বাংলার দামাল
মেয়েরা নতুন করে লিখেছেন সাফের ইতিহাস। দেশকে উপহার দিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের
মুকুট। দেশকে দিয়ে যাওয়া কথা রেখেছে ওরা। ফুটবল পাগল বাঙালির স্বপ্নপূরণ করেছে নিজেদের
অদম্য সাহস দিয়ে।
এবার পূরণ হতে
চলেছে বাংলার সেইসব সোনার মেয়েদের আক্ষেপ। ফুটবল পাগল বাঙালিকে স্বপ্নপূরণের স্বাদ
দিয়েছে অদম্য কিশোরীরা। এবার এই মেয়েদের স্বপ্নপূরণ করতে চলেছে গোটা দেশ। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন
বাসে চড়েই সাফের ট্রফি নিয়ে দেশবাদীর উষ্ণ অভ্যর্থনায় সিক্ত হতে হতে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা
করবে সানজিদারা।
বিমানবন্দর
থেকে কাকলী-জাহাঙ্গীর গেট- পিএম অফিস-বিজয় সরণি- ফকিরাপুল হয়ে বাফুফে ভবন পৌঁছাবে সানজিদাদের
চ্যাম্পিয়ন বাস।
আজ দুপুর ১
টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের
একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের।
বিমানবন্দর থেকে সেই বাসেই চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে মতিঝিলের বাফুফে কার্যালয়ে পৌছাবে
সানজিদারা।
বিমানবন্দরে
সাফজয়ী দলকে অভ্যর্থনা দেবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তারপর মিষ্টিমুখ
আর সংবর্ধনা শেষে ছাদখোলা বাসে করে চ্যাম্পিয়ন যাত্রা শুরু করবে বাংলার সাহসিকারা।
বাফুফে সেক্রেটারি
আবু নাইম সোহাগ জানিয়েছেন, 'ট্রফিজয়ী মেয়েদের জন্য ছাদখোলা বাসে করে বিজয় উদযাপনের
ব্যবস্থা করেছে মন্ত্রণালয। সেই বাসকে ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে, সাউন্ড সিস্টেম থাকবে।
যেখানে বাজানো হবে ফুটবল এবং স্পোর্টস রিলেটেড গানগুলো। সেই বাসে করেই বীর নারী বুটার্সরা
বাফুফে ভবনে আসবেন।’
বিমানবন্দর
থেকে বাসের রুট নিয়ে তিনি জানান, বিমানবন্দর থেকে কাকলি হয়ে মহাখালি ফ্লাইওভার ব্যবহার
করে জাহাঙ্গীর গেট, পিএমও অফিসের পর বিজয় স্মরণীতে এসে হাতের বাঁয়ে চলে যাবো আমরা।
সেখান থেকে তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে আসবো। কাকরাইল থেকে
হাতের বাঁয়ে- ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং মতিঝিল ও শাপলা চত্ত্বর হয়ে বাফুফে এসে পৌঁছাবো
বাফুফে ভবনে।
ছাদখোলা বাসে
সানজিদাদের এই চ্যাম্পিয়ন যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের
(ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবে পুলিশ আর ট্রাফিক পুলিশ যাত্রাপথ
সহজ করবে।
দেশের স্বপ্নপূরণের
আগে বেশ আক্ষেপ করেই বাংলাদেশের মিডফিল্ড তারকা সানজিদা বলেছিলেন, 'ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন
বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের
সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। '
সানজিদার ওই
এক লাইনেই ঝড় উঠেছে দেশের মানুষের হৃদয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আপামর জনসাধারণও এই মেয়েদের
জন্য ছাদখোলা বাসের দাবি জানিয়েছিলো।
সানজিদার ওই
ফেসবুক পোস্ট চোখে পড়েছিলো যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের। পরে মন্ত্রণালয়
আর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) যৌথ প্রচেষ্টায় একদিনের ভেতরেই সানজিদাদের জন্য
প্রস্তুত করা হয়েছে ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাস। বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদের
অংশ কেটে ফেলে, সেই বাসটিকেই চ্যাম্পিয়নদের ছবিতে মুড়িয়ে তৈরি হয়েছে সানজিদাদের স্বপ্নের
চ্যাম্পিয়ন বাস।