আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম

শিক্ষা ও নৈতিকতা

প্রকাশিত:বুধবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ

Image

শিক্ষা একজন ব্যক্তিকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে। আর নৈতিকতা মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে তোলে। এ দুটির সমন্বয় হলে একজন মানুষ সৎ, চরিত্রবান, আল্লাহভীরু, দেশপ্রেমিক ও দায়ত্বিশীল হয়ে উঠে। যার ফলে বর্তমান সমাজের জন্য নৈতিক শিক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশে শিক্ষাবিদ ও দার্শনিকরা নিজস্ব চিন্তা-চেতনার আলোকে শিক্ষার বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও সংজ্ঞা দিয়েছেন যেমনঃ দার্শনিক সক্রেটিসের মতে, ‘‘শিক্ষা হল মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের আবিষ্কার’’ দার্শনিক প্লেটোর মতে, ‘‘শিক্ষা হচ্ছে সেই শক্তি, যার দ্বারা সঠিক সময়ে আনন্দ ও বেদনার অনুভূতিবোধ জন্মায়। এটি শিক্ষার্থীর দেহে ও মনে সকল সুন্দর ও অন্তর্নিহিত শক্তিকে বিকশিত করে তোলে

দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, ‘‘সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা দেহ-মনের সুষম এবং পরিপূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তির জীবনের প্রকৃত মাধুর্য ও পরম সত্য উপলব্ধিতে সহায়তা করে’’। শিক্ষাবিদ কমেনিয়াসের মতে, ‘‘শিক্ষা হচ্ছে মানুষের নৈতিক উন্নতির সাহায্যে ইহলোক ও পরলোকের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি। শিক্ষার সাহায্যে মানুষ নিজকে ও বিশ্বকে জানতে পারে’’ 

শিক্ষা ও নৈতিকতা, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠের মত। মানবিক নৈতিকতা ছাড়া শিক্ষা কুশিক্ষার নামান্তর, যা মানুষকে পশুর চেয়েও নিম্নস্তরে নামিয়ে ফেলে। আর মানবিক নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষা মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্বের মযার্দায় অধিষ্ঠিত রাখে। শিল্পের জন্য শিল্প যেমন জীবনের কোন প্রয়োজন মেটায় না তেমনি শিক্ষার জন্য শিক্ষা মানুষকে মনুষ্যত্ব নিয়ে গড়ে উঠতে সহায়তা করে না। স্তর ভিত্তিক জীবনের বিকাশে এ শিক্ষা কোন কাজে আসে না।

যে শিক্ষা মানুষকে অন্যের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করেনা, যে শিক্ষা মানুষকে ভীরুতাকে জয় করতে শিখায় না, যে শিক্ষা জীবনে ও মরণে আলো দিতে পারে না, যে শিক্ষা মানুষকে মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে স্বার্থপরতায় অন্ধ করে তোলে, যে শিক্ষা মানুষকে উগ্র ইন্দ্রিয়সুখের জন্য হত্যার কারণ তৈরি করে, যে শিক্ষা সতীর্থকে নির্মমভাবে খুন করতে উদ্বুদ্ধ করে, যে শিক্ষা ভালবাসার কবর রচনা করে ঘৃণাকে উসকে দিয়ে হিংসা হানাহানির প্রসার ঘটায়, যে শিক্ষা ঐক্যের পরিবর্তে শুধু বিভেদই বাড়ায়, আজ সর্বত্র সে শিক্ষার প্রচার ও প্রসার। এই হচ্ছে বস্তুবাদী শিক্ষার দৃষ্টান্ত।

