আজঃ শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

সাভারে আবাসিক এলাকায় রাইস মিল: বিপর্যস্ত জনজীবন ও পরিবেশ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
সাভার প্রতিনিধি

Image

সরকারি নীতিমালা অনুসারে অটো রাইস মিল করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, শিল্প সনদ, ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স, ফুড লাইসেন্স এবং চকিদারি খাজনা রশিদ প্রদান করে অটোরাইস মিল স্থাপন করার কথা এবং আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা ব্যতিরেকে অটো রাইস মিল স্থাপন করার নির্দেশনা রয়েছে।

কিন্তু শিল্পাঞ্চল ও জনবহুল সাভারে উপজেলায় বেশিরভাগ রাইস মিল গড়ে উঠেছে আবাসিক এলাকায়। শুধু তাই নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশেও কিছু কিছু প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীরা গড়ে তুলেছেন অটো রাইস মিল। এতে ধোঁয়া, ছাই ও শব্দদূষণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জনজীবন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সেই সাথে মারাত্মকভাবে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

সাভার-আশুলিয়ার এ সকল রাইস মিলের কারো কারো পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থাকলেও নিবন্ধন নেই খাদ্য অধিদপ্তরের।

একটি অটো রাইস মিল কারখানায় প্রিলি ক্লিনার, প্যাডি ক্লিনার, বয়লার, ড্রায়ার পেডি হাস্কার, পেডি সেপারেটর, রোটারি শিফটার, লেন্থ গ্রেডার, কালার সার্টার, ডিস্টোনার, থিকনেস গ্রেডার, হোয়াইটনার, সিল্কি পলিশার যন্ত্রপাতি গুলো যথাযথভাবে থাকতে হয়। কিন্তু অধিকাংশ অটো রাইস মিলে এ সকল যন্ত্রপাতি নাই, কারো কারো থাকলেও খরচ বেড়ে যাওয়ার ভয়ে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার করছে না তারা। যার ফলে এসকল রাইস মিলের উৎপাদিত চাউলের মান যেমন ঠিক থাকছে না, অন্যদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে খুব সহজেই।

যেমন সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি আনাইল বাড়ি এলাকায় মেসার্স ভান্ডারী অটো রাইস মিলের খাদ্য অধিদপ্তর লাইসেন্সের তালিকায় নাম থাকলেও একই ইউনিয়নের ঘনকপাড়া এলাকার সোনালী অটো রাইস মিলের নাম পাওয়া যায়নি ঐ তালিকায়। এছাড়া এই ইউনিয়নের তিনটি রাইস মিল সহ সাভার উপজেলায় অবস্থিত বেশিরভাগ রাইস মিল আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে, এবং বেশিরভাগই রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির বাহিরে।

শিমুলিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা তুহিন জানান মেসার্স ভান্ডারী অটো রাইস মিল কারখানাটি আবাসিক এলাকার ব্যস্ততম চলাচলের  রাস্তা ঘেঁষে স্থাপিত। তাদের ধান গমের গাড়ি যখন আসে ঘন্টার পর ঘন্টা ওই রাস্তায় জ্যাম পড়ে থাকে। এতে জরুরি মুহূর্তে একটি রিক্সা নিয়েও পারাপার হওয়ার জায়গা থাকে না। ধোঁয়া এবং ছাইয়ের ভোগান্তি তো আছেই। যখন তাদের ধোঁয়া ছাড়া শুরু করে আশেপাশে পাঁচ মিনিট দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। তাছাড়া রাইস মিলটির দুই আড়াইশো গজের মধ্যে রয়েছে একটি স্কুল।

এ বিষয়ে জানতে ভান্ডারি রাইস মিলের মালিক ইব্রাহিমের মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এছাড়াও শিমুলিয়া গোয়ালবাড়ি বাজার হুমায়ূন কবির মালিকানাধীন রোহিজ সরকার রাইস মিল খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হলেও কার্যক্রম পরিচালনা করতে নেই কোন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, বয়লার ব্যবস্থা ও ধোঁয়া ও ছাই সরানোর  স্লাইক্লোন প্রযুক্তি।

