আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

শবে বরাতে যাদের দোয়া কবুল হবে না

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ১৬ মার্চ ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মাহে শাবান অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। আর ১৪ শাবান দিবাগত রাত (শবেবরাত) সবিশেষ ফজিলতপূর্ণ, বরকতময় মহিমা, স্বাতন্দ্র্যমণ্ডিত ও তাৎপর্যপূর্ণ। হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ রাতটিকে লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান (অর্ধশাবান রাত) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু আমাদের সমাজে এই রাতটি শবে বরাত তথা মুক্তি, নিষ্কৃতি, পাপ মোচনের রাত নামেই সমধিক খ্যাত।

মাহে শাবানের সূচনা থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ব্যক্তি ও সমাজজীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। কিন্তু সমাজের প্রবল প্রথাগত, আড়ম্বরপূর্ণ উদযাপন ও রেওয়াজি সংস্কৃতিতে শবে বরাতের প্রকৃত মাহাত্ম্য, মর্যাদা ও পবিত্রতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে কি না এ নিয়ে আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে। আর এ জন্য শবে বরাতের প্রকৃত গুরুত্ব ও তাৎপর্য, ফজিলত, মাহাত্ম্য ও করণীয় এবং বর্জনীয় সম্পর্কে সবার সম্যক জানা থাকা একান্ত আবশ্যক।

শবে বরাতের ফজিলত:

অসীম কল্যাণে ভরপুর এই শবে বরাতের রজনী বান্দার জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ এক নিয়ামত।এ রাতে মহান রাব্বুল আলামীন মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন, দয়ার সাগরে ঢেউ উঠে, মাগফিরাতের দ্বার উম্মোচিত হয় পাপি-তাপি সব বান্দার জন্য।

নিম্নে শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো।

ইরশাদ হয়েছে:

عن حضرت على رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا يومها فان الله تعالى ينزل فيها لغروب الشمس الى السماء الدنيا فيقول الا من مستغفر فاغفرله الا مسترزق فارزقه الا مبتلى فاعافيه الا كذا الا كذا حتى يطلع الفجر

অর্থ: হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত. মহা নবী (সা.) ইরশাদ করেন, যখন শাবানের ১৫ তারিখ রাত্রি উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে নামায আদায় করবে এবং দিনে রোযা রাখবে।

কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোনো মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছিবত দূর করে দিব। এভাবে ফজর পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

যদি শবে বরাতের ফজিলতের ব্যাপারে দ্বিতীয় কোনো হাদিস নাও থাকতো, তবে এই হাদিসটিই এ রাতের ফজিলত সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এবং এ রাতে মাগফেরাতের উপযোগী নেক আমলের গুরুত্ব প্রমাণিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট হত। অথচ হাদিসের কিতাবসমূহে এ বিষয়ক আরো একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

যেমন হাদিসে আরো এসেছে,

عن عائشة : قالت فقدت رسول الله صلى الله عليه و سلم ليلة فخرجت فإذا هو بالبقيع فقال أكنت تخافين أن يحيف الله عليك ورسوله ؟ قلت يا رسول الله إني ظننت أنك أتيت بعض نساءك فقال إن الله عز و جل ينزل ليلة النصف من شعبان إلى السماء الدنيا فيفغر لأكثر من عدد شعر غنم كلب

অর্থ: হযরত আয়েশা (রা.) বলেন- এক রাতে রাসূল (সা.) কে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম। মহানবী (সা.) বললেন- কি ব্যাপার আয়েশা, তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল তোমার ওপর কোনো অবিচার করবেন?

