আজঃ শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

সমাবেশস্থল থেকে বিএনপি-আ’লীগের নেতাকর্মীদের সরে যেতে বলেছে ডিএমপি

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৭ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৭ অক্টোবর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশস্থল থেকে দল দুটির নেতাকর্মীদের সরে যেতে বলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অনুমতির আগ পর্যন্ত কোনো দলের নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে জড়ো হতে পারবেন না।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ডিএমপি সদরদপ্তরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

এসময় সাংবাদিকরা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে জানতে চান- বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেও আওয়ামী লীগ সমাবেশের জন্য স্টেজ করা শুরু করেছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন। এখনো যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি দেওয়া হয়নি সেক্ষেত্রে তারা কীভাবে এ কাজ করছে?

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দুটি দলকেই অনুরোধ করেছি তারা যেন এ কাজটি না করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ডিএমপি থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসে। বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে দলটির স্টেজের কাজ স্থগিত করে রেখেছে। নয়াপল্টন থেকেও বেশিরভাগ চলে গেছে।

নয়াপল্টন এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সমাবেশের প্রস্তুতির জন্যই কি ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা সেইফ সিটি ঢাকা চাই। যেখানে প্রতিটি মানুষ নিরাপদে থাকবে। প্রতিদিন বিভিন্ন প্রোগ্রাম হয় সেখানেও সিসি ক্যামেরা থাকে। ডিএমপির দায়িত্বের জায়গা থেকে স্ব-প্রণোদিত হয়ে নিরাপত্তার জন্য ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছে।

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে কোনো শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আশংকা নোটিশ করে আসবে না। যদি কেউ মাস্টারমাইন্ড থেকে থাকে সেটিকে ঘিরেই আমাদের নিরাপত্তা থাকে। সবকিছু সুন্দর করে হয়ে গেলে আমাদের আর প্রয়োজন ছিল না।

আওয়ামী লীগের সমাবেশসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমাবেশে সিসি ক্যামেরা আছে কি না। জানতে চাইলে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, অবশ্যই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেও সিসি ক্যামেরা আছে। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। আগামীকালের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, শুধু আজকে নয় এর আগেও লাগানো হয়েছিল।

ঢাকার প্রবেশ পথে তল্লাশিতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়। আগামীকাল এ ধরনের হয়রানির শিকার হতে হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের প্রবেশপথগুলোতে যথেষ্ট চেকপোস্ট রয়েছে। কারণ এই মেগা সিটিতে কোনো দুষ্কৃতিকারী প্রবেশ করবে এটি কাম্য নয়। অপরাধী মানুষকে চেক করতে গিয়ে কখনো কখনো ভালো মানুষকেও চেক করতে হয়। এয়ারপোর্টেও সবাইকে চেকিংয়ের আওতায় আনা হয়। থ্রেট থেকে সেভ থাকার জন্য চেক পয়েন্টে সবাইকে চেক করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার অনেকের মোবাইল চেক করা হয়েছে। বিএনপির ফেসবুক পেজে লাইক দেওয়াকে কেন্দ্র করে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছেন। পুলিশ এ কাজটি করতে পারে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, কেউ যদি অপেশাদার কাজ করে এবং আমাদের কাছে রিপোর্ট আসে ডেফিনেন্টলি আমরা ব্যবস্থা নেবো। অপেশাদার কাজকে কেউ জায়েজ করে দিতে পারে না।


আরও খবর
বিএনপির ৭৫ নেতাকে বহিষ্কার

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪




বুয়েটে ছাত্ররাজনীতিতে বাধা নেই, প্রজ্ঞাপন স্থগিত করে হাইকোর্টের রুল জারি

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে ক্যাম্পাসটিতে ছাত্ররাজনীতিতে আর কোনো বাধা নেই। সোমবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারোয়ারের বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন।

২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। এরপর গত কয়েক বছরে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

সোমবার সকালে ওই প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বি। পরে দুপুরে সেটির শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।


আরও খবর



পহেলা বৈশাখে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, আগামীকাল রোববার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর রমনায় পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই। শনিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রমনা পার্কে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির অসম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। সেজন্য এটার ওপর বারবার আঘাত এসেছে। সহিংস হামলা হয়েছে, জঙ্গি হামলা হয়েছে। সেজন্য সবকিছু মাথায় রেখেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিকল্পনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট হামলার শঙ্কা আমার কাছে নেই।

তিনি বলেন, রমনা বটমূলে আগামীকাল বিকেল ৫টার পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। এরপর আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়াও সন্ধ্যার আগে সবাইকে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হবে।

হাবিবুর রহমান বলেন, রমনায় টুরিস্টদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য টুরিস্ট পুলিশ বুথ রয়েছে। লেক এলাকা নিরাপত্তা দিতে নৌপুলিশের টহল রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সাময়িক মেডিকেল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। রক্তদানের ব্যবস্থার পাশাপাশি বিনামূল্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে সুপেয় পানি বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে।

দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএমপি যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।


আরও খবর



দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন ২ মে

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আগামী ২ মে আহ্বান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের লেজিসলেটিভ সাপোর্ট উইং আইন শাখা।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির নিম্নলিখিত আদেশটি সাধারণ অবগতির জন্য প্রকাশ করা হলো বলেও জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালামের সই করা চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংসদ সচিবালয় জানায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ২ মে বিকেল ৫টায় ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদ কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আহ্বান করেছেন।