রোহিজ রাইস মিল মালিক হুমায়ুন কবিরের নাম্বারে ফোন করলে তার ভাই জাহাঙ্গীর আজকের দর্পণ কে বলেন, 'আমাদের রাইস মিলের তেমন কোন কার্যক্রম এখন আর নেই। তবে শুধু গৃহস্থদের ধান ভাঙ্গানো ও ছাঁটাই এর কাজ করে থাকি'। খাদ্য অধিদপ্তরে তালিকাভুক্ত হওয়ায়, ধান ও খাদ্যজাত পণ্য গুদামজাত ও সরকারের কাছে খাদ্যশস্য বিক্রি বা গ্রহণ করছেন কিনা জানতে চাইলে,  তিনি তা অস্বীকার করেন।

অটো রাইস মিল অনুমোদনের আগে ধোঁয়া ও ছাই নিষ্কাশনে স্লাইক্লোন প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হয়। এ ক্ষেত্রে অধিকাংশ মিল মালিকরা তা করেননি। যদিও কেউ কেউ এই প্রযুক্তি স্থাপন করেছে, কিন্তু বিদ্যুৎ বিল ও খরচ বাঁচাতে তা বন্ধ রাখছেন বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। এতে ধান ক্রাশিংয়ের সময় ধোয়া ও ছাই আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ ও সাধারণ মানুষের মারাত্মক ক্ষতি করছে।

ধোঁয়া ও ছাই অপসারণের স্লাইক্লোন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে, সাভারের গনকপাড়ায় অবস্থিত সোনালী অটো রাইস মিলের মালিক জসিম উদ্দীন বলেন, ধোঁয়া ও ছাই অপসারণের স্লাইক্লোন প্রযুক্তি কি, এ সম্পর্কে আমার কোন ধারনা নেই, আমি কখনো এর নাম শুনিনি, আমারটা ফুল অটো রাইস মিল সেমিঅটো না ভাই। আর ধোঁয়া সামান্য বাহিরে যায় তাও অনেক উপরদিয়ে। ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ আমার কাছে কখনো অভিযোগ করেনি।

সাভার উপজেলার নয়ার হাট আমগাছি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা শরিফ উদ্দিন বলেন, আমরা যে অসুবিধায় আছি তা দেখার কেউ নাই। মিতালি অটো রাইস মিল থেকে নদীর পাশ দিয়ে যেভাবে ছাই যায় এতে করে মানুষের অনেক সমস্যা হয়, এগুলো ধরা উচিত, সে অটো রাইস মিল করেছে আবাসিক এলাকায়, তার মিলের পাশে আমার জায়গা আছে, আমি যে বাড়ি করব তার কোন উপায় নাই। রাইস মিলের ধোঁয়া আসে রাইস মিলের ছাই আসে। পরিবেশ অধিদপ্তরে আমরা অনেকবার জানাইছি অভিযোগ করছি তারা কি  করে বুঝিনা। ছাই এবং ধুলাবালি উড়ে আইসা কি একটা অবস্থা। গ্রামের মানুষ থাকাই যায় না এদের কারণে।

নয়ারহাট আমগাছিয়া শাহ-ই আলম মালিকানাধীন মেসার্স মিতালী রাইস মিল এর ম্যানেজার তারা মিয়া বলেন, আমাদের রাইস মিল পুরোপুরি অটো রাইস মিল আমাদের সব ধরনের প্রযুক্তি আছে, এবং সবগুলো আমরা সঠিক মত ব্যবহার করছি, সবকিছু একদম কমপ্লিট আমাদের কোন কাগজের ফাঁকফোকর নাই। প্রতিমাসে খাদ্য অধিদপ্তরের ফরম করে জমা দিয়ে দিই সাভারে।