হযরত আয়েশা (রা.) বললেন- আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্যকোনো বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসূল (সা.) তখন বললেন- যখন শাবান মাসের ১৫ই রাত আসে তখন আল্লাহ পাক এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়ে বেশি সংখ্যক বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে তিরমিযী)

মহানবী (সা.) আরো বলেন,

عن معاذ بن جبل, عن النبى, قال : يطلع الله الى خلقه فى ليلة النصف من شعبان, فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن ( رواه ابن حبان

মুআয ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।

এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, এ রাতে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফেরাতের দ্বারা ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত হয়। কিন্তু শিরকি কাজকর্মে লিপ্ত ব্যক্তি এবং অন্যের ব্যাপারে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণকারী মানুষ এই ব্যাপক রহমত ও সাধারণ ক্ষমা থেকেও বঞ্চিত থাকে।

যখন কোনো বিশেষ সময়ের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফেরাত ঘোষণা হয়, তখন তার অর্থ এই হয় যে, এই সময় এমন সব নেক আমলের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে যার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাতের উপযুক্ত হওয়া যায় এবং ওইসব গুণাহ থেকে বিরত থাকতে হবে, যার কারণে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রহমত ও মাগফেরাত থেকে বঞ্চিত হয়।

মহানবী (সা.) আরো বলেন, রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, আর রমজান আল্লাহর সকল বান্দাদের মাস। (মাসাবাতা বিস সুন্নাহ)

রজব এবং রমযানের মধ্যবর্তী মাসের নাম শাবান মাস। লোকেরা এই মাসের পূর্ণ মর্যাদা রক্ষা করে না। অথচ এই মাসটিতে বান্দার আমল আল্লাহর নিকট পেশ করা হয় এবং আমল সমুহের অধিক ছওয়াব দান করা হয়। আমি ভালোবাসি যে, আমার আমল আল্লাহর হুযুরে রোযা রাখা অবস্থায় পেশ করা হোক। (মা সাবাতা বিস সুন্নাহ)

মাসদ্বয়ের জন্য মহানবী (সা.) এভাবে দুআ করতেন-اللهم بارك لنا في رجب وشعبان وبلغنا رمضان

আল্লাহ্ম্মুা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা ইলা রামাদান। অর্থাৎ হে আল্লাহ রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য রবকত নাযিল করুন, আর আমাদেরকে রমযান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।

দোয়া কবুলের রাত:

যে পাঁচটি রাতে বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়ার ওয়াদা করা হয়েছে তার মধ্যে শবে বরাতের রাত একটি, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন:

ان الدعاء يستجاب فى خمس ليال اول ليلة من رجب وليلة النصف من شعبان وليلة القدر المباركة وليلتى العيدين

অর্থ : নিশ্চয়ই পাঁচ রাত্রিতে দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়ে থাকে। (১) রজব মাসের প্রথম রাতে, (২) শবে বরাতের রাতে, (৩) ক্বদরের রাতে, (৪) ঈদুল ফিতরের রাতে, (৫) ঈদুল আযহার রাতে। (মা-ছাবাতা বিসসুন্নাহ)

শবে বরাতের রজনীতেও যাদের দোয়া কবুল হয় না:

কিন্তু শবে বরাতের রাতেও নিম্নবর্ণিত লোকদের দোয়া ও আমল (খাটি অন্তরে তওবা না করা পর্যন্ত) কবুল হয় না।

(১) মুশরিক (২) মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান (৩) আত্মীয়দের সাথে ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া সম্পর্ক ছিন্নকারী (৪) জালিম শাসক ও তাহাদের সহযোগী, (৫) না হক হত্যাকারী (৬) পরনারীগামী (৭) মদ্যপানকারী (৮) ইর্ষাপরায়ণ (৯) নিন্দাকারী (১০) গনক ও রেখা টানিয়া অথবা ফালনামা দেখিয়া ভাগ্য ও ভবিষাৎ শুভাশুভ নির্ধারণকারী (১১) গায়ক ও বাদক (১২) মিথ্যা শপথের সাহায্যে পণ্য বিক্রয়কারী (১৩) পায়ের গিরার নিচে গর্ব সহকারে কাপড় পরিধানকারী (১৪) যাদুকর (১৫) পরস্পর শত্রুতা ভাব পোষণকারী (১৬) কৃপণ (১৭) অন্যায়ভাবে শুল্ক আদায়কারী (১৮) জুয়াড়ি (১৯) দাবা-পাশার খেলোয়াড় (২০) বিদআত প্রচলনকারী (২১) মিথ্যা সাক্ষ্যদানকারী (২২) সুদ দাতা (২৩) সুদ গ্রহিতা (২৪) ঘুষ দাতা ও গ্রহিতা (২৫) সন্ত্রাস ও ফাসাদ সৃষ্টিকারী।

