আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

শেখ রাসেল: অমিত সম্ভাবনার অকাল মৃত্যু

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ অক্টোবর ২০২১ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ অক্টোবর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শেখ রাসেল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ উত্তরাধিকার। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ভুবন আলোকিত করা উজ্জ্বল নক্ষত্র। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়ণের মনি, আদরের ছোট ভাই। অমিত সম্ভাবনা জাগিয়ে যে নক্ষত্র অকালেই হারিয়ে গেছে কালের গর্ভে। কিন্তু আসলেই কি শেখ রাসেল হারিয়ে গেছে? না, শেখ রাসেল হারিয়ে যায়নি। জাগতিক অস্তিত্বের ঊর্ধ্বে উঠে গেলেও শেখ রাসেল প্রতিটি বাঙালির অস্তিত্বে অমর, অবিনাশী হয়ে বেঁচে থাকা এক সত্তার নাম। তাঁর নির্মল, নিষ্পাপ অথচ তেজোদীপ্ত চোখ আজও ভাস্বর।

পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উৎকন্ঠার সময়ে যখন বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্ন জাগরুক, ঠেক সে সময়েই ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর হেমন্তের এক প্রহরে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের ৬৭৭ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধু পরিবার আলো করে জন্ম নেয় ফুটফুটে শিশু রাসেল। নোবেল জয়ী ব্রিটিশ দার্শনিক বাট্রান্ড রাসেলকে পছন্দ করতেন বলে নামে বঙ্গবন্ধু কনিষ্ট তনয়ের নাম রাখের রাসেল। শিশু রাসেলের জন্ম নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করেছেন এভাবে, রাসেলের জন্মের আগের মুহূর্তগুলো ছিল ভীষণ উৎকণ্ঠার। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও খোকা চাচা বাসায়। বড় ফুফু ও মেজ ফুফু মার সাথে। একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন। সময় যেন আর কাটে না। জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায় আবার জেগে ওঠে। আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি নতুন অতিথির আগমন বার্তা শোনার অপেক্ষায়। মেজ ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। খুশিতে আমরা আত্মহারা। কতক্ষণে দেখবো। ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন। কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। মাথাভরা ঘন কালোচুল। তুলতুলে নরম গাল। বেশ বড়সড় হয়েছিল রাসেল”।

ছোট বয়সেই শেখ রাসেলের মানবতাবোধ, ব্যক্তিত্বের উৎকর্ষ, নেতৃত্বের সৌকর্য, পরোপকারী মনোভাব আর দশজন শিশু থেকে তাঁকে স্বাতন্ত্র্য অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। জাতির পিতার প্রতিচ্ছবি ছিলেন শিশু রাসেল। টুঙ্গিপাড়ায় বেড়াতে গেলে শিশু রাসল তাঁর সমবয়সীদের জড়ো করে তাতের জন্য খেলনা বন্দুক বানাতেন আর সেগুলো দিয়ে তাদের প্যারেড করাতেন। বন্ধুদের জন্য তিনি জামাকাপড় কিনে দিতেন। বাবা ও বোন শেখ রেহানার সঙ্গে যখন বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিল ছোট্ট রাসেল, তখন প্রিন্সকোট পরা এই শিশুর ব্যক্তিত্বে বিমোহিত হয়েছেন বিশ্ব নেতারা। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফরে যান বঙ্গবন্ধু। শেখ রাসেলের বয়স তখন মাত্র ৯। কিন্তু তার প্রাণবন্ত কিন্তু পরিমিত হাসি, আত্মবিশ্বাসী চাহনি, করমর্দনের ধরণ সবকিছুর মধ্যেই ফুটে উঠেছিল একজন ভবিষ্যত নেতার ছাপ। আবার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের বেঞ্চে যখন সে বসতো, তখন হয়ে যেতো সহপাঠীদের খুব নিকটজন। বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া টিফিনটাও ভাগ করে খেতেন বন্ধুদের সাথে। রান্নাঘরে কাজের মানুষরা যখন খেতে বসতো, তখন লাল ফুলতোলা প্লেট নিয়ে তাদের সঙ্গে খেতে বসে যেতেন। বাঙালি জুলফিকার আলী ভুট্টো, বাঙালি জাতিকে শোষণ করার প্রতিকে পরিণত হয়েছিল। তার প্রভাব পড়েছিল শিশু শেখ রাসেলের মনে। ওই বয়সে তিনি হয়তো অতো রাজনীতি বুঝতো না। কিন্তু বিভিন্ন শ্লোগান ও আলোচনার কথা শুনে এটা বুঝতে শিখেছিল যে ভুট্টো নামটা একটা নেতিবাচক শব্দ, এটা একটা শোষকের নাম। একবার বড় আকারের এক কালো পিঁপড়া (ওলা) কামড়ে দেওয়ায় ফুলে গেল শিশু রাসেলের আঙুল। ওই আক্রমণকারী বড় কালো পিঁপড়ার নাম দিল সে ভুট্টো। যুদ্ধমুখর দেশে, রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা শৈশবে, অবচেতনভাবেই এক তীব্র সচেতনতা বোধের সৃষ্টি হচ্ছিল ছোট্ট রাসেলের মনে।

