
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে একই পরিবারের আটজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম সমেশ্চুড়া গ্রামের জোড়ার পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন-জালাল উদ্দিন (৬৫), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০), মেয়ে জামেনা খাতুন (৩৩), ছেলে আ. রশিদ, (৩৮) মনির হোসেন (২৫), এরশাদ আলী (২২), ছেলে রশিদের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩০) ও ছেলে মনিরের পাঁচ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী মর্জিনা বেগম (২২)।
আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং দুইজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অর্পিত ছয় শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল ভূমিহীন জালাল উদ্দিন ও প্রতিবেশী নই মিয়ার মধ্যে। নই মিয়া দাবি করে আসছিল ছয় শতাংশ জমি জালাল উদ্দিন জোরপূর্বক ভোগদখল করছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় কয়েক দফা সালিশ হলেও কোনো মীমাংসা হয়নি।
নই মিয়ার ছেলে শফিকুলের দেওয়া একটি মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য আজকে জালাল উদ্দিনসহ তার পরিবারের আটজন শেরপুর আদালতে আসেন। এই সুযোগে নই মিয়া, তার ছেলে শফিকুল, সোহানসহ স্থানীয় ও পাশের ঝিনাইগাতী উপজেলার ৩০-৪০ জন লোক জালাল উদ্দিনের ভোগদখল করা জমিতে ঘর উত্তোলন করতে থাকেন। জালাল উদ্দিন শেরপুর আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়িতে এসে ঘর তোলার কারণ জানতে চাইলে নই মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জালাল উদ্দিনের পরিবারের উপর হামলা চালায়।
এতে জালাল উদ্দিনসহ তার পরিবারের আটজন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার মেয়ের জামাতা আন্তাজ আলী তাদের নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীদের মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও দুইজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
ভূমিহীন জালাল উদ্দিনের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ভূমিহীন। আমাদের নিজস্ব কোনো জমিজমা নেই। স্থানীয় সমেশ্চুড়া মৌজার ২১৪ দাগের ছয় শতাংশ জমিসহ কিছু সরকারি জমিতে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বাড়িঘর করে বসবাস করে আসছি। নই মিয়া গংরা আমাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। আজকে নই মিয়া তার লোকজনকে নিয়ে আমার বৃদ্ধ বাবা, মা, ভাই, বোন ও ভাবীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেছে। আমি নই মিয়া ও তার লোকজনের বিচার চাই।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. আব্দুল লতিফ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।