আজঃ সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

সড়কে ফিরল ট্রাফিক পুলিশ

প্রকাশিত:সোমবার ১২ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১২ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সহিংসতার জেরে এক সপ্তাহের মতো রাজধানীর সড়কে ছিল না ট্রাফিক পুলিশ। পুলিশ শূন্য রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বাঁশি-লাঠি হাতে এ কয়েকদিন সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ অচলাবস্থার পর সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর সড়কে কাজে ফিরেছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। আগারগাঁও, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট ও মহাখালীতে ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এক সঙ্গে কাজ করছেন।

গত কয়েকদিন ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা; তাদের কাছ থেকে সড়কের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর কিছু দাবিতে গত ৬ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন।


আরও খবর



বিএসএমএমইউর নতুন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার

প্রকাশিত:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | হালনাগাদ:সোমবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Image

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার।  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

 প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য এঁর অনুমোদনক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯৮ এর ১৬ ধারা অনুযায়ী অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, চেয়ারম্যান, ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এর শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হল। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তাঁর নিযুক্তির মেয়াদ হবে ৪ (চার) বছর।

অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার ১৯৮৫ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করেন। বিএএফ শাহীন স্কুল এবং হলি ক্রস কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৯৫ সালে ডিজিও ডিগ্রী এবং ১৯৯৮ সালে বিসিপিএস থেকে এফসিপিএস ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৭ সালে চিকিৎসক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০০৩ সালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস এন্ড গাইনী বিভাগে তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন উইং এ ২০০৬ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ২০১৫ সালে ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উক্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গুণী এই শিক্ষক এর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রায় অর্ধশত প্রকাশনা রয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে গবেষণা কার্যক্রমে গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থান করেছেন।

অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বিসিপিএস, অবসট্রেটিক্যাল এন্ড গাইনেকোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অফ কল্পোস্কপি এন্ড সার্ভিক্যাল প্যাথলজি এর আজীবন সদস্য। এছাড়াও তিনি ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন সোসাইটি অফ বাংলাদেশ এর সহ সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্যারিনেটাল সোসাইটির কার্যকরী সদস্য। 

নিউজ ট্যাগ: বিএসএমএমইউ

আরও খবর



বন্যা দুর্গত ৭৫০ পরিবারের মাঝে রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিয়নে ত্রাণ বিতরণ

প্রকাশিত:শনিবার ৩১ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩১ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মনীষা আচার্য, চট্টগ্রাম

Image

সারাদেশের মতো নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় বিপদর্যস্ত হয়েছে। বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিয়ন।

শুক্রবার সকালে রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিয়নের পক্ষ থেকে নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যা দুর্গত ৭৫০ পরিবারের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, বিস্কুট, তেল, বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান হাজী দেলোয়ার হোসেন, রিহ্যাব পরিচালক ও রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির কো-চেয়ারম্যান (১) মোরশেদুল হাসান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট আবদুল কাইয়ূম ভূইঁয়া, নূর উদ্দীন আহমদ, মাঈনুল হাসান প্রমুখ।

ত্রাণ বিতরণকালে বক্তারা বলেন, নোয়াখালী, ফেনীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। যতটুকু সম্ভব এসব ঘরবন্দি মানুষের কাছে খাদ্য, পানি পৌঁছানো জরুরী। আমরা বন্যা দূর্গতদের জন্য রিহ্যাব এর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করে যাচ্ছি।

নিউজ ট্যাগ: চট্টগ্রাম

আরও খবর
ভোলায় বিপুল অস্ত্রসহ ৭ সন্ত্রাসী আটক

সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪




প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করছেন মার্কিন প্রতিনিধিদল। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রোববার বেলা ১১টায় এ বৈঠকটি শুরু হয়।

এর আগে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় আসেন।

এতে আরও রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের প্রতিনিধি।

ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করছে।

এদিকে সকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর জানান, বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ২০০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের অংশ হতে পেরে ভালো লাগছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এর আওতায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হবে।

অঞ্জলি বলেন, এ চুক্তিটি বাংলাদেশের জনগণের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধির জন্য ভূমিকা রাখবে। এর মানে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা। আমরা স্বাস্থ্য, শাসন ব্যবস্থার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। তরুণদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে তারা যাতে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে সেদিকে নজর দিচ্ছি।


