মাদারীপুর থেকে দেলোয়ার হোসাইন
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরা প্রতিরোধে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সারা দেশের মতো মাদারীপুর জেলার শিবচরে কঠোর অবস্থান রয়েছে শিবচর উপজেলা প্রশাসন। তাই উপজেলা জুড়ে অনেকটা ফাঁকা অবস্থা দেখা গেছে। সেই সাথে প্রশাসনের সক্রিয় তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
বুধবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শিবচর থানার পুলিশ বিভিন্ন স্থানের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে। রাস্তায় বের হওয়া লোকজন ও যানবাহন আটকে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করছে তারা। সদুত্তর না পেলে যাত্রীদের আবার বাসায় ফেরার নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ।
এদিকে শিবচর উপজেলায় বাস, ইজিবাইক, ভ্যানসহ যানবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় এবং মাছসহ কাচা বাজার খোলা থাকবে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, পাশাপাশি তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। পুলিশ টহলের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনাবাহিনীর টহল রয়েছে। গতকালকের চেয়ে মানুষের পদচারনা কম দেখা গেছে। বিভিন্ন সড়কে পুলিশ, সেনাবাহিনীর টিমকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেনে বলেন, আমরা খুবই তৎপর আছি এবং কঠোরভাবে লকডাউন কে সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে টহল এবং মনিটরিং টিম যথাযথ ভাবেই মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর ভূমিকায় রয়েছে। আইন অমান্য করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় লকডাউন কার্যকর করতে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী মাঠে কাজ করছেন। বিনা কারণে মানুষের চলাচল ও ভিড় এড়ানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে, বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছি। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে।
সরকারি আইন অমান্য করে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যারা মাক্স ছাড়া ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়া ব্যাক্তি, গণপরিবহন, পিকআপ ভ্যান, মোটর সাইকেল, সিএনজি, রিক্সা চালাচ্ছেন ও দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা নানা অজুহাতে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানাসহ আইনের আওতায় আনা হবে বলে সতর্ক করে মাইকিং সহ বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করতে দেখা গেছে। এছাড়া মোটরসাইকেল এবং বিভিন্ন যানবাহনের গতিবিধি রোধ করার জন্য উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশ চেক পোস্ট। এর পরেও বিভিন্ন স্থানে কিছু অটো রিক্সা, বোরাক, মোটরসাইকেল সহ বিবিন্ন যানবাহ চলতে দেখা গেছে।
তবে উপজেলার এলাকায় বেশ কঠোর লকডাউন পালন করতে দেখা গেলেও গ্রামে হন্জে তেমন লকডাউন পালন হচ্ছে না বলে জানা গেছে। বিভিন্ন মেড়ো মোড়ের দোকানগুলাতে চায়ের আড্ডা দিতে দেখা গেছে। ব্যবহার করছে না মাস্ক। স্বাস্থ সচেতনতায় বা লকডাউন মানতে হবে সে রকম কোন অনুভুতিই দেখা যায়নি সাধারন মানুষের মাঝে।
কঠোর লকডাউন সফল করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সাথে নৌবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।