কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে সান পাওয়ার লিমিটেড ও এম এ গ্রীন নামে দু’টি সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের জমি দখল ও জালিয়াতির মাধ্যমে জমি কেনার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে দুই শতাধিক এলাকাবাসী কুড়িগ্রাম শহরে মানবন্ধন করেছেন।
সোমবার দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে দুই শতাধিক ব্যক্তি ধরলা নদী পার হয়ে কুড়িগ্রাম শহরে আসেন ভুক্তভোগী কৃষক ও বাসিন্দারা। এরা সবাই উপজেলার শিমুলবাড়ী ও বড়ভিটা ইউনিয়নের চর সোনাইকাজী, চর যতীন্দ্রনারায়ন, তালুক-মেকলী ও পশ্চিম ধনীরাম এলাকার বাসিন্দা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কৃষকরা দাবি করেন, সান পাওয়ার লিমিটেড ও এম এ গ্রীন নামে দুটি কোম্পানি উপজেলার শিমুলবাড়ী ও বড়ভিটা ইউনিয়নে সোলার গ্রিড স্থাপনের কাজ করছে। তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে তিন ফসলি জমি দখল করছে। নামে বেনামে ভুয়া দলিল তৈরি করে নিরীহ কৃষকদের জমি দখল করছে। যারা জমি বিক্রি করতে রাজি হচ্ছে না সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে তাদের জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষক হামিদ নুর ইসলাম, ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন ও ইউপি সদস্য তোজাম্মেল হক বলেন, জমির মালিকরা অভিযোগ সান পাওয়ার লিমিটেড এবং এম এ গ্রিন সোলার কোম্পানি দুটি এলাকায় এসে কিছু দালালকে লোভ দেখিয়ে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা বলে ভুয়া মালিক সাজিয়ে স্থানীয়দের জমি ক্রয় করছে। সামান্য কিছু জমি লিজ নিলেও তারা প্রায় ৭৪০ একর তিন ফসলি জমি সীমানা প্রাচীর করে ঘিরে নিচ্ছে। প্রতিবাদ করায় অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তিন ফসলি জমিতে কোনও প্রকল্প নেওয়া যাবে না। কিন্তু কোম্পানি দুটি স্থানীয় কিছু দালালদের সাথে নিয়ে তিন ফসলি জমিতে জোর করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তাদের নির্ধারিত প্রকল্প এলাকায় বসতি থাকলেও সেটার পরোয়া করা হচ্ছে না। গ্রামের দরিদ্র মানুষজন প্রশাসনকে অবহিত করেও কোনও সুরাহা পাচ্ছেন না। তাই আমরা বাধ্য হয়ে মানবন্ধন করে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ফসলি জমিতে সোলার প্রকল্প বাতিল করা আহ্বান জানান জমির মালিকরা। পরে জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।