নওগাঁ প্রতিনিধি:
গ্রাহকের আমানতের টাকা আত্নসাৎ করেছে নওগাঁ সঞ্চয় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর থেকে চরম ভোগান্তিতে ১১১ জন গ্রাহক। তিন বছর ধরে তাদের আমানতের মুনাফা বন্ধ। এমনকি মুলধনের টাকাও ফেরত না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটছে অনেকের।
ভুক্তভোগী আবুল বাসার বলেন, পেনশনের ১০ লাখ টাকায় স্ত্রী ফরিদা বেগমের নামে সঞ্চয়পত্র কিনে আজ আমি নি:স্ব। ২০১৮ সালে সঞ্চয়পত্র কেনার পর ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছিনা আমি। এমনকি মূল টাকাও ফেরত না পাওয়ায় অর্থাভাবে চিকিৎসা দিতে পারছিনা একমাত্র কন্যা সন্তানের। আমি না খেয়ে মরেগেলেও আমার কোন দুঃখ নেই কিন্তু অর্থাভাবে মেয়ের চিকিৎসা করতে নাপাড়ার কষ্ট আমি সহ্য করতে পারছিনা।
শুধু আবুল বাসার নন। তার মত আরো ১১১জন গ্রাহক কষ্টের জমানো টাকা দিয়ে সঞ্চয় পত্র কিনে আজ নি:স্ব। ২০১৮ সালে ৬২জন গ্রাহকের ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন নওগাঁ জেলা সঞ্চয় কর্মকর্তা নাসির উদ্দীনসহ আরো তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ৪৯ জন গ্রাহকের সঞ্চয় পত্র কেনার বৈধ্য ভাউচার জালিয়াতি করে নওগাঁ সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মাচারীরা। এমন প্রমান পায় দুদক। ঘটনার পর ১১১ জন গ্রাহকের ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার আমানত স্থগিদ করে সঞ্চয় অধিদপ্তর।
ভুক্তভোগীরা নিজেদের আমানতের টাকা ফেরত চান। তবে মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ওই ১১১জন গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের হিসাব আপাতত স্থগিত করা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা সঞ্চয় অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ১১১জন গ্রাহকের মোট ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার জালিয়াতি হয়েছে। এদের মধ্যে এক অংশের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পৌছায়নি আর আরেক অংশের ভুয়া ভাউচার ইস্যু করা হয়েছে। এদের বিষয়ে দুদক রাজশাহী অঞ্চল আদালতে মামলা করেছে, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এই ১১১ জন গ্রাহকের হিসাব সঞ্চয় অধিদপ্তরের নির্দেশে স্থগিত করা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই ১১১ জন গ্রাহকের টাকা ফেরৎ পাওয়ার সুযোগ নেই।
গ্রাহকের আমানত আত্নসাতকারীদের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলা আদালতে বিচারাধিন। জামিনে আছেন অভিযুক্তরা। সঞ্চয় পত্রের মুনাফা ও মুলধনের টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশা গ্রাহকদের।