আবাসিক এলাকায় রাইস মিল হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এগুলো হলো মানুষের ভুল ধারণা, ধামরাইতে পৌরসভার ভিতরে অটো রাইস মিল আছে আমাদেরটা তো নদীর পাড়ে, অনেক কিছু কিছু মানুষ আছে তারা এসব অভিযোগ করে। আমাদের এখানে আসলে বুঝতে পারবেন। এটা তো একটু স্বাভাবিক, মনে করেন দেশে আমি বাস করি, আমার পক্ষে ১০ জন থাকে ভালো বলে, ৫ জন খারাপ বলবেই এই ধরনের।

খাদ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের চাউল সংগ্রহ ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ প্রজ্ঞাপন ২০০৮ এ ৪ এর ১ এ বলা হয়েছে, ধান ছাটাই করন ও এ সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের নিকট হইতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি শক্তিচালিত যন্ত্রপাতি দ্বারা ধান ছাটাই করণ, ধান ও চাউল ক্রয় বিক্রয় এবং চাউলজাত দ্রব্যাদি প্রস্তুতকরণ ও বিক্রয় সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।

রাইস মিলগুলোর চাউল এর মান ঠিক রাখতে যেহেতু প্রজ্ঞাপনের ৫ এর ৪নং এ বলা হয়েছে প্রত্যেক লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যক্তি তাহার চাউল কলে মজুদ সংগৃহীত ছাটাইকৃত বিলিকৃত এবং অবশিষ্ট ধান ও চাউল সম্পর্কে প্রতি ১৫ দিন অন্তর একটি প্রতিবেদন ফরম এবং চাউল কলের জন্য মজুদকৃত ধান ও চাউলের পরিমাণ ও গুদামের অবস্থান সম্পর্কে ঘোষণাপত্র ফরম, সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনারের নিকট দাখিল করিবেন। সে  ক্ষেত্রে অধিকাংশ রাইস মিলের খাদ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স না থাকায়, তাদের ছাঁটাইকৃত ও বাজারজাত চালের মান সম্পর্কে যাচাই করার কোন সুযোগ থাকছে না।

২০১৮ সাল পর্যন্ত খাদ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যে, সাভার উপজেলায় মাত্র ১২টি রাইস মিলের লাইসেন্স তালিকায় নাম পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে দেখা যার অধিকাংশই অনেক দিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া নতুন যারা ব্যবসা শুরু করেছেন তাদের তালিকা হয়নি অনেকেরই।

খাদ্য অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা আঞ্চলিক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান আজকের দর্পণ কে বলেন, 'সাভারে ১২ টি অটো রাইস মিল তালিকা ভুক্ত রয়েছে। তালিকা বহির্ভূত অটো রাইস মিল থাকতেই পারে, যারা অটো রাইস মিল ময়দা মিল করবে তাদেরকে আমরা ছাড়পত্র দিব। তবে তালিকাভুক্ত হতেই হবে এটা কোন জরুরী না। যদি কেউ আমাদের তালিকাভুক্ত হতে চায় তখন আমরা তাদের সবকিছু চেক করে দেখি মানোন্নয়ন ঠিক আছে কিনা। যদি তালিকাভুক্ত হয় তখন ময়দা তৈরি চাউল তৈরি করার ক্ষেত্রে গম ও ধান সরকারি রেটে নিতে পারবে, এবং চাল উৎপাদন করে আবার বিক্রি করতে পারবে। মান ঠিক রাখার জন্য আমি শিওর না, যেহেতু আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের নির্দেশনা দিলে আমরা শুধু গিয়ে পরিদর্শন করি দেখি, আমাদের ক্রাইটেরিয়ার ভিতরে আছে কিনা'।

এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক  জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তিনি ফোনে রিসিভ করেননি।

