আজঃ মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, সুনামগঞ্জে অপরিবর্তিত

প্রকাশিত:শনিবার ০২ জুলাই 2০২2 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ জুলাই 2০২2 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

নদ-নদীর পানি না কমায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে, সিলেটসহ দেশের রংপুর বিভাগীয় অঞ্চলে উন্নতি হয়েছে। যদিও দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। ভেঙে গেছে এতদিন তলিয়ে থাকা রাস্তাঘাট। দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। তৈরি হয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট। ঠিকমতো ত্রাণ না পেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে।

বৃষ্টি না কমায় সুনামগঞ্জে হাওর এলাকার রাস্তাঘাট, হাটবাজার, বাড়িঘর এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বেশির ভাগ বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ায় এ এলাকার অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। ত্রাণ সহায়তা ঠিকমতো না পাওয়ায় খেয়ে না খেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে কোনোমতে দিন পার করছেন বলে জানিয়েছেন বানভাসিরা।

এদিকে, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এসব এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে গবাদি পশুর খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন।

অন্যদিকে, লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ি ইউনিয়নের ধরলা তীরবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকার  তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।


আরও খবর



আগামীকাল থেকে শুরু ডিপিএলের সুপার লিগ

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

তীব্র গরমের কারণে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) সুপার লিগের প্রতি রাউন্ডের পর দুদিনের বিরতি রেখেছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)।

সোমবার (২২ এপ্রিল) ডিপিএলের প্রথম পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ছয় দলকে নিয়ে শুরু হবে সুপার লিগ।

প্রাথমিকভাবে প্রতি রাউন্ডের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এবারের আসর শেষ করতে চেয়েছিলো সিসিডিএম। কিন্তু আবহাওয়া বিবেচনায় নিয়ে নিজেদের সিদ্বান্ত বদল করেছে সিসিডিএম। কারণ, প্রচন্ড গরমের কারণে খেলোয়াড়রা ক্র্যাম্পিং ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এদিকে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা চলতি ডিপিএলে অংশ নিচ্ছে। এজন্য যে কোনো সময় বড় ধরণের ইনজুরিতে পড়তে পারে তারা।

সুপার লিগের টিকিট পাওয়া ছয়টি দল হলো...

১। আবাহনী লিমিটেড

২। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব

৩। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব

৪। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব

৫। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব

৬। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার লিগের প্রথম রাউন্ডে আবাহনীর মুখোমুখি হবে প্রাইম ব্যাংক এবং বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে খেলবে শাইনপুকুর। দিনের অন্য ম্যাচে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে শেখ জামালের প্রতিপক্ষ মোহামেডান।

এদিকে, ২৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া রেলিগেশন লিগে খেলবে গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি, সিটি ক্লাব এবং রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। এই পর্বে দলগুলো একে অপরের বিপক্ষে একবার করে খেলবে। সব ম্যাচ শেষে টেবিলের তলানিতে থাকা দুই দল প্রিমিয়ার লিগ থেকে বাদ পড়ে যাবে। রেলিগেশন লিগেও প্রতি ম্যাচের পর দুদিন করে বিরতি রাখা হয়েছে।


আরও খবর



আজ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব দোল পূর্ণিমা

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

সনাতন বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দোল পূর্ণিমা বা হোলি উৎসব আজ সোমবার। উৎসবটি বাংলাদেশে দোলযাত্রা, দোল পূর্ণিমা নামেও বেশ পরিচিত। এদিন দোলযাত্রা ও গৌর পূর্ণিমা উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা, হোম যজ্ঞ ও প্রসাদ বিতরণসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর অনুসারীরা।

এ উৎসবটি ঘিরে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে দোল উৎসব ও কীর্তনের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে এদিন সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত নানা আয়োজন চলবে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা একে অপরকে আবিরে রাঙিয়ে উদযাপন করবেন দিনটি।

দোলযাত্রা হচ্ছে হিন্দা বৈষ্ণবদের উৎসব। বৈষ্ণব বিশ্বাস মোতাবেকএদিন শ্রীকৃষ্ণ রাধিকা এবং তার সখীদের সঙ্গে বৃন্দাবনে আবির খেলেছিলেন। সেই থেকে দোল খেলার শুরু।

এ কারণে দোলযাত্রার দিন এ মতবাদে বিশ্বাসীরা রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ রঙে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হয়ে পড়েন। তখন তারা নানা রঙের খেলায় মেতে উঠেন।