তাই শবে বরাতের পূর্ণ ফযিলত ও শবে বরাতের রাতে দোয়া কবুল হওয়ার জন্য উল্লেখিত কবীরা গুনাহসমূহ থেকে খাঁটি দিলে তওবা করা উচিত। অন্যথায় সারারাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করেও কোনো লাভের আশা করা যায় না।

মাগফিরাত ও বরকতের রাত:

উপরে উল্লেখিত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় ইমাম-মুজতাহিদগণ বলেন যে:

ليلة البراءة هى ليلة العفو والكرم، ليلة التوبة والندم، ليلة الذكر والصلوة، ليلة الصدقات والخيرات، ليلة الدعاء والزيارة، ليلة الصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم،

ليلة تلاواة القران الكريم

অর্থ: বরাতের রাত্র হলো ক্ষমা ও দয়ার রাত্র, তওবা ও লজ্জিত হওয়ার রাত্র, যিকির ও নামাযের রাত্র, ছদক্বা ও দান-খয়রাতের রাত্র, দোয়া ও জিয়ারতের রাত্র, দুরূদ শরীফ পাঠ করার রাত্র এবং কোরআন শরীফ তিলাওয়াতের রাত্র।

রমজানের অভ্যর্থনার রাত:

শবে বরাতের এ রাতটিকে পবিত্র রমজানুল মোবারকের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যেন রমজানের অভ্যর্থনার জন্যই রাখা হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ পর যে রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তির মহান মাস আসন্ন, তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এ শবে বরাত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র রমজানের মাধ্যমে তাঁর যে রহমতের দ্বার খুলে দেবেন, তার আগে একটি রাত রেখেছেন।

এ রাতে তিনি বান্দাকে আহ্বান জানাচ্ছেন, তোমরা এ রাতে আমার সান্নিধ্যে এসে নিজেদের পাপ-পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করে নাও। যাতে আমার সঙ্গে তোমাদের একটা বন্ধন গড়ে ওঠে। আর এ বন্ধন ও সম্পর্কের সূত্রে তোমরা যেন পবিত্র রমজানে আমার রহমত লাভে ধন্য হতে পারো। সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, শবে বরাতকে পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে গ্রহণ করা।

বর্ণিত আছে, রজব মাসে চাষাবাদ করে ইবাদতের বীজ বপন কর, শাবান মাসে তাতে পানি দাও এবং রমজানে উহার ফসল কাট। মানুষ অভ্যাসের দাস। আগেভাগে নেক আমলের অভ্যাস না করলে হঠাৎ কোন বড় রকমের সাধনা বা পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাতে অকৃতকার্য হওয়ার আশঙ্কাই থাকে বেশি। কাজেই শাবান মাসের আমলনামায, রোজা, কোরআন শরীফ তেলওয়াতের প্রভৃতির গুরুত্ব অপরিসীম।

শবে বরাতের করণীয়:

হজরত রাসুলে আকরাম (সা.) এর হাদিস থেকে জানা যায়, শবে বরাত উপলক্ষে করণীয় দুটি।

এক. রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করা। যেমন নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দুরুদ, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদি।

দুই. পরদিন রোজা রাখা। এমনিতে সারা শাবান মাসেই অধিক হারে রোজা রাখা উত্তম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রায় সারা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন। হজরত উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলকে শাবান ও রমজান ছাড়া দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। (তিরমিজি)।

কিয়ামুল লাইল : বিভিন্ন হাদীসের বর্ননা থেকে শবে বরাতের রজনীর ইবাদতের ফজিলত ও তাৎপর্য বিষয়ে নির্দেশনা-ইঙ্গিত পাওয়া যায়। নিম্নে এ বিষয়ে আরেকটি হাদিস পেশ করছি।

হযরত আলা ইবনুল হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা!

অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন ইরশাদ করলেন, এটা হল অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। [ বাইহাকি]

শবে বরাতে বিশেষ পদ্ধতির আলাদা কোনো নামাজ নাই একটি বিষয় খুব ভালোভাবে আমাদের বোঝা উচিত, শবে বরাতের কোনো নির্দিষ্ট নামাজ কিংবা আমলের কথা কুরআন ও হাদিসের কোথাও নেই। কোনো বিশেষ নিয়মনীতি নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। যেমন আমাদের মধ্যে অনেকে শবে বরাতের জন্য আলাদা নামাজ আছে বলে মনে করেন। তারা মনে করেন, এই নামাজের নিয়মনীতিও সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এ-জাতীয় ধারণা অবশ্যই ভিত্তিহীন।


আরও খবর



উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশবান্ধব ও ব্যয় সাশ্রয়ী: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

উন্নয়ন পরিকল্পনা পরিবেশবান্ধব ও ব্যয় সাশ্রয়ী হতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে পরিকল্পনাই হোক, সেটা হতে হবে পরিবেশবান্ধব। কারণ জলবায়ুর অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি পরিকল্পনাগুলো যেনো টেকসই হয় এবং খরচের দিকটাও বিবেচনায় নিতে হবে।

আজ শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ-আইইবির ৬১তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রাচীন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬১তম কনভেনশনের উদ্বোধন করেন।

এবারের ৬১তম কনভেনশনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ। কনভেনশনে সেমিনারের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা হয়েছে দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স ফর ট্রান্সফর্মিং টেকনোলজি ড্রাইভেন স্মার্ট বাংলাদেশ।

তিনি জানান, যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণেই সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী প্রকৌশলীদের সাফল্য কামনা করে বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত ৬১তম কনভেনশনে সমাপনী অনুষ্ঠান, জাতীয় সেমিনারের উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্ব, শহীদ প্রকৌশলী পরিবারের সংবর্ধনা, চারটি স্মৃতি বক্তৃতাসহ বিদেশি অতিথিদের সংবর্ধণা এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।

আগামী সোমবার দুপুরে জাতীয় সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিকাল সাড়ে ৩টায় কনভেনশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ কাদের।


আরও খবর



হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গরম চরম আকার ধারণ করেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে জরুরি রোগী ছাড়া ভর্তি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।

রোববার (২১ এপ্রিল) সচিবালয়ে সারাদেশের হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন বলে জানান মন্ত্রী।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। অনেক জায়গাই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তাপদাহের কারণে কোল্ড কেস (যাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া জরুরি নয়) এ মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলো প্রতিকূল পরিবেশের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ গরমে সবচেয়ে বেশি ভালনারেবল বয়স্ক এবং বাচ্চারা। এবার এমন একটা জলবায়ু পরিবর্তন হলো যে আমরা জীবনে কখনো শুনিনি যে দুবাই বিমানবন্দর পানিতে ডুবে গেছে। আমাদের এগুলো ফেস করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে যখন মেসেজ আসলো (হিট এলার্ট) আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেসেজ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কারণ সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চা এবং বয়স্করা।

আজ হাসপাতালের পরিচালক এবং সিভিল সার্জনের সঙ্গে মিটিং করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমার কয়েকটা নির্দেশনা ছিল তার মধ্যে একটা হলো-বয়স্ক এবং বাচ্চারা প্রয়োজন ছাড়া যেন বাসার বাইরে না যায়। হাসপাতালগুলোতে কোনো কোল্ড কেস এখন ভর্তি করতে না করেছি। কোল্ড কেস অর্থাৎ এক মাস পর অপারেশন করলে অসুবিধা না হয়, সেটা দুই সপ্তাহ পরে করুক। হাসপাতাল খালি রাখার জন্য বলছি যে যদি চাপ হয়, তাহলে বাচ্চা এবং বয়স্কদের জন্য যেন ভর্তি করা হয়। এখন কোল্ড কেস কয়েক দিন বন্ধ থাকবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওরাল স্যালাইনের কোথাও কোনো ঘাটতি হলে যেন আমাকে সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়। এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রকৃতির সঙ্গেতো আমাদের কারো হাত নেই। এটা আমাদের রেডি রাখতে হবে।

শিশুদের জন্য হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি গতকাল শিশু হাসপাতালে গিয়েছি। শিশু হাসপাতালগুলোকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার জন্যই সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। কোল্ড কেসগুলোকে এখন হাসপাতালে ভর্তি না করতে বলা হয়েছে। শিশুদের ব্যাপারে সারাদেশের চিকিৎসকদের নিয়ে আজ থেকে একটি অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা জানান, মহাখালীতে করোনা চিকিৎসার জন্য ডিএনসিসি হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের জন্য আলাদাভাবে বেড রাখতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



