ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে আসামী রুহুল কুদ্দুস মারা যান। আসামী মোঃ আাব্দুল আজিজ পলাতক থাকেন।
মামলার নথি, ১২ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে পলাতক আসামী মোঃ আাব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এমজি আযম মোঃ আজগার আলীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন। আসামী পলাতক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এডভোকেট বসির। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি এডভোকেট মোঃ জহরুল হায়দার বাবু। সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এডভোকেট মোঃ জহরুল হায়দার বাবু জানান, দীর্ঘ ২৪ বছর পরে আসামীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ আদেশে খুশি।