উৎসবটি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা নামেও পরিচিত হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, মাদরাজসহ নানা স্থানে দোল উৎসব নামে পরিচিত। এছাড়া উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারত এবং নেপালে হোলি নামেও পরিচিত এ উৎসবটি। আবার কোথাও কোথও বসন্ত উৎসবও বলা হয়। রাধা-কৃষ্ণ পুষ্পরেণু ছিটিয়ে দোল উৎসব করতেন। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এখন পুষ্পরেণুর জায়গায় আবির এসেছে।

নিউজ ট্যাগ: দোল পূর্ণিমা

আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




বুয়েটকে জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে অ্যাকশন: কাদের

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতির কারখানায় পরিণত করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেই রকম হলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।

রোববার (৩১ মার্চ) সকালে তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে আমরা ছাড় দেইনি। আজকে আমি রাজনীতি করি, কিন্তু বুয়েটে যেতে পারবো না? এটা কোন ধরনের আইন? এটা কোন ধরনের নীতি?

তিনি বলেন, স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। পাঠক তো ঘোষক না। তার চেয়ে বড় কথা ঘোষণার অধিকার কার ছিল? ৭০ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু জনগণের মেনডেড পেয়েছিলেন। মঈন খানের মতো নেতারা আজকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলেন। বিএনপির নেতাদের কেউ বলে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার, আবার কেউ বলে ভারতের পণ্য বর্জন। বিএনপির সব ইস্যু নির্বাচনে মার খেয়েছে। এখন তাদের নতুন ইস্যু ভারত বিরোধী। বিএনপি মিথ্যাচার করছে। তারা যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায় তখন বাংলাদেশের রির্জাভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। এখন তারা আমাদের রিজার্ভ নিয়ে কটাখ্য করে। এখন আমাদের রির্জাভ ২১ বিলিয়ন ডলারের উপরে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সামনে উপজেলা নির্বাচন। নেত্রীর নিদেশনা আপনারা যানেন। আপনাদের প্রস্তাবনা ছিল কোনো প্রার্থী না দেওয়ার। আপনাদের খুব দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। একেক জনের একেক রকম কথাবার্তা দলকে বিভ্রান্ত করে। যা খুশি বলে দেবেন? এটা তো আওয়ামী লীগ নয়, ফ্রি স্টাইলে কথা বললে আমরা ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা চায়ের দোকানে বসে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে। এই ধরনের নেতাদের পরিহার করতে হবে। উপজেলা নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার ভোট হবে, জনগণ যাকে ভোট দেওয়া দেবে। এখানে আপনারা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, চাদঁপুর জেলা কমিটির দ্রুত সম্মেলন করার ব্যবস্থা নেন। চট্টগ্রাম মহানগর সম্মেলনের ব্যবস্থা নেন। আমরা সম্মেলন করে কমিটি করতে চাই। কেউ ক্ষমতার দাফট দেখাবেন না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, উপ দপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের সংসদ সদস্য, জেলা, মহানগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



এবার কুকি-চিনের সহযোগী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) লাল লিয়ান সিয়াম বম নামে এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রাতে রুমার বেথেল পাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। লাল লিয়ান জেলার সদর ইউনিয়নে ০৪ নং ওয়ার্ডের বেথেল পাড়ার মৃত থন আলহ বমের ছেলে।বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেনী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রায়হান কাজেনী বলেন, আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (৭ এপ্রিল) রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে রুমার সোনালী ব্যাংকের সহকারী ক্যাশিয়ার ও কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আরও ৫ সদস্যকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়।

সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে প্রত্যেকটি জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দীন।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল কেএনএফ রুমার সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যের ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় এবং এরপর দিন থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ২০২২ সালে সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।


আরও খবর



বাপ-দাদার শেখানো পেশায় যাদের জীবন জীবিকা

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

এক সময় মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কাসা, কলস, ব্যাংক, প্রদীপ, পুতুল, কলকি, দেবদেবীর মূর্তি ও ঝাঝরের বিকল্প ছিল না তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল আর অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। তাই বর্তমানে বাজারে চাহিদা কম থাকায় এবং কাঁচামালের চড়ামূল্য ও পুঁজির অভাবে টিকতে না পাড়ায় সংকটে পড়েছে পাবনার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পীরা।

মৃৎশিল্পীরা জানান, বর্তমান মানুষের ব্যবহারিক জীবনে মৃৎশিল্পের তেমন কোন আর ভূমিকা নেই। প্রযুক্তি বিকাশের এ যুগে এই শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত না হওয়ায় বর্তমানে এই পেশায় টিকে থাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে কালের আবর্তে বাপ-দাদার পেশা হারিয়ে যেতে চললেও এখনোও টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পাবনা চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের গৌড়িপুর পালপাড়া গ্রামের মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে গৌড়িপুর পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতেই মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছে কুমাররা, কেউ বা ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন সামগ্রী তৈরীতে, কেউ বা করছেন রং এভাবেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা।