শেখ রাসেলের জন্মের পর বঙ্গবন্ধু অনেকটা সময় কারা অন্তরীণ ছিলেন। যার কারণে বাবার সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ঐ সময়টায়। বাবার অনুপস্থিতিতে তাঁর অনেকটা সময় কাটতো তার প্রিয় হাসুপার (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সাথে। আর বাবাকে কাছে না পেয়ে মা ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে আব্বা’ বলে সম্বোধন করতেন রাসেল। আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইয়ের একুশ পৃষ্ঠায় কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা লিখেছেন, আব্বার সঙ্গে প্রতি ১৫ দিন পর আমরা দেখা করতে যেতাম। রাসেলকে নিয়ে গেলে ও আর আসতে চাইত না। খুবই কান্নাকাটি করত। ওকে বোঝানো হয়েছিল যে, আব্বার বাসা জেলখানা আর আমরা আব্বার বাসায় বেড়াতে এসেছি। আমরা বাসায় ফেরত যাব। বেশ কষ্ট করেই ওকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হতো। আর আব্বার মনের অবস্থা কী হতো, তা আমরা বুঝতে পারতাম। বাসায় আব্বার জন্য কান্নাকাটি করলে মা ওকে বোঝাতেন এবং মাকে আব্বা বলে ডাকতে শেখাতেন। মাকেই আব্বা বলে ডাকতো”। বাবাকে কাছে না পাওয়ার কষ্ট যেমন অনুভব করতেন শিশু রাসেল, ঠিক তেমনি বাবা মুজিবও। কারাগারের রোজনামচা’য় শেখ রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ৮ ফেব্রুয়ারি ২ বছরের ছেলেটা এসে বলে, আব্বা বাড়ি চলো। কী উত্তর ওকে আমি দেবো। ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম, ওতো বোঝে না আমি কারাবন্দি। ওকে বললাম, তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। আমি আমার বাড়ি থাকি। আবার আমাকে দেখতে এসো। ও কী বুঝতে চায়! কী করে নিয়ে যাবে এই ছোট্ট ছেলেটা, ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে এই পাষাণ প্রাচীর থেকে! দুঃখ আমার লেগেছে। শত হলেও আমি তো মানুষ আর ওর জন্মদাতা। অন্য ছেলে-মেয়েরা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু রাসেল এখনও বুঝতে শিখেনি। তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে”।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আর দশটা দিনের মতো ছিলনা। বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে অমানিশার অন্ধকার নেমে আসা সেই দিন পিতা-মাতা ও তাঁর ভাই-ভাবীদের সাথে ঘাতকের নির্মম বুলেট বিদীর্ণ করেছিল শিশু রাসেলের বুক। মায়ের কাছে যাওয়ার অনন্ত আকুতিকে পদদলিত করে কিছু নরপিশাচ চিরতরে স্তব্ধ করে দিয়েছেল শেখ রাসেলের কন্ঠস্বর।

বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম আর  বাংলাদেশের জন্মের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ের সাক্ষী হয়ে বেড়ে উঠেন শেখ রাসেল। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা প্রণয়ন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠন এসবগুলো ঘটনার মধ্যে যার জন্ম ও বেড়ে ওঠা, তিনি শেখ রাসেল। বাঙালি জাতির আত্মপ্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ডানা মেলেছে তার শৈশব। বাল্যকালেই যে সচেতনতা, মানবতাবোধ ও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছিল তার জীবনাচরনে, সেটা প্রস্ফুটিত হলে বঙ্গবন্ধুর মতোই আজ বিশ্বব্যাপী মানবতাবাদী নেতৃত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতেন তিনি। তিনি হতে পারতেন আধুনিক বাংলাদেশের একজন উজ্জ্বল পথিকৃৎ। হতেন বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও রাজনৈতিক আদর্শের যথার্থ উত্তরসূরি। কিন্তু অমিত সম্ভাবনার অকাল মৃত্যু ঘটেছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে। এটি বাঙালি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। শেখ রাসেলের নাতিদীর্ঘ জীবন নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন। তাঁর জীবনাচরণ, চিন্তা-চেতনা, আদর্শ শিশু-কিশোরদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। তাই শেখ রাসেলের জীবনীপাঠ সময়ের দাবী।

লেখকঃ শ ম রেজাউল করিম এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।


আরও খবর



ঢাকাসহ চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের চার বিভাগের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ। এর মাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ কারণে ঢাকাসহ চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানিয়েছেন, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া এর মাত্রা আরও বাড়তে পারে।

তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম থাকা সত্ত্বেও কেন হিট অ্যালার্ট দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আগামী দুইদিন বাড়বে। আজ একটু কম হলেও বেড়ে যাবে। তাই হিট অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বুধবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ঈশ্বরদীতে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একই সময় পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মোংলা ও ঈশ্বরদীতে, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরও খবর



ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সকল মাংসের দোকান বন্ধ

প্রকাশিত:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ রাসেল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Image

টানা তিন দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সরকারিভাবে মাংসের দাম নির্ধারণ করায় এই কর্মসূচি পালন করছে তারা। এর আগে গত সোমবার সকালে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

সরেজমিনে বুধবার সকালে শহরের আনন্দবাজার, মেড্ডা বাজার, ফারুকী বাজার, বর্ডার বাজার, কাউতলী বাজার ও বউ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সব মাংসের দোকান বন্ধ রয়েছে। সেখানে মাংস ক্রয় করতে এসে কাঙ্ক্ষিত মাংস না পেয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

মাংস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার প্রতিকেজি গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এই টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তাদের দাবি, আগের ৭৫০ টাকা প্রতি কেজি মাংসের মূল্যে বহাল রাখার। এই দাবি পূরণ করা না হলে মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এ দিকে পবিত্র মাহে রমজান মাসে বাজারে এসে কাঙ্ক্ষিত গরুর মাংস কিনতে না পেরে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

মাংস ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হোসেন ও শামীম জানান, আমরা জনগনের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্তা করেই মাংস বিক্রি করে থাকি। সরকার আমাদের যে বাজার দর দিয়েছে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা দর। এই দরে মাংস বিক্রি করে আমাদের ব্যবসার লোকশান হবে। তাই আমরা গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আমাদের মাংস বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ীরা খামারী এবং ব্যাপারি থেকে গরু কিনে থাকে, তারা চামড়াসহ গরু কিনে বাজারে জবাই করে থাকেন। এতে ৭২০ টাকার মতো প্রতি কেজিতে দাম পড়ে। এ অবস্থায় সরকার ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে। তা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অবশ্যই দাম সমন্বয় করতে হবে। কারণ খামারে গরুর দাম কমাতে হবে। দাম পুনরায় নির্ধারণ করতে হবে। অন্যথায় এই মাংসের বাজার বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের উপায় নেই।

মাংস ক্রয় করতে আসা ক্রেতা মো. সায়েম জানান, গত তিনদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাজারে মাংস বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে আমরা জনগণ খুব বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছি। রমজান মাস হওয়ায় হুজুরদের দাওয়াত করতে হয়, মাংসেরও প্রয়োজন হয়। আমরা এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি জানাই।

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হক জানান, মাংসের বাজারে অস্থিরতা ও চলমান সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মাংস ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

বৈঠকে জেলা প্রশাসক সরকার নির্ধারিত মূল্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে এইটুকুই বলতে পারি সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কেউ বেশি মূল্যে বিক্রি করলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। কোনো অসাধু ব্যবসায়ীকে বাজারে সুবিধা বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।


আরও খবর



রুমার পর এবার থানচিতে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানের রুমায় ভল্ট থেকে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুটের পর এবার থানচি সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে থানচি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাহাড়ের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দুপুর ১টার দিকে এসে থানচি বাজারের সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে। বিষয়টি নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের নজরে এলে তারা প্রতিহতে এগিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বান্দারবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান আল কাদেরি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন>> এখনো উদ্ধার করা যায়নি সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে

তিনি বলেন, একদল অস্ত্রধারী হামলা চালিয়েছে। তবে এটা ডাকাতির উদ্দেশ্যে হামলা কিনা সেটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে ভল্ট থেকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার ও নিরাপত্তায় থাকা ১০ পুলিশ সদস্য ও ৪ আনসার সদস্যের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসে বাজারের মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে সবাইকে জিম্মি করে রাখে। এ সময় তারা সোনালী ব্যাংকের ভল্ট থেকে এক কোটি ৫৯ লাখ টাকাসহ ডিউটি পুলিশের ১০টি অস্ত্র ও আনসার বাহিনীর ৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা চলে যাওয়ার সময় রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল জানান, কেএনএফের শতাধিক সদস্য এসে বাজারের মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে ব্যাংক লুট করে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র লুট করে। এসময় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।


আরও খবর



নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে আটক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের উদ্ধার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রেই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি শিগগির তাদেরকে মুক্ত করতে পারবো। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।

তিনি বলেন, আমরা নাবিকদের পরিবারকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে। প্রথমত যারা অপহরণ করেছে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। দ্বিতীয়ত তাদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক প্রচুর চাপ তৈরি করা হয়েছে। নাবিকরা ভালো আছেন, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছেন। সুতরাং যে উদ্বেগটা কিছুদিন আগে ছিল সেটি এই মুহূর্তে নেই। আমরা আশা করছি তাদেরকে শিগগির মুক্ত করতে পারবো। বুধবার (১০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজি পুকুর লেন ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সেটি ঘটানো হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ১৩ সালে কি ধরণের সন্ত্রাসী ও জঘন্য মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা তারা চালিয়েছিল। ১৪ সালের নির্বাচনে পাঁচশ নির্বাচনী কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেটির উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। ১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ ২৪ সালের বিগত নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং হামলায় একব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, গত মন্ত্রীসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় কিশোর গ্যাং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে বিভিন্ন জেলা শহরে এই কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংদের গ্রেপ্তারের পর স্বাভাবিক জেলে না রেখে সংশোধনাগারে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, সাধারণ জেলে যদি তাদেরকে পাঠানো হয় সেখানে থাকা অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা আরো ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হয়ে উঠতে পারে। দেশে এটি নতুন সমস্যা, এটিকে দূর করতে সরকার কাজ করছে। কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে নেপথ্যে যেই থাকুক, সে যেই দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হচ্ছে।

দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন আমাদের দেশে রমজান আসার আগে এবং রমজানের সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার জন্য একটি অসাধু চক্র ও কিছু মজুতদার সবসময় সক্রিয় হয়। এবারও তা হয়েছে। সেটির সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছিল বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাজারকে অস্থিতিশীল করা, পণ্যের মূল্য যাতে বাড়ে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রেক্ষিতে এবার রমজানের সময় বাজার স্থিতিশীল ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমেছে। 


আরও খবর



দাবদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন, চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে দেশ। আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২৭ শতাংশ। আজকের তাপমাত্রা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ। এর আগে গত ৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে তাপপ্রবাহের কারণে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে।

অপরদিকে, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ধান রক্ষার জন্য ধানের শীষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ৫-৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখুন। এ সময় জমিতে যেন পানির ঘাটতি না হয়।

এদিকে, তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। বাইরে কড়া রোদ থেকে বাঁচতে অনেকেই গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার লেবুর শরবত খেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।

শহরের কয়েকজন রিকশাচালক বলেন, রোদের তাপে মনে হচ্ছে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। সকাল ও বিকেলের পর থেকে যাত্রী পেলেও দুপুরে বেশির ভাগ রাস্তাঘাট ফাঁকা। পেটের দায়ে এই তীব্র গরমেও রিকশা চালাতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চলমান তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।


আরও খবর