মানবিক নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষাও বস্তবাদী শিক্ষায় পরিণত হতে পারে যদি সে নৈতিকতার প্রয়োগকে পাশ কাটিয়ে চলা হয়, স্বার্থের দ্বন্দ্বে মানবিক নৈতিকতাকে বিসর্জন দেয়া হয়। মানবিক নৈতিকতাপূর্ণ শিক্ষাও অর্থহীন হয়ে পড়ে যদি তা বাস্তবে অনুসৃত না হয়। আর মানবিক নৈতিকতার শিকড় হচ্ছে ‘‘কথা ও কাজে মিল’’ রাখা। কথা ও কাজে মিল থাকা ঈমানের অন্যতম প্রকাশ। কথা ও কাজে যার মিল নেই, তার ভেতরে সত্যিকার অর্থে কোন মানবিক নৈতিকতাই নেই। শিক্ষা ও নৈতিকতা উভয়টির জন্যই শিক্ষক এক অনিবার্য প্রয়োজন।

শিক্ষক ব্যতীত শিক্ষা ও নৈতিকতা উভয়টিই অচল। তাই শিক্ষা ও নৈতিকতার প্রশ্নে শিক্ষকের ভূমিকাই মুখ্য। শিক্ষক, শিক্ষা ও নৈতিকতা এই ত্রিভুজ দিয়েই গড়ে ওঠে কোন জাতির সভ্যতার চূড়া। পৃথিবীর সকল সমাজেই এই তিন উপাদানই ছিল সভ্যতা গড়ার মূল হাতিয়ার। শিক্ষক, শিক্ষা ও নৈতিকতা নিয়ে দৃষ্টিভংগি গত ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন মতামত বিকশিত হয়েছে।

নৈতিকতা শব্দটির ইংরেজি  Morality। যার অর্থ হলো ভদ্রতা, চরিত্র, উত্তম আচরণ। এটি মূলতঃ ভালো-মন্দ,উচিত-অনুচিত, ন্যায় অন্যায়, ঠিক বেঠিক, আসল নকল এর পার্থক্যকারী। নৈতিকতার উদাহরণ হলোঃ আমার উচিত অন্যের সাথে সেভাবেই আচরণ করা যেমনটা আমি নিজে আরেকজনের নিকট থেকে আশা করি।

নৈতিকতাকে ন্যায্যতা কিংবা সঠিকতাও বলা যেতে পারে। ন্যায় কে ন্যায় , অন্যায় কে অন্যায়, সাদা কে সাদা, কালো কে কালো বলাও নৈতিকতা। অপরদিকে, অনৈতিকতা হলো নৈতিকতারই সম্পূর্ণ বিপরীত। ন্যায় কে ন্যায়, অন্যায় কে অন্যায়, সাদা কে সাদা কিংবা কালো কে কালো বলতে না পারা। যা অসচেতনতা, অবিশ্বাস, উদাসীনতারই বহিঃপ্রকাশ

নৈতিকতার অভাবে দেশ ও জাতির উন্নতি ব্যাহত হয়। যোগ্য ব্যাক্তিরা যোগ্য স্থানে পৌঁছাতে পারে না।অযোগ্যদের আস্ফালন বৃদ্ধি পায়। যোগ্য ব্যাক্তিরা হীনমন্যতায় ভোগে। সমাজ তথা দেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব অপরিসীম।

নৈতিক শিক্ষা হতে হবে পরিবার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত। শিশুদের কে ভবিষ্যতের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই নৈতিক শিক্ষার মধ্যে রয়েছে সৌজন্যতাবোধ, গুণাবলীর বিকাশ, নম্রতা, শৃঙ্খলতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, সহানুভূতি, দয়া-মায়া, সাহসিকতা, দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও আরও অন্যান্য।

