আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজির মহোৎসব

প্রকাশিত:বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

সড়ক-মহাসড়কে নির্বিঘ্নে চলছে পরিবহণ চাঁদাবাজির মহোৎসব। বিভিন্ন বাস কোম্পানি, ব্যক্তি, সংগঠন ও সমিতির নামে টার্মিনাল এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্টপেজ থেকে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা উঠানো হচ্ছে। রাজধানীতেই চলাচলকারী গণপরিবহণের মধ্যে শুধু বাস থেকেই উঠে অন্তত ৫০ লাখ টাকা চাঁদা। সেই হিসাবে মাসে এই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

রুট খরচ, কোম্পানি পরিচালনা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের কথা বলে আদায় করা হচ্ছে এই অর্থ। পরিবহণ সেক্টরে এটা জিপি বা চাঁদা হিসাবে পরিচিত। কেবল বাস থেকেই চাঁদা উঠছে, তা নয়। মোটা অঙ্কের চাঁদা উঠানো হয় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লেগুনা, টেম্পোসহ অন্যান্য যানবাহন থেকেও।  নিজস্ব অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

সূত্র জানায়, ঢাকা ও এর আশপাশ জেলায় কাগজে-কলমে তিনশর বেশি রুটে প্রায় ১০ হাজার বাস ও মিনিবাস চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। তবে বাস্তবে প্রতিদিন চলে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার বাস। এসব যানবাহন চললেই রুট ও কোম্পানি অনুযায়ী দিনে ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা বিভিন্ন পর্যায়ে চাঁদা দিতে হচ্ছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের নামে বা বেনামে চলাচল করা বাসের ওই চাঁদা দিতে হয় না। এছাড়া রাজধানীর অন্তত চারটি রুটে এসি বাস চলে। এগুলোর চাঁদা দেওয়ার অঙ্ক অন্যগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) মোশাররফ হোসেন মিয়াজী বলেন, সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এখন থেকে রাস্তায় কেউ চাঁদা তুলতে পারবে না। টার্মিনালগুলোয় সিটি করপোরেশন এবং মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো নিজ নিজ অফিসে বসে নির্ধারিত চাঁদা তুলতে পারবে।

এর বাইরে কেউ চাঁদাবাজি করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। সূত্রমতে, প্রভাবশালী ছাড়া সাধারণ মালিকদের অন্তত ছয় হাজার গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। গাড়িপ্রতি ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। গাড়িপ্রতি গড়ে ৮৫০ টাকা চাঁদা ধরলেও দিনে ৫০ লাখ টাকা উঠছে।

এছাড়া মহাসড়কে বিভিন্ন পরিবহণ থেকে চাঁদা তোলার অঙ্কও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ ব্যাপারে সাম্প্রতিক সময়ের তেমন কোনো পরিসংখ্যান দায়িত্বশীল কারো কাছ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৯ সালে হাইওয়ে পুলিশের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া গিয়েছিল। এখন তা আরও বেড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশের মহাসড়কগুলো থেকে প্রতিদিন চাঁদা উঠছে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫ টাকা। যা বছরে দাঁড়ায় ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৫ টাকা। বিভিন্ন মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী ৫৮ হাজার ৭১৯টি যানবাহন থেকে তোলা হয়েছে মোটা অঙ্কের এ চাঁদা। এ টাকা আদায় করছে পরিবহণের মালিক-শ্রমিকের নামে ২১৫টি সংগঠন।

এগুলোর নেতৃত্বে আছেন সরকারি দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা। পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ছাড়াও মহসড়কের কোনো কোনো স্থানে পৌর কর ও মসজিদ উন্নয়নের নামেও প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে মোট অঙ্কের অর্থ। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চাঁদাবাজির এ চিত্র শুধু মহাসড়কের। তবে জেলার অভ্যন্তরে বিভিন্ন সড়কে চাঁদা আদায়ের ব্যাপকতা আরও অনেক বেশি।