আরও খবর



দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এলো মার্চে

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

দেশে মার্চ মাসে বৈধপথে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২ বিলিয়ন (১ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন) ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা (প্রতি এক ডলার ১১০ টাকা হিসাবে)।

এ হিসাবে দৈনিক গড়ে আসছে ৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার বা ৭০৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকার বেশি। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন বা ২১৭ কোটি ডলার।

সোমবার (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চে বৈধ চ্যানেলে ১৯৯ কো‌টি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছে। এর ম‌ধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৬ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার বা ২ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার বা ৩৮৭ কোটি টাকার বেশি এসেছে।

আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার বা ১৮ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। ৮১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার এসেছে বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।


আরও খবর



রমনায় বোমা হামলা: ২৩ বছরেও শেষ হয়নি মামলার বিচার

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার মামলা ঝুলে আছে ২৩ বছর ধরে। সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বিচারিক আদালতের গণ্ডি পেরোতে পারেনি মামলাটি। এছাড়া হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতে নিষ্পত্তি হলেও, হাইকোর্টে এসে আটকে গেছে। জানা গেছে, ১০ বছরে অন্তত কয়েকশো বার পিছিয়েছে শুনানি।

রাজধানীর রমনা বটমূলে ২০০১ সালে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন অনেকে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।

দুই মামলার তদন্ত ও বিচারকাজ একসঙ্গে শুরু হলেও ২৩ বছরেও বিচারিক আদালতের গণ্ডি পার হতে পারেনি বিস্ফোরক মামলাটি। কারণ হিসেবে সাক্ষী হাজির না হওয়া, প্রতি বছর এই একই যুক্তি দিয়ে আসছেন রাষ্ট্রপক্ষ।

বিচারিক আদালত হত্যা মামলায় যে রায় দিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন ও আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য সে মামলা হাইকোর্টে ঝুলে আছে। আর বিস্ফোরক আইনের মামলাটি এখনো ঢাকা মহানগর ১৫ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে রায়ের অপেক্ষায়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, সাক্ষীদের হাজির করতে না পারায় বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। আর হাইকোর্টে হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি ঈদের ছুটির পরপরই শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

২০০১ সালে হামলার পর পরই ওই দিনই নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন। দুই মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ১৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়।

ঘটনার প্রায় আট বছর পর দুই মামলায় ১৪ জনকে আসামি করে ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দায়রা জজ রুহুল আমিন প্রধান আসামি মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। এরপর খালাস চেয়ে উচ্চ আদালত হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি হাইকোর্টে যায়।

এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা থেমে আছে। হত্যা মামলাটি অবশ্য বিচারের প্রথম ধাপ পেরিয়েছে ১০ বছর আগে। এরপর হাইকোর্টে এসে আটকে গেছে। ফলে গত ১০ বছরেও আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমোদন মেলেনি। বিভিন্ন সময়ে আদালতে উঠলেও অন্তত কয়েকশো বার পিছিয়েছে শুনানি।

এ মামলার দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে বিএনপি সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ চার আসামি এখনো পলাতক। তবে হুজি নেতা মুফতি হান্নানের ফাঁসি অন্য এক মামলায় কার্যকর করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির বলেন, হত্যা মামলাটির আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে এসেছিল। রাষ্ট্রপক্ষ সময় আবেদন করেছে, তাই সময় শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তিনটি কোর্টে মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। এমনকি আংশিক শুনানিও হয়েছিল। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সময় চাওয়া হয়। ২০১৪ সালের ডেথ রেফারেন্স এটি। যার শুনানি শুরুই হয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গত ৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, রমনার বটমূলের হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মামলাটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে রয়েছে। আগামী মাসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার আপিল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ওই বেঞ্চের একজন বিচারক আগে আইনজীবী হিসেবে এ মামলার কাজে ছিলেন। তাই তিনি শুনানি করতে পারেননি। এ কারণে হয়ত কিছুটা সময় লেগেছে। তবে এবার শুনানি হবে। আমরা প্রস্তুত আছি- বলেন রাষ্ট্রের প্রধান এ আইন কর্মকর্তা।

অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

সাবেক ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলার রায় অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফলে রমনা বটমূলের বিস্ফোরক আইনের মামলা থেকে তার নাম বাদ যায়।

এ মামলার বাকি আসামিরা হলেন- মাওলানা তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা আবু বকর, হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন, মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ও মাওলানা শওকত ওসমান। তাদের মধ্যে তাজউদ্দিন, আবদুল হাই ও জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছেন।

২০২২ সালের ২১ মার্চ বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য শোনেন আদালত। ওই বছরের ৩ এপ্রিল আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন সাত আসামি। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি।

ওইদিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ওই বছরের ১১ অগাস্ট দিন ধার্য করেন বিচারক। কিন্তু তার আগেই ২৮ জুলাই ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ফেরত পাঠায়।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুলাহ আবু বলেন, সাক্ষীরা একবার সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। কিন্তু পরে ওই সাক্ষীদের সহজে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচারকাজ শেষ হওয়া উচিত।

প্রায় দুই যুগ ধরে চলা এই হামলার বিচার শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ জানান শিল্পীরা। সঙ্গীতশিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, আমাদের দেশের কিছু লোক আছেন, যারা বাঙালি সংস্কৃতিকে বাঁকা চোখে দেখেন। তবে এ ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ রায় যেন পাই, সে প্রত্যাশা করি।


আরও খবর