ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ (সি,এস,সি) গত ১৫ ডিসেম্বর ( বৃহস্পতিবার) শিক্ষকদের জন্য দেওয়া এক নোটিশে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব/বোরখা নিষিদ্ধ করে এবং তাদেরকে শ্রেণিকক্ষ বা ক্যাম্পাসে এই সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
সেই নির্দেশের পরে ক্ষোভে ফেটে পরে সেন্টগ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ, অর্থলোভী, স্বেচ্ছাচারী, ধর্মবিদ্বেষী ভর্তি বানিজ্যের সাথে যুক্ত দাবি করে তার পদত্যাগ চায় এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় পাঠকপ্রিয় সংবাদপত্র আজকের দর্পণ এর প্রিন্ট এবং অন-লাইনে। যা মুহুর্তেই ভাইরাল হয়। এরপর টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। হলিক্রস ব্রাদারদের সর্বোচ্চ পর্যায় বৈঠক থেকে ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ (সি,এস,সি) -কে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যা আজ বৃহস্পতিবার (ডিসেম্বর ২৩) তারিখে কার্যকর করা হয়েছে।
প্রাক্তন গ্রেগোরিয়ান আওলাদ হোসেন অন্তু জানান, হিজাব নিষেধের দ্বারা ব্রাদার প্রদীপ একটি ধর্মবিরোধী এবং অসাম্প্রদায়িক কর্মে লিপ্ত হয়েছিলেন । এ ছাড়াও তিনি আরো অনেক কার্যকলাপ করেছেন যার ভেতর থেকে প্রকাশ পেয়েছিল যে তিনি একজন মানুষিক অসুস্থ ব্যক্তি । তিনি গার্ডিয়ানদের সাথে খারাপ আচরণ, প্রাক্তন গ্রেগোরিয়ানদের OUTSIDER বলে অপমান করেছেন ।
এভাবে তিনি আমাদের
সুনামধারী স্কুলের বদনাম করছেন । তাকে যেন দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয় আমাদের স্কুল থেকে সেজন্য
আমরা সবাই প্রতিবাদ এ নেমেছিলাম । আজকে আমরা সফল হলাম।
সাবেক আরেক শিক্ষার্থী মুক্তাদির মাওলা জানান, ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ তার খেয়ালখুশি মত ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন যা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
আরো পড়ুন: হিজাব নিষিদ্ধ করলো সেন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ
মোহাম্মদ আব্দুল বারি খান মামুন নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ এই স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে ছাত্র, শিক্ষকসহ মোট ৩০ জনকে পাক হানাদার বাহিনী জগন্নাথ কলেজ সংলগ্ন আর্মি ক্যাম্প এ ধরে নিয়ে যায় ও নির্মম ভাবে হত্যা করে। এই দিন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক পি ডি কস্তাসহ আরো একাধিক শিক্ষককে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত স্থাপনাটাও পূর্বের অবস্থান থেকে সরিয়ে একটি পরিত্যাক্ত স্থানে নিয়ে গেছেন। যা মুক্তিযুদ্ধের চেতানা বিরোধী।
অধ্যক্ষ ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ (সি,এস,সি) অপসারণের বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থীরা। তারা মনে করেন নতুন যে অধ্যক্ষ আসবেন তিনি এই প্রতিষ্ঠানের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজে সব মিলিয়ে ১৪০ জন মতো শিক্ষক রয়েছেন। তার মধ্যে মুসলিম নারী শিক্ষক ৯ জন। হিজাব পরেন ৬ জন শিক্ষিকা। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার মতো।