এ ধরনের চাঁদা আদায় না করতে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। এরপরও বন্ধ হয়নি চাঁদাবাজি।

চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সম্প্রতি ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংক, লরি প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। বিষয়টি নিয়ে রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশের কেউ চাঁদা দাবি করলে তা সঙ্গে সঙ্গেই হটলাইনে জানানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, চাঁদাবাজি অগের অবস্থায় ফিরে গেছে। এটি বন্ধের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। ওই বৈঠকে চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির নামে চাঁদাবাজি বিষয়ে তিনি বলেন, মালিকরা চাঁদা নিয়ে থাকলে সেটি অন্যায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, পুলিশ একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে। ভুক্তভোগীরা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারেন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রজাপতি পরিবহণের অধীনে রাজধানীর সড়কে চলাচলকারী একাধিক গাড়ির মালিক  বলেন, মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় সংগঠন এবং পুলিশের নামে চাঁদা দিতে হয়। আমাদের গাড়ি আব্দুল্লাহপুর থেকে ঘাটারচর (বছিলা, মোহাম্মদপুর) পর্যন্ত চলে। গাড়ি রাস্তায় বের করলেই ১ হাজার ৪০০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে।

মালিক সমিতিকে দিতে হচ্ছে ৪০০ টাকা, ঘাটারচর এবং আব্দুল্লাহপুরে চাঁদাবাজ চক্রকে দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা, যাওয়া-আসার পথে ১৫ জন সুপারভাইজারকে ২০ টাকা করে দিতে হয়। এই টাকার অর্ধেক কোম্পানি পরিচালনা পরিষদ নেয়। বাকি অর্ধেক সুপারভাইজাররা নেয়। তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের কাছ থেকে আগে সরাসরি মাসোহারা নিলেও এখন নেয় না। এখন কোম্পানির (পরিবহণের পরিচালনা পরিষদ) কাছ থেকে নেয়। তবে আমাদের কাছ থেকে কোম্পানি যে হারে টাকা নেয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সেই হারে পুলিশকে দেওয়া হয় না। তখনই পুলিশ ঝামেলা করে। মামলা দেয়। এছাড়া পুলিশ গাড়ি ধরলেই ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রুট খরচের নামে নীলাচল পরিবহণ বাস থেকে দিনে ২ হাজার ৩০০, ঠিকানা পরিবহণ ৮০০, মৌমিতা ১ হাজার ২০০, ডি-লিংক ৮০০, সাভার পরিবহণ ১০০০, ভিক্টর ক্লাসিক ১ হাজার ৩০০, রবরব ৯০০ ও মক্কা পরিবহণ ১ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া বলাকা পরিবহণ ১ হাজার ৮০০, আকাশ পরিবহণ ১ হাজার ২০০, রমজান পরিবহণ ১ হাজার ৩০০, প্রভাতী-বনশ্রী ৮০০, রজনীগন্ধা এক হাজার ৫০০, শিকড় পরিবহণ ৮০০, বিকাশ পরিবহণ ১ হাজার ৮০০, বিহঙ্গ পরিবহণ ১ হাজার ৭০০, গাজীপুর পরিবহণ ১ হাজার ৬০০, স্বজন ৯০০, বসুমতী ১ হাজার ৬০০, আজমেরি ১ হাজার ৫০০, আসমানি ১ হাজার ৩০০, দেওয়ান পরিবহণ ৭০০, শুভযাত্রা ৮০০ টাকা, মিডলাইট ৯০০, ইতিহাস ১ হাজার ১০০, রাজধানী পরিবহণ ৮০০, মোহনা ৮০০, ট্রান্স সিলভা ৯০০, রাইদা ১ হাজার ৮০০, অনাবিল ১ হাজার ৩০০ এবং বৈশাখী থেকে ৮০০ টাকা করে নেওয়া হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর কুতুপখালী বিশ্বরোড (ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রোডে যেতে হাতের ডান পাশে)। ডাচ্-বাংলা এটিএম বুথের পাশে পঁচা ডোর অ্যান্ড ফার্নিচারের সামনে মূল রাস্তার ফুটপাতে বেঞ্চে বসেছিলেন দুই পুলিশ সদস্য। রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন অপর এক পুলিশ সদস্য। তবে তাদের কোনো তৎপরতা ছিল না।

