আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

শৈত্যপ্রবাহ কাটছে, আসতে পারে বৃষ্টি-বজ্রঝড়

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৭২ ঘন্টা বা ৩ দিনে দেশের পশ্চিমাংশে হালকা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

শ্রীমঙ্গল, পঞ্চগড়, কুঁড়িগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে এবং আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৩৭ মিনিটে।

আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুন্ডে ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।


আরও খবর



বৃষ্টির আশায় নাটোরে ব্যাঙের বিয়ে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নাটোর প্রতিনিধি

Image

ব্যাঙের বিয়ে! তা-ও মহা ধুমধাম করে। বিয়ের জন্য ছায়ামণ্ডপ, পুষ্পমাল্য, গায়েহলুদ, আশীর্বাদ, ধান-দূর্বা, ভোজন সব ধরনের ব্যবস্থাই ছিল। শুধু তা-ই নয়, বিয়েতে নিমন্ত্রিত ব্যক্তিরাও ব্যাঙ দম্পতিকে দিয়েছেন অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের উপহারসামগ্রী। নাটোরের লালপুর উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত নাগশোষা গ্রামে এ আয়োজন করা হয়।

সারাদেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। নেই বৃষ্টির দেখা। অধিকাংশ এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে তীব্র তাপদহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রকৃতি যেন পানির জন্য আহাকার। তাই বৃষ্টির আশায়লালপুরে বাড়ি বাড়ি চালডাল তুলে ধুমধাম করে ব্যাঙের বিয়ে দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে বছর তাদের এলাকা অনাবৃষ্টির কবলে পড়ে, সেই বছরই তারা বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের এই ধরনের বিয়ের আয়োজন করে থাকেন। স্থানীয়ভাবে এটিকে ব্যাঙ্গা-ব্যাঙ্গির বিয়ে বলা হয়। বংশ পরম্পরায় তারা এই রীতি পালন করে আসছেন। তাদের বিশ্বাস, ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়।

আয়োজকরা জানান, তীব্র গরমে মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। টিউবওয়েলে তেমন পানি উঠছে না। জমিতে চাষাবাদের জন্য নেই পানি পাওয়া। ইতোমধ্যে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এ কারণে যাতে বৃষ্টি হয়, সে জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত কুমার ও রবীন্দ্রনাথ দাস বলেন, সনাতন রীতি অনুযায়ী অনেক বছর ধরে এই প্রথা চালু আছে। অনাবৃষ্টি হওয়ায় এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের কাছে এক প্রকার বিশ্বাস ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি হবে। সেই আশাতেই ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে ভগবানের কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হয়েছে।

এদিকে লালপুর উপজেলা জনপ্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিন হোসেন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানির লেয়ার পরীক্ষা করে দেখা গেছে গড়ে ৩২ ফিট নিচে নেমে গেছে। যা সাধারণত ২০/২২ ফিট থাকে। কোথাও যেন সুপেয় পানি সংকট না থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, চলতি মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বৃষ্টির অভাবে রবি শস্য এবং আম, লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে। খরা মোকাবেলায় কৃষি বিভাগ থেকে ঘন ঘন সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদেও ।


আরও খবর



তীব্র গরমে প্রাথমিকে অ্যাসেম্বলি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশজুড়ে বইছে তীব্র থেকে মাঝারি তাপদাহ। সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

শনিবার (২০ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশজুড়ে বহমান তাপদাহের ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এদিকে শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর



আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় ভারত

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে ভারত সহায়তা করতে চায় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রী মহিববুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

ভারতের হাইকমিশনার বলেন, পরিবেশগত মিল থাকায় আমরা একই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হই। ডিজাস্টার রিজিলিয়েন্ট ইনফ্রাসটাকচারসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থার সদস্য বাংলাদেশ। কাজেই এসব ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, গতবছর দুই দেশের এই মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ও আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০২১ সালে আমরা একটি সমঝোতা স্মারকও সই করেছি। এই সমঝোতার বাস্তবায়ন নিয়েও আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। যেমন, রিমোট সেন্সিং, দুর্যোগ ব্যবস্থা কর্মসূচি, প্রশিক্ষণ ও তথ্য বিনিময়ে দুই দেশ পরস্পরকে সহায়তা করার কথা বলা হয়েছে।

প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, রিমোট সেন্সিং নিয়ে আমরা দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করা যায়, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সব উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রতিমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করায় আমি খুবই সন্তুষ্ট।

এ সময়ে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে। তারা বাংলাদেশকে সমর্থন দিচ্ছে, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রকৃতি এক হওয়ায় সমস্যা মোকাবিলায় আমরা ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।


আরও খবর



দাম কমলো সোনার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের বাজারে এক লাফে ৩১৩৮ টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকেই সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ দাম কমার তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।

নতুন করে প্রতি ভরি ভালো মানের সোনার দাম কমেছে তিন হাজার ১৩৮ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে ভালো মানের সোনা প্রতি ভরি (২২ ক্যারেট) বিক্রি হবে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকায়।

নতুন মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা করা হয়েছে।

তবে দেশের বাজারে রুপার দাম অপরিবর্তীত রেখেছে বাজুস।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর