ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের সরকারপাড়া গ্রামের বাস পরিবহনের কন্ডাকটার দেলোয়ার হোসেন ও বাবলী বেগমের দম্পতির ছোট ছেলে এগারো বছরের ফারহান সাদিক বর্ষ। দুই ছেলের মধ্যে সাদিক ছোট। সে সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। অসুস্থতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে তার পড়াশোনা। এখন বাড়িতে শুয়ে পরে সময় কাটে শিশুটির। চিকিৎসার খরচ যোগাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার।
অন্যান্য বন্ধুদের মতই ছিল সাদিকের শৈশবের দুরন্তপনা। পড়ালেখা, খেলাধুলাসহ সব কাজে ছিল বেশ চতুর। হঠাৎ অসুস্থতায় কমে গেছে তার সেই দুরন্তপনা। আট বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে পরে সাদিক ৷ নিজ জেলা ও ঢাকায় চিকিৎসা করেও ধরা পরেনি কোন সমস্যা। কোন সমস্যা ধরা না পরলেও অসুস্থতা কাটেনা তার। উন্নত চিকিৎসার জন্য সাদিককে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের হায়দ্রাবাদে। ধরা পড়ে রোগ। বিকল হয়ে পরেছে লিভার ৷ সুস্থ করতে, দ্রুত করতে হবে লিভার পরিবর্তন। সন্তান সাদিককে সুস্থ দেখতে লিভার দিতে রাজি মা, থমকে আছে শুধু চিকিৎসা খরচে। নিজের জমানো টাকা, বসতভিটা বিক্রি ও আত্নীয়দের সহযোগিতা নিয়েও হচ্ছে না চিকিৎসার খরচ ৷খরচ যোগাতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন সাদিকের পরিবার ৷
সাদিকের মা বাবলী বেগম বলেন, ছেলেকে সুস্থ করার জন্য স্থানীয়সহ দেশের বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছি। কোন রোগ ধরা পরেনি ৷ পরে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পর লিভারের সমস্যা ধরা পরে ৷ সাদিকের বাবা ও আমি দুজনে আমরা লিভার দেওয়ার কথা বলি। আমারটা তাকে দেওয়ার উপযোগী মনে করেন চিকিৎসক। উনারা বলেছেন জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সাদিকের চিকিৎসা করাতে লাগবে। এই চিকিৎসা খরচ ব্যয়-বহুল ৷ আমরা টাকা জোগানোর চেষ্টা করছি। আত্মীয় স্বজনদের বলছি তবুও হচ্ছেনা। যদি আপনারা সকলে আমাদের সহযোগিতা করে পাশে থাকেন ৷
সাদিকের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর তারা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি নেবেন। সব মিলিয়ে ৩০ লাখ টাকার মত অপারেশন খরচ লাগবে। আমার আয়ের উৎস তেমন নেই ৷ কাজে গেলে টাকা আসে না হলে আসেনা। তবুও সর্বোচ্চ চেষ্টা করে, সব আত্নীয় স্বজনদের কাছে সাহায্য চাচ্ছি ৷ আমাদের পক্ষে এত টাকা জোগাড় সম্ভব না। আপনারা এগিয়ে না আসলে, সাহায্য না করলে আমার ছেলেকে বাঁচাতে পারবোনা।
স্থানীয় প্রতিবেশী মহসিনা বেগম ও নাহিদ বলেন, ছোট থেকে সাদিক বেশ নম্র ও ভদ্র। তিন বছর থেকে তার চিকিৎসা করাতে তার বাবা-মায়ের অনেক খরচ হয়েছে। এখন তার অপারেশনর জন্য অনেক টাকার দরকার। তার বাবা মা অনেক চেষ্টা করেও টাকা ব্যবস্থা করতে পারছেন না। সকলে এগিয়ে আসলে হয়তো তাকে সুস্থ করা সম্ভব হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান মসুজ্জামান জানান, আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করা হবে।