আরও খবর



বাংলাদেশে বন্যাদুর্গতদের জন্য ৪০ লাখ ডলার বরাদ্দ ঘোষণা জাতিসংঘের

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় দেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৪০ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে।

গতকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্রের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে পাঠ করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী জয়েস এমসুয়া সংস্থার নিজস্ব কেন্দ্রীয় জরুরি সহায়তা তহবিল (সিইআরএফ) নামক মানবিক সহায়তা তহবিল থেকে বাংলাদেশের জন্য এ বরাদ্দ দিয়েছেন। গত মাসের শেষ থেকে বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষকে সহায়তার জন্য এ অর্থ খরচ করা হবে।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরে ডুজারিক বলেন, বন্যায় ৩ হাজার ৪০০টির বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নেওয়ার কথা জানা গেছে। বন্যার কারণে সাত হাজারের বেশি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১৭ লাখ স্কুলশিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার কারণে পশু ও মৎস্যসম্পদ খাতে ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে।

ডুজারিক আরও বলেন, আমাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সহযোগিতাকারীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা তৎপরতা চালাচ্ছি এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কাজে সহযোগিতা করছি। আমরা এই বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও সম্প্রদায়গুলোকে সাহায্যের জন্য স্থানীয়ভাবে যেসব প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তাতে সহযোগিতা করছি।

এ বন্যাকে চলতি বছরে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট চতুর্থ বড় দুর্যোগ বলে উল্লেখ করেন ডুজারিক। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে বন্যা এবং এবারের এ আকস্মিক বন্যার ঘটনায় গত মে মাসের শেষ থেকে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


আরও খবর



ড. ইউনূসের ‘মেগাফোন কূটনীতিতে’ বিস্মিত ভারত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবেশি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় রয়েছে। একদিকে যখন হাসিনার ভারতে থাকার বিষয়টি বাংলাদেশের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকার ভারতকে অবাক করেছে।

বিবিসির আনবারাসান এথিরাজন জানার চেষ্টা করেছেন এই দুই দেশের সম্পর্ক এখন কোথায় গিয়ে ঠেকেছে?

শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবে দেখা হয়। কারণ, তার ১৫ বছরের শাসনামলে দুই দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময়টি ভারতের নিরাপত্তার জন্যও সুবিধাজনক ছিল। কারণ, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত কিছু ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দমন করেছিলেন এবং কিছু সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ভারতে তার অবস্থান নেওয়া এবং তিনি সেখানে কতদিন থাকবেন; সে বিষয়টি দুই দেশের দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে।

বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে ড. ইউনূসের গত সপ্তাহের এক সাক্ষাৎকারে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, দিল্লিতে থাকার সময় শেখ হাসিনাকে যেন রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়।

ড. ইউনূস ওই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায়, তাহলে শর্ত হচ্ছে তাকে চুপ থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা দিল্লিতে যাবার পর যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তা বাংলাদেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছিল, ড. ইউনূস হয়তো সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও এরপর থেকে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে আর কোনো বিবৃতি দেননি। জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য এবং তাকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের ভেতরে দাবি উঠেছে।

ড. ইউনূস সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন যে, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দুই দেশের সম্পর্ক এখন নিম্ন পর্যায়ে আছে বলেও তিনি বর্ণনা করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে কর্মকর্তারা হতাশ বলে জানা গেছে।

এক ভারতীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, বাংলাদেশে কী ঘটছে, সেগুলোর দিকে ভারত নজর রাখছে এবং ঢাকা থেকে সরকার ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কী ধরনের বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন, সেগুলোর দিকে ভারত লক্ষ্য রাখছে।

ইউনূসের এ ধরণের বক্তব্যকে ভারতের সাবেক কূটনীতিকরা মেগাফোন কূটনীতি হিসেবে বর্ণনা করছেন এবং বিষয়টিকে তারা বিস্মিত হয়েছেন।

ড. ইউনূস মিডিয়ার মাধ্যমে বিতর্কিত দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন বলেও তারা মনে করেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য এবং দুই দেশের সব উদ্বেগের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য ভারত তাদের প্রস্তুতি থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে, বলছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার ভিনা সিক্রি।

অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক বলেছেন, এই সমস্যাগুলো নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করা প্রয়োজন এবং কিসের ভিত্তিতে ড. ইউনূস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিবিসি বাংলার মুকিমুল আহসানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতীয় নেতারা কি কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন না? ড. ইউনূসকে যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি অবশ্যই তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন।

