সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) থেকে শেখ নাদিম:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তুলার গোডাউনের আগুন প্রায় ২১ ঘণ্টার চেষ্টায় নিভেছে। সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা এলাকার নেমসন কনটেইনার ডিপোর পাশে অবস্থিত ইউনিটেক্স গ্রুপের ওই তুলার গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। জানা যায় ২৭শ টন তুলা ছিল গুদামে। আজ ১২ মার্চ রোববার সকাল ৭টায় আগুন নিভানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
মো. তৌহিদুল
ইসলাম বলেন, আগুন নিভে গেছে। তবে এখনো কিছু ধোঁয়া উঠছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে
এখনো আগুন পুরোপুরি নিভে যাওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী,
নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর মোট ১৮টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণে কাজ করেছে।
সেনাবাহিনীর
ইউনিট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ইউনিটেক্সের
গোডাউনে তুলার পরিমাণে বেশি (২৭০০ টন) হওয়ায় গোডাউনের এক অংশে আগুন নির্বাপণের পর সেটা
স্তূপ হয়ে কিছুক্ষণ পর আবার স্তূপের নিচ থেকে আগুন আরেক অংশে ছড়ায়। আগুন নিয়ন্ত্রণের
এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রায় ১০ একর আয়তনের গোডাউনের চারদিকের দেয়াল বুলডোজার দিয়ে
ভেঙে চতুর্দিক থেকে ফায়ার টেন্ডার (পানি ছড়ানোর মেশিন) প্রবেশ করানো হয়।
এই দিকে অগ্নিকাণ্ডের
কারণ জানতে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী
পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটিতে আহ্বায়ক
করা হয়েছে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে। এছাড়া সদস্য
করা হয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি,
ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, সীতাকুণ্ড
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), বাংলাদেশ
টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি ও
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) প্রতিনিধিকে।
উল্লেখ্য, শনিবার
(১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর পাশে এসএল গ্রুপের
মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়ায় নেওয়া একটি তুলার গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত হয়।
এ অগ্নি-দুর্ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সীতাকুণ্ডে
সম্প্রতি কয়েকটি বড় অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের
কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এরপর টানা ৮৬ ঘণ্টা আগুন
জ্বলতে থাকে। ওই দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও শ্রমিকসহ ৫১ জন নিহত হন। এছাড়া আহত
হন প্রায় দুই শতাধিক। এই সময় প্রায় ১৬০ টি আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ছাড়া গত শনিবার
(৪ মার্চ) সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড
নামে কারখানায় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এ পর্যন্ত সাতজন নিহত এবং ২৫ জন আহত
হন।