আশুলিয়া উন্নয়ন ফোরামের সেক্রেটারি ব্যারিস্টার বাকের হোসেন মৃধা বলেন, আশুলিয়া একটি জনবহুল শিল্পাঞ্চল এলাকা, এই আবাসিক এলাকায় অটো রাইস মিল থাকাটা অবশ্যই পরিবেশবিরোধী ও সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য বিরোধী। যেহেতু কর্তৃপক্ষ আবাসিক এলাকার এই রাইস মিল গুলোর তদারকি ঠিকমতো করতে পারছে না, তাই এটা অতি দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত। এটা যদি নিউজ হয় আমরা কোর্টে রিট করব। অনেক মিল মালিকদের পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তারা রাইস মিলগুলো পরিচালনা করছে, এটা বন্ধ হওয়া উচিত। পরিবেশ অধিদপ্তরের এ বিষয়ে আরো তদারকি করা উচিত বলে আমি মনে করি। যেন আমাদের আবাসিক এলাকায় সাধারণ জনগণ ও পরিবেশের ক্ষতি সাধন না হয়। এ ব্যাপারে আমররা আশুলিয়া বাসীর স্বার্থে প্রয়োজনে কোর্টে রিট করব'।

পরিবেশে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (ঢাকা অঞ্চল) মুক্তাদির হাসান জানান, এ এলাকা(সাভার) আমি দেখিনা। আমিত বিভাগে কাজ করি। ওখানে অন্য কর্মকর্তা রয়েছেন। তার সাথে যোগাযোগ করেন।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জহিরুল ইসলাম তালুকদারের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পরিবেশে অধিদফতরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-পরিচালক বেগম শাহানাজ রহমান আজকের দর্পণ কে বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে এই বিষয়টি জানিয়ে মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা হবে। আবাসিক এলাকায় রাইস মিল চালানোর ক্ষেত্রে যদি আমাদের ছাড়পত্র থেকে থাকে, তাহলে হয়তো চেয়ারম্যান সাটিফিকেট আশেপাশের মানুষের নো অবজেকশন ছিল এরকম অনেক গুলো বিষয় দেখেই তাদের ছাড়পত্র দিছে। অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয় চেক করা হবে।


আরও খবর



লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

লালমনিরহাটের বুড়িরহাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মুরুলী চন্দ্র (৪৩) নামে এক বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন। এ সময় বিএসএফের গুলিতে আরও ২ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে কালীগঞ্জ উপজেলার বুড়িরহাট সীমান্তের ৯১৩ নম্বর পিলারের একশত গজ ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

মুরুলী চন্দ্র কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের উত্তর বালাপাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্রের ছেলে। আহতরা হলেন একই এলাকার চন্দ্রপুর গ্রামের আজিমুল হকের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৩) ও নুর ইসলামের ছেলে লিটন মিয়া (৪৩)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে ৪/৫ জনের একটি পাচারকারী চক্র ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গরু পাচার করতে ভারতে প্রবেশ করেন। গরুর রাখালরা ভারতীয় গরু নিয়ে বুড়িরহাট সীমান্ত দিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় বিএসএফ তাদেরকে লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে ৩ জন বাংলাদেশি রাখাল গুলিবিদ্ধ হন। পরে বাকিরা আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে রংপুরে নেওয়ার পথে মুরুলী চন্দ্র মারা যান। বাকি দুইজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, সীমান্ত এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মুরলী চন্দ্র নামে একজনের মরদেহ আমরা উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোফাজ্জল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।

নিউজ ট্যাগ: লালমনিরহাট

আরও খবর



এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড: ৫ বছরেও শুরু হয়নি বিচার

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ার। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কেড়ে নেয় ২৬টি প্রাণ। আহত হন ৭১ জন। সেই ঘটনায় মামলা হয়।

ঘটনার প্রায় তিন বছর ৯ মাস পর ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্ত শেষে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের গুলশান জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সমীর চন্দ্র সূত্রধর। তবে রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মামলাটির দিন ধার্য। ওই দিন চার্জশিটটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তবে আদালত চার্জশিটটি গ্রহণ না করে মামলাটি পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