মাধ্যমিকের চার শ্রেণির ৩১ বইয়ে ১৪৭ ভুল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

নতুন শিক্ষাক্রমে চলতি বছরের নবম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বইয়ের ১৭৯ পৃষ্ঠায় আছে, কৃত্তিম (কৃত্রিম) বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে প্রগতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে...করে যাচ্ছে’। এটা সংশোধন করে লেখা হবে কৃত্তিম (কৃত্রিম) বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে.. করে যাচ্ছে’। আবার অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের ১৬১ পৃষ্ঠায় ৭০০৭৫০-মিলিমিটার সংশোধন করে ৭০০-৭৫০ মিলিমিটার লিখতে সুপারিশ করা হয়েছে।

এভাবে মাধ্যমিকের চার শ্রেণির ৩১টি বইয়ে ১৪৭টি ভুল সংশোধনের সুপারিশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি।

বইগুলো হলো: ষষ্ঠ শ্রেণির গণিত, বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ), বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জীবন ও জীবিকা; সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ইংলিশ ও গণিত; অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ), ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, গণিত, ইংলিশ, বিজ্ঞান (অনুশীলন বই), ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ইসলাম শিক্ষা এবং খ্রীষ্টধর্ম শিক্ষা; নবম শ্রেণির ইংলিশ, গণিত, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, শিল্প ও সংস্কৃতি, বাংলা, বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ), ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা ও খ্রীষ্টধর্ম শিক্ষা।

এর আগে, নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে নতুন বইয়ের ভুলত্রুটি ই-মেইলে জানানোর অনুরোধ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনসিটিবি। তাতে বলা হয়, পাঠ্যপুস্তকে কোনো ধরনের ভুল-ভ্রান্তি, ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে কিংবা পাঠ্যপুস্তকের মানোন্নয়নে কোনো ধরনের পরামর্শ থাকলে নিচের ই-মেইল অথবা এনসিটিবি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের ঠিকানায় জানালে তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গেল বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। এ বছর সেটা করা হবে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালু হবে। পরীক্ষামূলকভাবে এসব শ্রেণিতে প্রণয়ন করা হয়েছে পাঠ্যবই।

বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের ভুল-ত্রুটি সংশোধনে প্রতিটি বইয়ের জন্য একজন করে বিশেষজ্ঞকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। ভুল ধরে তারা তা এনসিটিবির উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে জমা দেয়। সম্প্রতি এ কমিটি ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৩১ বইয়ের ভুল ও সংশোধনীগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেখান থেকে ভুলগুলোর সংশোধনী দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নবম শ্রেণির ১১টি বইয়ে ৭৭টি, অষ্টম শ্রেণির ১০টি বইয়ে ৪৯টি, সপ্তম শ্রেণির ৫টি বইয়ে ১১টি এবং ষষ্ঠ শ্রেণির ৫টি বইয়ে ১০টি ভুল রয়েছে।

বানান ভুল যেমন আছে, তেমনই কোনো কোনো বাক্য পুরোপুরি সংশোধন কিংবা বাদ দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তথ্যগত ভুলও রয়েছে। এনসিটিবি জানায়, এবার পাঁচটি পদ্ধতিতে বইগুলোর ভুল-ত্রুটি ও অসংগতি বের করা হয়েছে। দুই/এক দিনের মধ্যে সংশোধনীগুলো শিক্ষা অধিদফতরগুলোর মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হবে। পরে শ্রেণিশিক্ষকরা শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তকে এই ভুল ও অসংগতিগুলোর সংশোধন নিশ্চিত করবেন।

জানতে চাইলে এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, এ বছর পাঠ্যপুস্তকে যেসব ভুল-ত্রুটি সংশোধন করা প্রয়োজন, তার একটি তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে তা শিক্ষা অধিদফরের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সংশ্লিষ্ট শ্রেণিশিক্ষকের মাধ্যমে প্রতিটি শ্রেণির প্রতিটি শিক্ষার্থীর পাঠ্যপুস্তকে সংশোধন-সংযোজন নিশ্চিত করবেন।


