স্মার্টফোনে আসছে ব্যাটারি পরিবর্তনের সুবিধা। ২০২৭ সাল নাগাদ আইফোন’সহ সকল স্মার্টফোনে বদলযোগ্য ব্যাটারি
বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই সপ্তাহে, অ্যাপল, স্যামসাং
ও গুগলের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ব্যাটারি বর্জ্য কমিয়ে আনার পাশাপাশি তাদের
একচেটিয়া অভ্যাসগুলো বন্ধ করার লক্ষ্যে নতুন এই নীতিমালায় সম্মতি দিয়েছে ইউরোপীয় কাউন্সিল।
গত ১৪ জুন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভোটের
মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রকদের এই সিদ্ধান্তকে ‘রাইট-টু-রিপেয়ার’ আন্দোলনের জন্য
বড় বিজয় বলে আখ্যা দিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ব্লগ সাইট ম্যাশএবল। এই নীতিমালা কেবল ইইউ
সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও গোটা বিশ্বেই এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা
রয়েছে। কারণ ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যান্য জায়গার জন্য দুটি ভিন্ন নকশার স্মার্টফোন তৈরির
জটিলতা ও খরচে সম্ভবত মোবাইল ফোন নির্মাতারা যাবে না। ফলে, সকল ব্যবহারকারীর জন্যেই
স্মার্টফোনের নকশা বদলে যেতে পারে।
আরও পড়ুন<< নক্ষত্র সৃষ্টির নতুন ছবি প্রকাশ করল নাসা
এক সময় ব্যবহারকারীরা সহজেই মোবাইল ফোনের
ব্যাটারি পরিবর্তন করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আসা সকল স্মার্টফোনের ব্যাটারি
এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে ব্যবহারকারী তা খুলতে পারেন না। ফলে ব্যাটারি নষ্ট হলে তা
ঠিক করতে মোবাইল সার্ভিস সেন্টারের শরণাপন্ন হতে হয়। ফোনের যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের
প্রয়োজন হলে একেবারে নতুন ফোন কেনা ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা না রাখার অভিযোগও রয়েছে কোম্পানিগুলোর
বিরুদ্ধে।
২০২২ সালে ইইউ-এর পাশ করা অপর একটি আইনে
সকল মোবাইল ফোনে ‘ইউএসবি-সি’ পোর্ট রাখার
বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সিদ্ধান্তের ফলেও বিশ্বজুড়ে একই ধরনের প্রভাব দেখা যেতে পারে।
আরও পুড়ন<< এবার টুইটার দিচ্ছে আয়ের সুযোগ
স্মার্টফোন অবশ্যই “ব্যবহারকারীর
মাধ্যমে অপসারণ ও প্রতিস্থাপনযোগ্য” শ্রেণির হতে হবে। এর মানে হচ্ছে, কোনো
বিশেষ কারিগরি জ্ঞান ছাড়াই ব্যাটারি বদলানোর সহজ উপায় থাকতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের
আইন মেনে চলার জন্য স্মার্টফোনের নকশা বদলাতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় পেয়েছে উৎপাদকরা।
এই নীতিমালা কেবল স্মার্টফোন নয়, বরং ইভি
ও ই-বাইকের মতো সব ধরনের পণ্যের ব্যাটারিতেও প্রযোজ্য। এর লক্ষ্য এমন ‘বৃত্তাকার অর্থনীতি’ বানানো, যেখানে
নষ্ট হওয়া ব্যাটারি বিভিন্ন পণ্যে পুনর্ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়।
এই নীতিমালায় বিভিন্ন স্মার্টফোন উৎপাদকের
২০২৭ সালের মধ্যে পুনর্ব্যবহার করা ব্যাটারি থেকে ৫০ শতাংশ লিথিয়াম সংগ্রহের বাধ্যবাধকতাও
রয়েছে, যা ২০৩১ সাল নাগাদ ৮০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে।
আরও পড়ুন<< হোয়াটসঅ্যাপে ফোন নম্বর গোপন করে বার্তা পাঠানো যাবে
উৎপাদকদের ব্যাটারির ভেতর থাকা পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদানের পরিমাণ একটি কিউআর কোডের মাধ্যমে লেবেল করার শর্তও রয়েছে নীতিমালায়। ফলে, ব্যবহারকারীরা পাঁচ বছরের মধ্যেই নির্দ্বিধায় ব্যাটারি বদলানোর সুবিধা পাবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ম্যাশএবল।