ওই দিন আদালত আদেশে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন মানুষ মৃত্যুবরণসহ অসংখ্য মানুষ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারনামীয় গুরুত্বপূর্ণ আসামিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন। মামলাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হওয়ায় পিবিআইয়ের একজন দক্ষ অফিসার দ্বারা মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।

এরপর পিবিআই মামলার তদন্ত শুরু করে। গত ২২ জানুয়ারি মামলাটি তদন্ত করে আদালতে একই আসামিদের অভিযুক্ত করে ও লিয়াকত আলী খান মুকুলকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই এর ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রফিকুল ইসলাম।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত পিবিআই এর দেওয়া ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন-এফআর টাওয়ার ভবনের ব্যবস্থাপনা কমিটিতে থাকা এস এম এইচ আই ফারুক, তাজভিরুল ইসলাম, সেলিম উল্লাহ, এ এ মনিরুজ্জামান, সৈয়দ আমিনুর রহমান, মিসেস ওয়ারদা ইকবাল, কাজী মাহমুদুল নবী ও রফিকুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে ফারুক জমির মূল মালিক। বিএনপি নেতা তাজভীরুল ইসলাম ভবন পরিচালনা কমিটির সভাপতি। অন্য ৬ জন ভবন পরিচালনা কমিটির সদস্য।

ওই সময় আসামিদের মধ্যে মনিরুজ্জামান, মাহমুদুল নবী, সেলিম উল্লাহ, রফিকুল ইসলাম ও ওয়ারদা ইকবাল পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আসামিরা বিভিন্ন সময় আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। বর্তমানে সব আসামি জামিনে আছেন। সর্বশেষ গত ১২ মার্চ মামলার তারিখ ধার্য ছিলো। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত নথিটি সিএমএম বরাবর পাঠানোর আদেশ দেন। সিএমএম মামলাটি পরবর্তী বিচারের জন্য আদেশ দিবেন। এদিকে লিয়াকত আলী খান মুকুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

নিউজ ট্যাগ: এফআর টাওয়ার

আরও খবর



ভালো আছেন খালেদা জিয়া, চিকিৎসা নিচ্ছেন বাসায়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

নানা রোগে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। যাতে কোনো ধরনের জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সঙ্গে-সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া যায়।

গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) বিএনপি পক্ষে থেকে জানানো হয়, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে পরীক্ষা-নিরিক্ষীর জন্য রাতেই হাসপাতালে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে। কিন্তু রাত ১২ দিকে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়া দুপুরের দিকে অসুস্থতা বোধ করেন। এরপর চিকিৎসকরা তার বেশকিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করান। রাতে তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করায় হাসপাতাল না নিয়ে বাসায় চিকিৎসা দেওয়া হবে।

তবে, প্রয়োজন হলে যেকোনো সময় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন ডা. জাহিদ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ২টার পর বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ম্যাডাম এখন ভালো আছেন। তিনি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

খালেদা জিয়ার দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন ডা. জাহিদ।


আরও খবর
জিআই সনদ পেল দেশের ১৪ পণ্য

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




পটুয়াখালীতে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপি নেতা বহিষ্কার

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
পটুয়াখালী প্রতিনিধি

Image

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান মৃধাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

রোববার (২১ এপ্রিল) রাতে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান মৃধাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে মনির রহমান মৃধাকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেনি।

উল্লেখ, আগামী ২৮ এপ্রিল পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৫ নং কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আনারস মার্কা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন মনির রহমান মৃধা।


আরও খবর



আজ পবিত্র শবে কদর

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সন্ধ্যা থেকে সারাদেশে দিনটি পালিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রজনী পালন করবেন।

মহান আল্লাহতায়ালা লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। পবিত্র এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

পবিত্র রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিল। তাই মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। মুসলমানরা নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়ে শবে কদরের রজনী কাটাবেন।

পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। শবে কদর উপলক্ষে আগামীকাল রোববার (৭ এপ্রিল) সরকারি ছুটি থাকবে।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