কিন্তু পুলিশের লাইট দিয়ে নীল আলো জ্বালিয়ে এদিক-সেদিক ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন দুই যুবক। এদের একজনের পরনে ছিল লাল শার্ট। অন্যজনের পরনে সাদা শার্ট। তারা রিকশা, ভ্যান এবং নানা ধরনের গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল তারাই পুলিশ সদস্য। এ সময় রং-সাইড দিয়ে ইটভর্তি একটি ট্রাক (মোমেনশাহী-১৭) যাচ্ছিল। লাল শার্ট পরিহিত যুবক ওই ট্রাক থামিয়ে ২০০ টাকা দাবি করলেন।

পরে চালক তাকে ৫০ টাকা দিলেন। পাশে দাঁড়িয়ে যুগান্তর প্রতিবেদক বিষয়টি দেখছিলেন। ওই দুই যুবক এবং পুলিশ সদস্য বিষয়টি বুঝতে পরে তাদের তৎপরতা কমিয়ে দিলেন। এরপর আধা ঘণ্টা ধরে সেখানে অবস্থান করলেও পুলিশ বা যুবকদের তৎপরতা সে অর্থে দেখা যায়নি। তিন পুলিশ সদস্য বসেছিলেন ফুটপাতের বেঞ্চে। এদের একজনের নেমপ্লেটে লেখা জিয়াউর। পাশেই পার্কিং করা ছিল পুলিশের একটি গাড়ি (ই : নং ২৭৮৭)।

ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ শাখার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাক ধরা হয়। কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে সেখানে চাঁদাবাজি করা হয়। গাড়িপ্রতি ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সেখানে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, পুলিশ এখন সরাসরি নিজের হাতে টাকা নেয় না।

তারা সোর্সের মাধ্যমে গাড়ি আটকায়। টাকাও তাদের মাধ্যমে নেয়। গাড়ি আটকানোর সময় পুলিশ সদস্যরা পাশেই থাকেন। সোর্সরা অনেক সময় বেশি টাকার লোভে চালক-হেলপারদের মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। তিনি বলেন, কাঁচপুর এবং তারাবো এলাকায়ও একই কায়দায় চাঁদা আদায় করা হয়। সিটি করপোরেশনের নামে রাস্তায় কোনো গাড়ি থেকে চাঁদা তোলা যাবে না বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা আছে।

তারপরও রাজধানীর শনিরআখড়া, কাজলা এবং রায়েরবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় সিটি করপোরেশনের নামে গাড়িপ্রতি ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তোলা হচ্ছে। চাঁদা আদায়কারীরা রাস্তায় লাঠিসোঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। চালকরা তাদের ভয়েই টাকা দিয়ে দেন। এই টাকার ভাগ যাচ্ছে পুলিশের পকেটেও। তিনি আরও বলেন, কোনাবাড়ী এলাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে নয়। সেখানেও সিটি করপোরেশনের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে।

সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, সারা দেশেই পরিবহণ সেক্টরে পুলিশের হয়রানি, চাঁদাবাজি এবং মাসোহারা সিস্টেম চালু আছে। এছাড়া স্পট চাঁদাবাজি তো আছেই। চাঁদাবাজির কয়েকটি স্পট সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাইপাইলে সাভার থানা পুলিশ, এলেঙ্গায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়িপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে গাড়ি ছাড়িয়ে আনতে ১০ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত টাকা লাগছে। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ মোড়ে থানা পুলিশ টাকা আদায় করছে। চট্টগ্রামের বাড়ইহাট এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ গাড়িপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটে পুলিশ, মাস্তান, বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি চাঁদাবাজি করছে।