আরও খবর
একাদশের ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪

একাদশের ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪




সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ড : যা বলছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। রোববার (৫ মে) বিকেলে এ বিবৃতি দেয় মন্ত্রণালয়টি। এতে বলা হয়, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের বনাঞ্চলের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন গাছের ওপরে বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, শুধু মাটির ওপরে বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করছেন। এছাড়া বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নিনির্বাপণে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।

শনিবার (৪ মে) দুপুর আনুমানিক সাড়ে ৩ টায় আগুন লাগার ঘটনা প্রথম উদঘাটিত হয়। আগুন লাগার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় আগুন লাগার চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেন।

কিন্তু ওই সময় ভাটার কারণে খালে কোনো পানি না থাকায় আগুনে পানি দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে রাতেই বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুইপমেন্ট ও পানি দেয়ার মেশিন এনে, সেটি রেডি করে পাইপ লাগিয়ে সেট করে রাখা হয়। পরে রোববার ভোর থেকেই বন বিভাগের কর্মী, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগণ, সিপিজি, সিএমসির লোকদের নিয়ে আগুন লাগার স্থানে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটার পাশাপাশি পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আগুন লাগার স্থানের চারদিকে প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে যেহেতু আগুন মাটির নীচ দিয়ে গাছের শিকড়ের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে, কাজেই সতর্কতার সঙ্গে আগুন নেভাতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নি নির্বাপণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। কেননা ফরেস্ট ফায়ার আপাতত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যে কোনো সময় এটি নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত আছেন এবং তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে তদারকি করতে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি ও কর্মপন্থা বিষয়ে আজ সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় খুলনায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।


আরও খবর



জামালপুরে পবিস কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জামালপুর প্রতিনিধি

Image

জামালপুরে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে অভিন্ন চাকরবিধি বাস্তবায়নসহ ১৬টি দাবিতে ৫ম দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মচারীরা। এ সময় তারা 'বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়, বৈষম্যের স্থান নাই, বৈষম্য নিপাত যাক, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মুক্তি পাক' স্লোগানে মুখর করে তোলেন সমিতির প্রাঙ্গণ।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল ১০টায় পৌরসভার বেলটিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি প্রাঙ্গণে কর্মচারীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রেখে এ কর্মবিরতি পালন করেন।

এ সময় বক্তব্য রাখেন জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান আতাউর রহমান ও রাকিবুল হাসান, ডাটাএন্টি অপারেটর নাঈমা সিদ্দিকী, কানামুনা (কাজ নাই মজুরি নাই) প্রকল্পের বিলিং সহকারী আইরিন আক্তার, মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার (চুক্তিভিত্তিক) আসাদুজ্জামান আসাদ ও ফজলুল হক, লাইন ক্রু হৃদয় সূত্রধর ও সুখরঞ্জন রায়।

জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পদমর্যাদা (সরকার ঘোষিত গ্রেডিং ১-২০) ৬ মাস পিছিয়ে পে-স্কেল ও ৫% বিশেষ প্রণোদনা প্রদান, এপিও বোনাস সমহারে না দেওয়া লাইনম্যানদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা ও কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লাইনম্যান ও বিলিং সহকারি পদায়ন না করা, যথাসময়ে পদন্নোতি না করা, লাইনক্রু লেভেল-১ ও মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার (চুক্তিভিত্তিক), বিলিং সহকারি (কানামুনা) চাকরি নিয়মিত না করা স্মারকলিপিতে অংশগ্রহণ করায় ভোলা পবিস-এর এজিএম আইটি ও এজিএম অর্থকে সাময়িক বরখাস্ত, সিরাজগঞ্জ পবিস-২ এর ডিজিএম (কারিগরি) ও এজিএম আইটি-কে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে সংযুক্ত করায়, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ ও ভবিষ্যতে আধুনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে বাপবিবো/পবিস এ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের জন্যই এই কর্মবিরতি পালন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় আড়াইশ কর্মচারী এই কর্মবিরতিতে যোগ দেন। পরে তারা ১৬টি দাবি ও বৈষম্যগুলো উত্থাপন করেন।


আরও খবর