নাটোর স্টেশন এলাকায় অবস্থিত হরিজন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশু এবং দরিদ্র পরিবারের শিশুদের মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি সমাজের সকল ক্ষেত্রে সম্মানের সাথে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে হ্যাপি ড্রিমস ফাউন্ডেশন। বর্তমানে ১৩০ জন শিক্ষার্থী এবং একটি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে বিপাকে পরেছে সংগঠনটি।
বলছি স্বপ্নকলি স্কুলের কথা। নাটোর স্টেশন বস্তিতে মাত্র ১৫ জন ছাত্র নিয়ে শুরু হয়েছিলো যাত্রা। এরপর মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি শুরু হয় সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। যেসকল শিশুরা কখনই স্কুলমুখী হতো না তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং সুষ্ময় দাস সহ সংগঠনের সদস্যরা বুঝিয়ে স্কুলে নিয়ে আসে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মানসম্মত পড়ালেখার পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা সহযোগিতা এবং উপকরণ ও তাদের নিকট পৌছে দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মানসম্মত পড়ালেখা দ্রুতই আশা জাগায় ঐসব শিশুর অভিভাবকদের মধ্যে। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে সহ বিভিন্ন জায়গায় শিশুদের অবস্থান নিশ্চিত করে সংগঠনটি। এছাড়াও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বনভোজন, মিলাদ, ইফতার, মেহেদী উৎসব নানা আয়োজন শিশুদের পড়ালেখায় আরো আগ্রহী করে তোলে।
স্কুলের ডেক্সে সাজানো ক্রেস্ট এবং সম্মাননাগুলো দেখলেই বোঝা যায় কতটা কষ্ট করে এই জায়গায় আসা।
বর্তমানে স্কুলটিতে ১৩০ জন শিশু পড়ালেখা শিখছে। নাটোর স্টেশন এলাকায় মাত্র একটি শ্রেণিকক্ষে পড়ালেখা চলছে। করোনার কারনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। গতবছর কিছু সহযোগিতা সংগ্রহ করে স্কুলের জায়গায় তিনটি শ্রেণীকক্ষের ভিত্তি দার করানো হয়। পরে টাকার অভাবে কাজ আর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় শ্রেণীকক্ষ গুলো না করা হলে ঝুঁকির মুখে পরবে শিশুদের পড়ালেখা। এবিষয়ে দিঘাপতিয়া এমকে কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন স্বপ্নকলি স্কুল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এসময় তিনি বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান। প্রাইম ব্যাংকের নাটোর ডিও ওবায়দুল হক মিলন বলেন স্বপ্নকলি স্কুল সবার প্রিয় একটা স্থান। আমি নিজে স্কুলে গিয়ে তাদের কার্যক্রম দেখেছি। তিনি সবাইকে সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়াতে অনুরোধ করেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শ্রেণী কক্ষ সম্পূর্ণ না করতে পারলে শিশুদের নিয়ে বিপাকে পরবো। স্কুলটি আমার সন্তানের মত। সহযোগিতা তুলে যতটা সম্ভব করেছি। এখন প্রয়োজন টিন, সিমেন্ট, ইট সহ কিছু উপকরন। আনুমানিক ২৫০০০০ টাকা হলে তিনটি শ্রেণীকক্ষ সম্পূর্ণ করা সম্ভব। এসময় তিনি জেলা এবং জেলার বাহিরে থাকা সকল দাতাদের অনুরোধ করেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সাহায্যের হাত এগিয়ে দেবার জন্য।