একমাত্র নৈতিক শিক্ষাই মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের গভীর অনুভূতি তৈরি করতে পারে। দেশের প্রতি ভালোবাসা গড়ে তুলতে গেলে প্রত্যেকের মধ্যে ব্যক্তিগত মূল্যবোধ গড়ে তোলাও জরুরি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং একটি অলিখিত বিষয়। র‌্যাগিং এর বিধান কোথাও নেই তথাপি নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই এই টার্মের সাথে পরিচিত হয়েছে।ভর্তি পরীক্ষার সময় থেকে শুরু হয়ে ক্লাস শুরর পরেও অর্থাৎ ১ম সেমিস্টার পর্যন্ত র‌্যাগিং নামক অপসংস্কৃতির চর্চা দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং একটি অলিখিত বাধ্যতামূলক বিধান। এবং এটাও উল্লেখ্য, গ্রামের সহজ সরল ছেলেরা অধিক পরিমাণে র‌্যাগিং এর শিকার হয়ে থাকে।বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং একটি অলিখিত বাধ্যতামূলক বিধান। এবং এটাও উল্লেখ্য, গ্রামের সহজ সরল ছেলেরা অধিক পরিমাণে র‌্যাগিং এর শিকার হয়ে থাকে।র‌্যাগিং কে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, কিভাবে এ অপসংস্কৃতির মোড়ক থেকে নতুন ছেলেমেয়েদের দূরে রাখা যায় সে ব্যাপারে প্রত্যেককেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন ও মানবিক গুণসম্পন্ন হতে হবে।

সদা সত্য কথা বলা, সাহসী হওয়া, সম্পত্তির অপচয় বন্ধ করা, প্রতারণা না করা, আমি যেমন ব্যবহার পেতে চাই,অন্যদের সাথেও তেমন ব্যবহার করা, কাউকে অযথা বিচার না করা,  অঙ্গিকার রক্ষা করা, উদার হওয়া, নম্র হওয়া, ভিন্নতার প্রতি সহনশীল হওয়া, নিজের ও অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, ক্ষমাশীল হওয়া, সৎ হওয়া ইত্যাদি।

শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈতিক শিক্ষাকে এমনভাবে যোগ করতে হবে যাতে এই নৈতিক মূল্যবোধের বার্তা শিক্ষার্থীদের নিকট আরও সহজ, সরল ও আকর্ষণীয় উপায়ে পৌঁছানো যেতে পারেএর জন্যে ভালো বই, নৈতিকতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, ও অন্যান্য মাধ্যমও ব্যবহার করা যেতে পারে। মানুষের জীবনে নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, ও মর্যাদা প্রদানের জ্ঞান থাকলে তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সমাজ এমনকি দেশের শান্তিও বিরাজমান থাকবে।

বর্তমান সমাজে ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা, তাদের মনে মূল্যবোধ স্থাপন করার সাথে সাথে কীভাবে অন্যের সাথে আচরণ করতে হয় তাও শেখাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও, তাদের নৈতিক শিক্ষার মানে জানা ও বুঝতে পারাটাও কিন্তু ততটাই জরুরি।

ভোগবাদী বিশ্বে নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে প্রতিনিয়ত অথচ অনাগত ভবিষ্যৎকে সফল ও সুন্দর করে তুলতে নৈতিকতার চর্চা ছাড়া কোন উপায় নেই কেবল শিক্ষায় পারে যথার্থ নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ তৈরি করতে শিক্ষার সাহায্যে মূল্যবোধের ভিত্তিকে সুদ্রিয় করার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি দেশ ও সমাজের কল্যাণ সাধন সম্ভব হলে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং সুশিক্ষা সম্পূর্ণ নৈতিকতার সাহায্যে মানবিকতার উদ্বোধন ঘটিয়ে নিষ্কলুষ বিশ্ব নির্মাণে পথে অগ্রসর হতে হবে।

লেখক: উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর



তানজানিয়ায় বন্যা: নিহত ৫৮

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় গত দুই সপ্তাহে বন্যায় ৫৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। রবিবার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে দেশটির সরকার নিহতের এ সংখ্যা জানিয়েছে।

সরকারের মুখপাত্র মোভারে মাতিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে; যার ফলে ৫৮ জন নিহত হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে এ পর্যন্ত ১১ জন নিহত হয়েছে। এ বন্যায় অন্তত ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাতিনি জানান, তানজানিয়া ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধ করার জন্য ১৪টি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি বাস বন্যার পানিতে পড়ে আট স্কুল শিক্ষার্থী ডুবে যায়। উদ্ধার অভিযানে এক স্বেচ্ছাসেবীও নিহত হয়েছেন।