আপনি যদি সমালোচনা করতে চান। তবে যে কোনো বিষয়েই সমালোচনা করতে পারেন, বলছিলেন তৌহিদ হোসেন।

কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ড. ইউনূস টেলিফোনে কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়নি।

ভারতে একটি বড় ধরণের ঐকমত্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে যে, শেখ হাসিনা যতদিন না অন্য কোন দেশে প্রবেশের অনুমোদন পাচ্ছেন, ততদিন তিনি ভারতে থাকতে পারবেন।

তবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বিক্ষোভের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু তাকে বাংলাদেশে গণহত্যার প্রধান আসামি করা হয়েছে। আমরা তাকে আইনিভাবে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করব।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানালেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম।

ঢাকায় ভারতীয় সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেন, তিনি এখানে ভারতের অতিথি হিসেবে অবস্থান করছেন। আমরা যদি আমাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুর প্রতি মৌলিক সৌজন্যতা না করি, তাহলে ভবিষ্যতে কেন কেউ আমাদের বন্ধু হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেবে?

ড. ইউনূস তার সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর কাছে না পৌঁছানোর জন্যও দিল্লির সমালোচনা করেন। তিনি বলেছেন, একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে যে, সবাই ইসলামপন্থী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইসলামপন্থী এবং বাকি সবাই ইসলামপন্থী এবং তারা এই দেশকে আফগানিস্তানে পরিণত করবে। এবং বাংলাদেশ শুধুমাত্র শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ। ভারত এই ব্যাখ্যাতেই বিমোহিত হয়ে আছে। কিন্তু ভারতীয় বিশ্লেষকরা ভিন্ন মত পোষণ করেন।

ভিনা সিক্রি বলেন, আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। বাংলাদেশে আমাদের হাইকমিশনাররা কোনো লেবেল না দিয়েই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছেন।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময় ঢাকা ও দিল্লির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ওই সময় ভারতের উত্তর-পূর্ব থেকে বিদ্রোহীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঢাকাকে অভিযুক্ত করেছিল দিল্লি। যদিও বিএনপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।

তবে বাংলাদেশের অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে, ভারতের উচিত বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা। সামনে যখনই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন এই দলটি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে কোনো ভারতীয় কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমি এটার কোনো কারণ জানি না।

উল্টো বিএনপির সঙ্গে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা নিয়মিত বৈঠক করছেন। শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনগুলোয় নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়। এতে সন্দেহভাজন ইসলামপন্থীদের দ্বারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে যায়।

ভারত ইতোমধ্যে হিন্দুদের ওপর হামলার খবরে বেশ কয়েকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত কয়েক সপ্তাহে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মাজারে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশে সুন্নি মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং কট্টরপন্থীরা মাজার ও সমাধিকে ইসলাম সম্মত নয় বলে মনে করে।

সিরাজগঞ্জ জেলায় আলী খাজা আলী পাগলা পীরের মাজারের তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী তামান্না আক্তার বলেন, কয়েকদিন আগে একদল লোক এসে আমার শ্বশুরের সমাধি ভাঙচুর করে এবং কোনো অনৈসলামিক অনুষ্ঠান না করার জন্য আমাদের সতর্ক করে।

বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন বলেছেন, যারা ধর্মীয় স্থানকে টার্গেট করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ইসলামী কট্টরপন্থীরা যদি বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেটা যত ছোটই হোক না কেন, তা দিল্লির জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।

গত কয়েক সপ্তাহে একজন দণ্ডিত ইসলামী জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে নয়জন সন্দেহভাজন মৌলবাদী গত মাসে জেল ভেঙে পালিয়ে যায়- তাদের মধ্যে চারজনকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিষিদ্ধ সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানি গত মাসে জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। শেখ হাসিনার সরকার এই গোষ্ঠীটিকে ২০১৬ সালে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ২০১৫ সালে এক নাস্তিক ব্লগারকে হত্যার অভিযোগে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্যান্য বিচারাধীন মামলার কারণে কারাগারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তিনি কারাগারে ছিলেন।

গত মাসে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ভারত চেনে, প্রাক্তন কূটনীতিক রিভা গাঙ্গুলি দাস একে একটি গুরুতর বিষয় বলে অভিহিত করেছেন।


আরও খবর