পালপাড়ায় গিয়ে কথা হয় মায়া রাণীর সাথে তিনি জানান, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মাটির তৈজসপত্র তৈরী করে আসছেন তিনি। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন কোন চাহিদা নেই, তাই শীত মৌসুমে পিঠাপুলির সামগ্রী তৈরী করেই কোনোমতে চলছে তার সংসার।

এমনিতেই ব্যবসা চলে কম তার উপরে নেই রাস্তাঘাট তাই গৌড়িপুর পালপাড়া থেকে নিমাইচড়া বাজার পর্যন্ত পাকা সড়কের দাবি জানান তিনি।

মৃৎপাত্র পোড়ানোর সময় কথা হয় দুলাল পালের সাথে কথা হইলে তিনি জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে বাপ-দাদার শেখানো পেশায় কাজ করছেন। আগের দিনে বাজারে মৃৎপাত্রের প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন অনেকটাই কম। অন্য কোন কাজ না জানায় এই পেশাই আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।

দুলাল পাল আরও বলেন, পেশাগত প্রয়োজনে ব্যাংক ঋণ পাননা তারা। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি। স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।

কথা হয় বিকাশ পাল, সম্বল পাল, দরদী পাল ও সুবর্ণা পালের সঙ্গে, তারা এই প্রতিবেদককে জানান, এক সময়ে এই গ্রামে মৃৎশিল্পের রমরমা ব্যবসা ছিল। আগে গৌড়িপুর গ্রামে প্রায় ১১০টি ঘর মৃৎশিল্পের কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে বেশির ভাগ পালরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় এখন ১০-১৫ টি ঘরে প্রায় ৩০-৩৫ জন পাল এই কাজের সাথে জড়িত বলে জানান তারা।

তারা আরও জানান, মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা সরকারি কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা প্রণোদনা কোন দিন পেয়েছেন কি না তা তাদের জানা নেই। তারা বলেন, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও মৃৎশিল্পীদের শিল্প জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যদি আধুনিক করে গড়ে তোলা যায় তা হলেই কেবল গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

কথা হয় গোপাল চন্দ্রপালের সঙ্গে তিনি বলেন, আগের দিনে মৃৎশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন এঁটেল মাটি, রঙ, যন্ত্রপাতি ও জ্বালানি ছিল সহজলভ্য। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন হিমশিম খাচ্ছেন। তারা জানান, পূর্বে যেখানে বিনামূল্যে মাটি সংগ্রহ করা যেত বর্তমানে সেই মাটি ১০-১২ হাজার টাকায় কিনতে হয়। আগে খড় কিনতে তাদের কোন টাকা পয়সা লাগতো না, এখন সেই এক বুঝা খড় ৩০০ টাকায় কিনতে হয় তাদের।

গোপালচন্দ্র পাল বলেন, বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে তেমন কোন কাজ না থাকায় সে সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকেন তারা। তবে অনেক সময় মাটি কিনতে আইনি জটিলতায় পড়তে হয় তাদের।

বাড়ির উঠোনে পাত্রগুলোতে রং করতে দেখা যায় উজ্জ্বল কুমার পালকে, তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সাধারণত মৃৎপাত্রগুলো কুমার পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে তৈরি করে থাকেন। এই তৈরিকৃত সামগ্রী বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনেন। অনেকে আবার বাড়ি বাড়ি ফেরি করেও বিক্রি করেন। বর্ষা মৌসুমে কাজ বন্ধ থাকায় কুমারদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ যায়। সে সময় কুমাররা সারা বছর কাজ করার জন্য এঁটেল মাটিসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহে নেমে পড়েন। শুধু পাবনা নয়, গোটা দেশে এ পেশায় নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কারও যেন কোন মাথাব্যথাই নেই।

বাড়ির উঠোনে মাটির পাত্র তৈরি করছেন অনিতা পাল ও প্রার্থনা পাল তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগের দিনে তাদের ব্যবসা অনেক ভালো চলতো বর্তমানে মানুষ প্লাস্টিক, এ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করায় এখন কম চলে। তারা বলেন, আগে কলসিসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরী করলেও বর্তমানে তা ব্যবহার কম হওয়ায় এখন শুধু ঝাঁঝর, কাসা, হাঁড়ি পাতিল তৈরী করে থাকেন তারা। 

এবিষয়ে নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভিন সুলতানা মুক্তি বলেন, তারা কখনও আমার কাছে কোন দাবি নিয়ে আসেনি। আমি আমার এলাকার অনেক সড়কের কাজ করেছি, তাদের সড়কের বিষয়েও কাজ করার চেষ্টা করবো এবং আমি সবসময় তাদের পাশে থাকবো।


আরও খবর