
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর
গোলাপবাগ এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের মাকসুদুর রহমান ডায়না (৪৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন
করেছে পুলিশ। জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, শারীরিক সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড
ঘটিয়েছেন শোয়েব আক্তার লাদেন নামে এক যুবক।
পুলিশ জানায়,
৪৮ বছর বয়সী ডায়নার মরদেহ নিজ কক্ষেই ১১ দিন পড়েছিল। ২৭ আগস্ট বিকেলে গোলাপবাগের একতলা
বাড়ির একটি কক্ষ থেকে ডায়নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে
সোমবার (২৯ আগস্ট) শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে লাদেনকে গ্রেফতার করা হয়। যিনি মঙ্গলবার
(৩০ আগস্ট) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।
বুধবার (৩১ আগস্ট)
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের
উপ-কমিশনার (ডিসি) জিয়াউল আহসান তালুকদার।গ্রেফতারের পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর ভিত্তিতে
তিনি বলেন, ১৬ আগস্ট এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাড়ির ফটক টপকে পালিয়ে যান লাদেন।
ডায়নার ছয় ভাই
বোন সবাই আমেরিকার নাগরিক এবং ডায়না নিজেও আমেরিকান নাগরিক। দুই বছর আগে তিনি দেশে
এসে ওই বাসায় বসবাস শুরু করেন। তাই বাংলাদেশে তার কাছের কোনো স্বজন ছিল না।
জিয়াউল আহসান
বলেন, ডায়নার এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। তার ওই ফুপাতো
ভাই ডায়নার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তিনি পুলিশকে খবর দেন।
হত্যাকাণ্ডের
ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ডায়নার বাসায় কাজ করতেন লাদেন। যখনই প্রয়োজন হতো, তখনই
ডায়না তাকে ডাকতেন। এভাবেই তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ডায়না বাসায় একাই
বসবাস করতেন, তিনি সমাজের কারো সঙ্গে মিশতেন না। তবে কিছু তরুণ বয়সী ছেলে তার বাসায়
মাঝেমধ্যে আসা যাওয়া করতেন।
ডায়না তৃতীয়
লিঙ্গের জানিয়ে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের কিছু দিন আগে লাদেন বিয়ে করেন। বিয়ের পরও
লাদেন এবং ডায়নার মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। কিন্তু লাদেনের এই বিয়ে ও নতুন
জীবনকে ডায়না কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না।
লাদেনও চাইতেন
ডায়নার সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে মুক্ত জীবনে ফিরতে। কিন্তু আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ডায়না
লাদেনকে ছাড়তেন না। তিনি লাদেনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার বিনিময়ে অর্থ
দিতেন।
১৬ আগস্ট শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আঘাত করেন লাদেন। মাথায় ও হাঁটুতে উপর্যুপরি আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় ফেলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।