নাজনীন শিকদার,
দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা):
সরিষা ফুলের
নয়নাভিরাম দৃশ্যে পাল্টে গিয়েছে ঢাকার দোহার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠ। উপজেলার
বিস্তীর্ণ এলাকায় এ মৌসুমে সরিষার চাষ করা হয়েছে। চারিদিকে এখন শুধু হলুদ সরিষা ফুলের
বর্ণিল সমারোহ। সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন এখন উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ।
তুলনামূলকভাবে
খরচ কিছুটা কম হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী বেশি। এ মৌসুমে অনেক কৃষক সরিষা শাক
উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। সরিষার তেলের চাহিদা থাকে সারা বছর। দামও পাওয়া
যায় ভালো। অনেক এলাকায় ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় সরিষা চাষের
দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা। তাই চলতি মৌসুমে পাল্টে গেছে উপজেলার দিগন্তজোড়া মাঠের চিত্র।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো ফসলের মাঠ। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। এ যেন মাঠজুড়ে হলুদ এক চাদর জড়ানো ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট মৌমাছিরাও ব্যস্ত মধু আহরণে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ। হলুদের সমারোহে সজ্জিত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের যত রঙিন স্বপ্ন।
উপজেলার বিলাসপুর
ইউনিয়নের বড় রামনাথপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম দৈনিক আজকের দর্পণকে বলেন, বর্ষার
পানি নেমে যাওয়ার কিছুদিন পরে তারা সরিষার বীজ বুনেন। জাত ভেদে সরিষা আবাদের মাত্র
৮০-১০০ দিনেই ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম তেল পাওয়া
যেতে পারে। তাই তিনি এবার ২০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন।
উপজেলার নারিশা
ইউনিয়নের ঝনকি গ্রামের সরিষা আবাদকারী কৃষক হায়দর খাঁ দৈনিক আজকের দর্পণকে বলেন, এবার
তার ৩০ বিঘা জমির প্রায় ১০ বিঘায় সরিষা আবাদ করেছেন। এবার আবহাওয়া মোটামুটি অনুকূলে
থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন। সরিষা লাগানো হতে শুরু করে সব খরচ বাদে ভালো একটা লভ্যাংশ
থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।
সরিষা মাঠে
ঘুরতে আসা হৃদয় নামে একজন দৈনিক আজকের দর্পণকে বলেন, ‘সরিষা মাঠে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে
এসে অনেক ভালো লাগছে। যত দূর দৃষ্টি যায় তত দূর শুধু হলুদ আর হলুদ। এমন দৃশ্য দেখে
যেকোনো মানুষের মন ভালো হয়ে যাবে।’
দোহার উপজেলার
কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন ইয়াকুব দৈনিক আজকের দর্পণকে বলেন, এবার এই উপজেলায় প্রায়
৬শ’ হেক্টর
জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। গতবারের চেয়ে তেলের দাম বেশি। তবুও সব মিলিয়ে আমরা আশাবাদী
কৃষক ভালো ফলন পাবে। এবারও কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল সরিষা আবাদে উপযুক্ত
বীজ নির্বাচন, সার ও কীটনাশক প্রয়োগে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে।