
বাজারে আসতে শুরু করছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রসালো পাকা লিচু। অতিরিক্ত খরার কারণে আগেই পেকেছে এই লিচু। সোনারগাঁয়ের কাঁচা পাঁকা লিচু এখন বাগানে বাগানে ঝুলছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন লিচু গাছের লিচুতে রঙ ধরেছে।
সোনারগাঁয়ের লিচু আগাম বাজারে আসে বলে দেশের বিভিন্ন স্থানের লিচুর তুলনায় এ লিচুর চাহিদা থাকে অনেক বেশী। সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হিসেবে রসালো সোনারগাঁয়ের লিচু সারাদেশে বেশ পরিচিত। বৈশাখের শেষ সময়ে এ লিচু প্রথমত বাজারে আসে।
লিচু চাষিরা জানান, এ বছর দেশের আবহাওয়া লিচু চাষের উপযোগী হওয়ার ভালো ফলন হয়েছে। ফলে এ বছর লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন বলে জানিয়েছেন লিচু চাষীরা।
তারা জানান, সোনারগাঁয়ের লিচু বর্তমানে কদমী, মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি এ পাঁচ ধরনের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। তবে অন্যান্য লিচু থেকে বর্তমানে কদমী লিচু চাষের প্রতি চাষীরা মনোযোগী হয়ে পড়েছেন বেশি। সোনারগাঁয়ে অন্যান্য ফসলের চাষ বাদ দিয়ে চাষিরা এখন লিচু চাষে আগ্রহী হয়েছেন। প্রতি বছর এক একটি বাগান ৪-৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। তাই চাষীরা কোথাও একটু খালি জায়গা পেলেই সেখানেই কদমী লিচুর বাগান তৈরি করছেন। তবে এ বছর লিচুর মুকুল খরার কারণে নষ্ট হওয়ার পরও বেশ ভালো ফলন হয়েছে।
এদিকে সোনারগাঁয়ে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে বেশিরভাগই কদমী লিচু চাষ হচ্ছে। এ বছর কদমী লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রতি শ ৫৫০ থেকে ৬০০শ টাকায়। পাতি লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রতি শ ৪০০-৪৫০ টাকায়।
জানা গেছে, উপজেলার সোনারগাঁ পৌরসভা, বৈদ্যেরবাজার, মোগরাপাড়া, বারদী, সনমান্দি ও সাদিপুর ইউপির বিভিন্ন স্থানে লিচু বাগান রয়েছে। তবে পৌরসভার সর্দার বাড়ী, বাংলাদেশ লোকও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আশপাশের এলাকা, বাড়ী মজলিশ, দিঘিরপাড়, পানাম, অর্জুন্দি, বাগমুছা, দত্তপাড়া, ইছাপাড়া, কৃষ্ণপুরা, হাড়িয়া, সাহাপুর, পানাম গামতলী, ষোলপাড়া, ভট্টপুর এলাকায় উৎকৃষ্ট মানের লিচুর চাষ হয়ে থাকে। সোনারগাঁয়ের লিচু রঙে ও স্বাদে অতুলনীয়।
মন্নার বাগ গাপতলী গ্রামের লিচু চাষী তাইজুল ইসলাম জানান, এ বছর লিচুর মুকুল অতিরিক্ত খরায় নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ফলন ভালো হওয়ার কারণে এ বছর আড়াই লাখ টাকা মূল্যের বাগান প্রায় ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সাহাপুর এলাকার লিচু ব্যবসায়ি মশিউর রহমান, বাদশা ও মাসুদ বলেন, আমরা লিচুর ফলন না দেখেই বাগান মালিকের কাছ থেকে লিছু বাগান ক্রয় করে থাকি। লিচু ব্যবসায়ীরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে লিচু ব্যবসা করে। তুলনামুলকভাবে সোনারগাঁয়ের লিচু দাম বেশ ভালো। কৃষকরা অন্যান্য বছরের ক্ষতি পূরণ করতে পারবে।
সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, সোনারগাঁয়ের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য উপযোগী চাষীদের অনুকুলে ছিল । হঠ্যাৎ খরার কারণে লিচুর অনেক গুটি গাছ থেকে ঝড়ে পড়েছে। তারপরও এ বছর সোনারগাঁয়ের লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। লিচু চাষীরা বেশ খুশি।