অর্থনৈতিক রাজধানী দারুসসালাম থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় ও মোরোগোরো এলাকায় ৭৫ হাজারের বেশি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য অংশেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পূর্ব আফ্রিকার প্রতিবেশী দেশ কেনিয়ায় বন্যায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

মাত্র চার মাস আগে তানজানিয়ার উত্তরাঞ্চলে বন্যায় অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

তানজানিয়ায় এপ্রিল মাস সবচেয়ে বেশি বর্ষামুখর থাকে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত এ মাসেই হয়। এ বছর এল নিনোর ঘটনা তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে; যা বিশ্বজুড়ে খরা ও বন্যা সৃষ্টি করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে।


আরও খবর



জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ব্রিজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর শহরের ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ একটি কন্টেইনারবাহী জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়েছে। স্থানীয় সময় দিবাগত সোমবার (২৬ মার্চ) রাত দেড়টায় এ ঘটনা ঘটে।

এখন পর্যন্ত হতাহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অন্তত সাত ব্যক্তি ও অনেকগুলো গাড়ি পাতাপস্কো নদীতে পড়ে গেছে। তাই বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাত দেড়টার দিকে জাহাজটি সেতুতে ধাক্কা খায়। এতে জাহাজটি ডুবে যাওয়ার আগে আগুন ধরে যায়। এর ফলে একাধিক গাড়ি নিচে পানিতে পড়ে যায়।

ম্যারিল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি সমাজমাধ্যম এক্সের একটি পোস্ট করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আই-৬৯৫ কি ব্রিজের ঘটনার জন্য সব লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাল্টিমোরের মেয়র জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। সেখানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।

বাল্টিমোর ফায়ার ডিপার্টমেন্টের যোগাযোগ পরিচালক কেভিন কার্টরাইট রাত ৩টার দিকে বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, জরুরি বিভাগের কর্মীরা পানিতে পড়ে যাওয়া অন্তত সাতজনকে খুঁজছেন। রাত দেড়টার দিকে ৯১১ নম্বরে কল আসে। তারা খবর পায় বাল্টিমোর থেকে বহির্গামী একটি জাহাজ ব্রিজের ওপর একটি কলামে ধাক্কা খেয়েছে। দুর্ঘটনাটি ঘটার সময় ব্রিজের ওপর একাধিক যানবাহন ছিল।

কার্টরাইট আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ভুক্তোভোগীদেরকে উদ্ধার করা। কতজন লোক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে এই ঘটনাকে তিনি ক্রমবর্ধমান গণ হতাহতের ঘটন বলে অভিহিত করেছেন।

নিউজ ট্যাগ: বাল্টিমোর ব্রিজ

আরও খবর



ঢাকা থেকে আরব আমিরাতগামী ৯ ফ্লাইট বাতিল

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নজিরবিহীন বৃষ্টি আর আকষ্মিক বন্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে দুবাই ও শারজাহগামী নয়টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, আরব আমিরাতে বাজে আবহাওয়ায় কারণে বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে দুবাই ও শারজাহগামী যে নয়টি ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল, সেগুলো বাতিল করার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসগুলো। এর মধ্যে এয়ার এরাবিয়ার পাঁচটি, এমিরেটসের দুটি এবং ফ্লাই দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট রয়েছে।

এর আগে গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত তুমুল বৃষ্টিতে দুবাইয়ের পথঘাট, শপিংমল ও বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়ে তলিয়ে গেছে। বন্ধ রাখতে হয়েছে বিমান চলাচলও। খালিজ টাইমস জানিয়েছে, ১৯৪৯ সালের পর থেকে এমন বৃষ্টিপাত দেখেনি মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানুষ।


