প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম
নূরুল হুদা বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে
সমালোচনা থাকবেই। এটা বন্ধ করা যাবে না। সমালোচনা বন্ধ করতে হলে মার্শাল ল দিতে হবে।
তবে সেটা আর সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘নবম জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের সময় মানুষের বাকস্বাধীনতা ছিল না। মানুষের মাথায় লাঠি ধরে, বন্দুকের নল
উঁচিয়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন হয়েছে বলেই তখন এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন প্রশংসা
পেয়েছিল। গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক পরিবেশে নির্বাচন করা কঠিন হলেও আগের সে অবস্থায় ফিরে
যাওয়া সম্ভব নয়।’
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন
কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির
(আরএফইডি) সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন সিইসি।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক
ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সংলাপ আয়োজনে আর্থিক দুর্নীতির
অভিযোগ ছিল বলে জানান সিইসি। সে অভিযোগের তদন্ত করেছেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি
বলেন, ‘তদন্ত হয়নি। ওই
ঘটনার সময় যারা কমিশনে ছিলেন তারা তদন্ত করেননি।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দেশের
বিশিষ্ট ৪২ নাগরিকের করা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে কে এম নূরুল হুদা বলেন,
‘ইভিএম কেনায় কোনো
অনিয়ম হয়নি। সরকারের ক্রয়নীতি অনুসরণ করেই এগুলো কেনা হয়েছে। প্রশিক্ষণের ব্যয় নিয়ে
যে অডিট আপত্তি, এটা সব প্রতিষ্ঠানে হয়ে থাকে। অডিট আপত্তি মানেই দুর্নীতি নয়। এটা
নিষ্পত্তিযোগ্য।’
নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে
বলেন, ‘এটা আদালতে প্রমাণ
করতে হবে।’
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন,
নির্বাচন ব্যবস্থা এখন আইসিইউতে। এ বিষয়ে নূরুল হুদার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন,
‘উনি অসুস্থ মানুষ।
নিজেও আইসিইউতে ছিলেন। ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার চিকিৎসার জন্য সরকারের ৪০ থেকে ৫০
লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আইসিইউ শব্দটি পরিচিত বলে ব্যবহার করেছেন। মিডিয়ায় কাভারেজ পাওয়ার
জন্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এ ধরনের আরও কিছু শব্দ তিনি ব্যবহার করেছেন।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিনা ভোটে
বা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের ব্যাপকতা প্রসঙ্গে নূরুল হুদা বলেন, ‘এতে কমিশনের কিছু
করার নেই। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। বিনা ভোটে কেন নির্বাচিত হলো, তা দেখার এখতিয়ার
কমিশনের নেই।’
কোথাও কোথাও শতভাগ বা তারও বেশি হারে ভোট
পড়ার অভিযোগ সম্পর্কে নূরুল হুদা বলেন, ‘ফল প্রকাশ হয়ে
গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা কমিশনে বসে আগে থেকে কিছু জানতে পারি না।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ইভিএমে বাতিল
ভোট দেখানো হয়েছে, এটা কিভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা
নেই।’