ট্রাক পারাপারে যেখানে দুই হাজার ২০০ টাকা লাগে সেখানে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাজধানীর গুলিস্তান, জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, মতিঝিল, গোলাপবাগ, রাজধানী মার্কেট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, স্টাফ কোয়ার্টার, দোলাইরপাড়, কোনাপাড়া, পোস্তগোলা ব্রিজের দুই পাশে এবং ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় থানা ও ট্রাফিক পুলিশ চাঁদাবাজি করে।

শনি এবং রবিবার সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে শুরু করে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে চাঁদাবাজির দৃশ্য চোখে পড়ে। চাঁদা আদায় করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ নামধারী নেতা ও পুলিশ সদস্যরা। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে রয়েছে হিউম্যান হলার ও লেগুনা স্ট্যান্ড। এসব লেগুনা থেকে জিপির নামে দৈনিক ৫৫০ টাকা, লাইনম্যানের নামে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়। রায়েরবাগ ফুটওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে দুই শতাধিক অটোরিকশা ও সিএনজি থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করেন স্থানীয় জাহাঙ্গীর। এ টাকার ভাগ যায় ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগেও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, টাকা ভাংতির নামে হচ্ছে চাঁদাবাজি। যেটি পরিবহণ খাতে ব্যাকমানি হিসাবে পরিচিত। প্রতিদিন সকালে বাস ছাড়ার সময় বাসচালক ও চালকের সহকারীদের বাধ্যতামূলক দেওয়া হয় খুচরা টাকা। ট্রিপ শেষে ওই বাসচালকদের কাছ থেকে নেওয়া হয় এক হাজার বা ৫০০ টাকার নোট। প্রয়োজন না হলেও চালক-হেলপারদের নিতে হচ্ছে খুচরা টাকা। আর ফেরত দিতে হচ্ছে টাকার বড় নোট। সাধারণত ৯০০ টাকার খুচরা টাকার বিপরীতে বাসের চালককে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয় এক হাজার টাকা।এ চাঁদার টাকার ভাগ যায় পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের পকেটেও। সূত্র: যুগান্তর


আরও খবর



বনানীতে সড়কের মাঝে যাত্রীবাহী বাসে আগুন

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বনানীতে সড়কের মাঝে চলন্ত একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন বলেন, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জে কে এন্টারপ্রাইজ (ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করে) পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। সেটি বাসের চাকার নিচে পড়ে যায়। ওই অবস্থায় মোটরসাইকেলটিকে টেনে হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ ঘটে এবং সেখান থেকে বাসে আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: বাসে আগুন

আরও খবর



বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

আন্তর্জাতিক বাজারে একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে স্বর্ণ। বুধবার (৩ এপ্রিল) আরেক রেকর্ড গড়েছে নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটি। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্সের দর উঠেছে ২২৯৪ ডলারে। বিশ্ববাজারে যা নতুন নজির। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি চড়া হয়েছে। তবু সুদের হার কমাতে চাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। ফলে মার্কিন মুদ্রা ডলারের মান কমেছে। সঙ্গত কারণে বুলিয়ন বাজার আরও চাঙা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে আলোচ্য কার্যদিবসে স্পট মার্কেটে বৈশ্বিক বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। আউন্সপ্রতি মূল্য স্থির হয়েছে ২২৯২ ডলার ৩১ সেন্টে। দিনের শুরুতে যা ছিল ২২৯৪ ডলার ৯৯ সেন্ট। বিশ্ব ইতিহাসে তা সর্বকালের সর্বোচ্চ। এর আগে কখনও এত দাম দেখেননি বিশ্ববাসী।

