শেরপুর থেকে শাহরিয়ার শাকির
শেরপুর সদর উপজেলার চান্দের নগরে আসলে কবে বাংলার ঐতিহবাহী বৈশাখৗ মেলা শুরু হয় ? তা কেও জানেনা। তবে ধারণা করা হচ্ছে অন্তত দুইশ বছর আগে এ মেলার প্রথম আয়োজন করা হয়েছিলো। প্রতি বছরই বংশ পরম্পরায় এ মেলাটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। পূর্ব পুরুষরা করে গেছে, এ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই করা হয় মেলার। মেলাতো নয় এটি হচ্ছে এ গ্রামের একটি বৃহৎ উৎসব। সবাই অপেক্ষা করে কবে আসবে পহেলা বৈশাখ। উদযাপন করবে বৈশাখী মেলা আর উৎসব। যা আনন্দ দেয় সবাইকে।
এ মেলার আয়োজক বৈশাখী সংগঠন ও মেলা কমিটির পক্ষ থেকে দিনব্যাপী মেলায় ঘোড়দৌড়, গাঙ্গি বা কুস্তি খেলা ও দৌড়, মুরগের লড়াইসহ গ্রামীণ বিভিন্ন খেলা ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিকেল ৬টায় এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।
মেলা উপলক্ষে ঝি-জামাইদের নিমন্ত্রন করে প্রায় প্রতিটি পরিবার। সবাই মিলে এ উৎসবে যোগদিয়ে আনন্দ উপভোগের রেওয়াজ হয়ে গেছে। শিশু কিশোর, যুবক বৃদ্ধসহ সবাইমিলে আনন্দ ভোগ করে থাকে।
রাসেল মিয়া বলেন, আমরা এ মেলায় খুব আনন্দ উপভোগ করি। বৈশাখ আইলে এই মেলা হয়। কিন্তু গত দুইবছর এই মেলা বন্ধ আছিল করোনার কারণে। আমরা আবার এলাকা মেলা দেখলাম অনেকদিন পর।
শাহিনুর ইসলাম বলেন, এই মেলা আমগর গ্রামের ঐতিহ্য। আমরা এই একটাদিন অনেক মজা করি। পাশের গ্রাম থাইক্কা সব আসে মেলা দেখতে। সবাই একসাথে হয়ে আনন্দ করি।
তবে মেলার জায়গা আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যাচ্ছে। সরকারী কোন জায়গা নেই, মানুষের মালিকানা জমিতে এখানে মেলা হয়ে থাকে। এজন্য এলাকাবাসীর দাবী সরকার যেন এখানে জায়গার বন্দোবস্ত করে দেন।
মোশারফ হোসেন বলেন, এই মেলা আগে মেলা বড় হইতো। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে জায়গা কইমা জাইতাছে। আমরা চাই সরকার কিছু অনুদান দিয়ে আমগর এই মেলাডা টিকাই রাহুক।
হরিয়ে যেতে বসা বৈশাখী মেলায় এসে আলাদা আনন্দ উপভোগ করছে এখানে আসা শিশু-কিশোর, পুরুষ-মহিলাসহ সর্বস্তরের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী এ মেলা যাতে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয় এ দাবী মেলায় আসা জনসাধারনের।
শেরপুর সদর চান্দের নগর মেলা উদযাপন পরিষদ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান জানান, এ মেলা যে কত বছর থেকে এখানে হচ্ছে তা আমরাও বলতে পারি না। আমরা প্রতিবছর এ মেলা আয়োজন করার চেষ্ঠা করি। দুইবছর করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও আজ আবার দুইবছর পর জমে ওঠেছে এ মেলা। মেলার আমরা প্রতি বছরই আয়োজন করার চেষ্টা করবো। মেলা আগে বড় করে আয়োজন হতো এখন জায়গা কমে যাওয়ার পরিধি একটু কমেছে। কিন্তু মেলায় আসা মানুষজনের সংখ্যা আরোও বেড়েছে।
মেলার পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি বলেন, এসব দেশের ঐতিহ্য। এসব ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলার আয়োজনে সরকারীভাবেও সহযোগিতা করা হবে। জায়গার অভাবে এ মেলা যাতে হারিয়ে না যাই আমরা এইটা দেখবো।