আরও খবর



বাংলাদেশের নতুন স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

পাকিস্তানের সাবেক লেগস্পিনার এবং বিশ্বকাপজয়ী মুশতাক আহমেদকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নতুন স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

চলতি মাসের শেষদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দেবেন তিনি। মুশতাকের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি হয়েছে চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১ জুন থেকে মাঠে গড়াবে এই বিশ্বকাপ।

৫৩ বছর বয়সী মুশতাকের আগে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলের স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। নিজ দেশ পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও স্পিন কোচ ছিলেন তিনি।

খেলোয়াড়ি জীবনও বেশ সমৃদ্ধ ছিল মুশতাক আহমেদের। পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে ১৫২ টেস্টে ১৮৫ এবং ১৪৪ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৬১ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার নামের পাশে ১ হাজার ৪০৭ উইকেট রয়েছে। ১৯৯২ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন মুশতাক আহমেদ।


আরও খবর



যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া দুই তরুণী উদ্ধার, আটক এক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভনে ফরিদপুরের যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পাচার চক্রের দুই নারী ও দুই যুবককে আসামি করে মামলা রুজু হয়। পরে পুলিশ পাচার চক্রের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান। গ্রেফতার পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) আসাদ শেখের স্ত্রী ও রথখোলা যৌনপল্লীর বাসিন্দা। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ জানায়, পার্লারে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানার কড়ইশ এলাকা থেকে ওই তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন (৩০) নামে এক যুবক। এরপর দুইদিন ঢাকায় রেখে ১২ মার্চ তাকে ৩ জন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। এরপর তারা ওইদিন সন্ধ্যায় ফরিদপুরে এনে রথখোলার পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।

পরদিন একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পারু তাকে জানান, এখন থেকে তিনি রথখোলা যৌনপল্লীর লাইসেন্সধারী সদস্য। এরপর পারু তার বাসায় রেখে শহরের গোয়ালচামট খোদাবক্স রোডের বাসিন্দা ইলিয়াস কসাইয়ের স্ত্রী যৌনকর্মী সর্দারনী ববি (৩৮) ও অন্যান্যদের সহায়তায় তাকে জোরপূর্বক খরিদ্দারদের কাছে পাঠাতে থাকেন।

তবে মেয়েটি একজন খরিদ্দারকে তার ছোটবোনের মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর ওই খরিদ্দার তার ছোটবোনকে ফোন করে মেয়েটিকে যৌনপল্লীতে আটকে রাখার বিষয়টি জানান। এ খবর পেয়ে মেয়েটির মা তার এক ফুফাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ২২ মার্চ তারিখ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রথখোলা যৌনপল্লীতে এসে তার মেয়েকে দেখতে পান। এরপর কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

এদিকে চাঁদপুরের মেয়েটিকে উদ্ধারের সময় চাকরির কথা বলে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেকটি মেয়ে পুলিশের কাছে সাহায্য চাইলে পুলিশ তাকেও উদ্ধার করে।

ফেনীর ওই মেয়েটি জানান, তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে জহির (৩০) নামে এক যুবক ফেনী থেকে এনে প্রথমে ঢাকার মিরপুর এলাকায় অজ্ঞাতনামা বাসায় এক রাত রাখেন। পরে তাকে রথখোলা যৌনপল্লীতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করে অর্থের বিনিময়ে যৌন ব্যবসা করান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় চাঁদপুরের ওই মেয়েটির মা রথখোলা যৌনপল্লীর পারুল বেগম ওরফে পারু, আপন, জহির ও ববিকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। ওই এজাহারের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করে উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল তরফদারকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়।

ওসি জানান, উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল তরফদার অভিযান চালিয়ে ২৪ মার্চ মামলার মূল আসামি পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেফতার করেন। এ ঘটনায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় একটি এফআইআর নং-৫৪ দায়ের করা হয়েছে। মামলার দুই আসামি আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


আরও খবর