নিউইয়র্কভিত্তিক স্বাধীন ধাতু ব্যবসায়ী তাই ওয়াঙ বলেন, চলতি বছর আর কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল। এরপরই আরেক ঐতিহাসিক উচ্চতায় উঠেছে স্বর্ণের দর। আমি মনে করি, আউন্সে মূল্য শিগগিরই ২৩০০ ডলারে পৌঁছাবে। তাতে বিনিয়োগকারীরা আরও আকৃষ্ট হবেন।

আগামী ১১ থেকে ১২ জুন বৈঠবে বসবেন ফেডের নীতি-নির্ধারকরা। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সময়ই সুদের হার কমানোর ঘোষণা দেবেন তারা। এমনটি হলে স্বর্ণের দাম আরও বাড়বে।


আরও খবর



তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পাকিস্তান সফরে গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সোমবার (২২ এপ্রিল) তিন দিনের সরকারি সফরে দেশটিতে পৌঁছান তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পর প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পাকিস্তানে সফর করছেন রাইসি।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সোমবার তিন দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তানে পৌঁছেছেন। এদিন সকালে নূর খান বিমানঘাঁটিতে ইরানি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী মিয়া রিয়াজ হোসেন পীরজাদা।

এই সফরে নিজেদের সম্পর্ক বাড়াতে এবং বাণিজ্য, সংযোগ, জ্বালানি, কৃষি ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে দুই দেশের নেতারা আলোচনা করবেন। এছাড়া সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হবে।

রেডিও পাকিস্তানের মতে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজ (সোমবার) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রধানমন্ত্রী হাউসে পৌঁছালে সফররত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। পরে প্রেসিডেন্ট রাইসি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

এদিকে, পার্স টুডে জানিয়েছে, পাকিস্তান সফর শেষে বুধবার (২৪ এপ্রিল) শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের আমন্ত্রণে একদিনের সফরে দেশটির রাজধানী কলম্বো যাবেন রাইসি। এই সফরে রনিল বিক্রমাসিংহে ইরানের প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে দুটি বাঁধ ও একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। প্রায় ৫৩ কোটি ডলারের প্রকল্পটি ইরানি বিশেষজ্ঞরা নির্মাণ করেছেন।

প্রসঙ্গত, মাত্র কয়েক মাস আগে পাল্টাপাল্টি হামলায় ইরান-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। তবে কূটনীতির মাধ্যমে সম্পর্ক জোড়া লাগায় মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর এই দুই দেশ। পাকিস্তানের নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ইব্রাহিম রাইসির এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।


আরও খবর



একীভূত হওয়ার খবরে সিটি ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার খবরে সিটি ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ২ শতাংশের বেশি বা ৫০ পয়সা কমেছে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সংকটে থাকা সরকারি বেসিক ব্যাংকের একীভূত হওয়ার খবর আসে।

মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতেই সিটি ব্যাংকের শেয়ারের দর পড়ে যায়। ব্যাংকটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়সা কমে। আর দিন শেষে এটির শেয়ারের দাম ৫০ পয়সা কমে নেমে আসে ২২ টাকা ৪০ পয়সায়।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি ও বেসিক ব্যাংকের একীভূত হওয়ার খবরে বিনিয়োগকারীরা তেমন একটা খুশি নন; কারণ তারা মনে করেন, এই একীভূতকরণ তাদের কোনো উল্লেখযোগ্য সুবিধা দিতে পারবে না।

এর আগে গত ১৮ মার্চ এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার জন্য সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে। একীভূতকরণের ঘোষণায় এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১০ টাকার ফেস ভ্যালুর নিচে নেমে যায়। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৯ দশমিক ৫০ টাকায়।


আরও খবর



তীব্র তাপদাহে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চলমান তাপদাহে অস্থির জনজীবন। এমন গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকেই। এ পরিস্থিতিতে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শুক্রবার (০৫ এপ্রিল ) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, শনিবার (০৬ এপ্রিল ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর
আজ ঢাকায় কখন বৃষ্টি হবে

বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4