
স্বরূপকাঠিতে সোমবার আনুমানিক দিবাগত রাত ৪টার দিকে সন্ধ্যানদীর আকস্মিক ভাঙ্গনে নদীর পশ্চিম পাড়ের ইন্দুরহাট ফেরিঘাটের ফেরি ওঠা নামার গ্যাংওয়ে নদীতে তলিয়ে যায়। এ সময় ঘাট সংলগ্ন তিনটি দোকানও মালামালসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গ্যাংওয়ে নদীতে ডুবে যাওয়ায় সোমবার সকাল থেকেই স্বরূপকাঠি-ইন্দুরহাট ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলসহ জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আকষ্মিক নদী ভাঙ্গনে দোকান পাট হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তেল ও মবিলের দোকানদার হাসিব, চায়ের দোকানদার নুরুন্নাহার ও কামাল নামে তিন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ছোট বড় অনেক ফাটল। সন্ধ্যানদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে নদীর পশ্চিম পাড়ের দক্ষিণ কৌরিখাড়া, পূর্ব সোহাগদল, গনমান গ্রামের বসতঘর, বাগানবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ন জনপদ।
বছরখানেক আগে পূর্ব সোহাগদল গ্রামের নুর খানের বসতঘরসহ বাগানবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তার পূর্বে দক্ষিণ কৌরিখাড়া মো. শহীদুল ইসলাম, মো. সেলিম হোসেন ও মো. আলমগীর হোসেনের বসতঘরসহ বাগানবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
একে একে সন্ধ্যার অতল গহ্বরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত ঘর, বাগানবাড়িসহ ফসলি জমি। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে ছিন্ন মূলে পরিণত হয়েছে অনেক পরিবার। সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে দক্ষিণ কৌরিখাড়া ও গনমান গ্রামটি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিলীন হয়ে গেছে।
ভিটেমাটি হারিয়ে অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অনেক পরিবার এখনও তাদের শেষ আশ্রয়স্থল বসতভিটায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।
স্বরূপকাঠি-পিরোজপুর সড়কের কামারকাঠি নামক স্থানে নদী ভাঙ্গনের ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে। প্রায় ৩ যুগ থেকে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে উপজেলার, উত্তর কৌরিখাড়া, দক্ষিণ কৌরিখাড়া, ছারছীনা, শান্তিহার, কুনিয়ারী জলাবাড়ী, পূর্ব সোহাগদল, গনমান, মুনিনাগ, কামারকাঠি, ব্যাসকাঠি, সেহাংগল এলাকার অনেকের বসতভিটে, হাজার হাজার একর ফসলি জমি সহ বিস্তীর্ন জনপদ সর্বনাশা সন্ধ্যা গ্রাস করে নিয়েছে।
ফেরি চালক মো. আরিফুল ইসলাম মৃধা জানান সন্ধ্যানদীর আকস্মিক ভাংগনে ইন্দুরহাট পাড়ের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ক্রেন এনে গ্যাংওয়ে তুলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করতে করার কাজ চলছে।
নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মাওলা মো. মেহেদী হাসান জানান সন্ধ্যানদীর ভাঙ্গনের কথা শুনেছি। পরিদর্শন পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।