রীতিমত ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে মানুষ খুনের
অর্ডার নিচ্ছিলেন সুপারি কিলার! আজব মনে হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে কলকাতার কাছেই পশ্চিমবঙ্গের
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং এলাকায়। নিজেকে 'সুপারি কিলার' বলে দাবি করা বুলেট
ওরফে মোরসেলিম মোল্লা সম্প্রতি মানুষ খুনের অর্ডার নেওয়ার জন্য ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে
বিলি করেন, যাতে স্পষ্ট হরফে লেখা, ‘মানুষ হাফ মার্ডার
ও ফুল মার্ডার করা হয়।’ যোগাযোগের জন্য কার্ডে রয়েছে মোবাইল
নম্বর। সঙ্গে লাল কালিতে বড় করে লেখা ‘বুলেট’।
কার্ডের একপাশে রয়েছে, নিজেকে সুপারি কিলার
বলে দাবি করা বুলেট ওরফে মোরসেলিম মোল্লার ছবি, আরেক পাশে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বুলেটের
অ্যাকশন ছবি। কার্ডের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ক্যানিং
থানা পুলিশ।
ক্যানিং থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,
খবর পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। এরপর সোমবার ক্যানিং এলাকার ধর্মতলা গ্রামে তল্লাশি
চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় বুলেটকে। তার বাড়ি থেকে একটি বন্দুক, দু’ রাউন্ড কার্তুজ
ও বেশ কিছু ভিজিটিং কার্ডও উদ্ধার হয়েছে। বুধবার তাকে ক্যানিং মহকুমা আদালতে হাজির
করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশদিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত সাতদিনের
রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত বছরের ৭ জুলাই ক্যানিংয়ের গোপালপুর
গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দিনে-দুপুরে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের
তিন নেতাকে। সেই খুনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বুলেটকে। কিন্তু সে সময় নাবালক
থাকায় জামিনে মুক্তি পায় সে। সে বছরই, বেআইনি অস্ত্র পাচারের অভিযোগে ফের পাকড়াও
করা হয়েছিল তাকে। পরে জামিনে মুক্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছিল
বুলেট।
স্থানীয়দের দাবি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার
পর থেকেই এলাকার মানুষকে মাঝে মধ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখাত বুলেট। গত কয়েকদিন
ধরে মানুষ খুন করার জন্য 'সুপারি' নেওয়ার বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করে সে। হাফ মার্ডার করলে
পঞ্চাশ হাজার ও ফুল মার্ডার করলে এক লাখ রুপি নেওয়া হয় বলেও জানা যায়।
ক্যানিং সাব ডিভিশনাল পুলিশ
অফিসার দিবাকর দাস জানান, গ্রেপ্তার বুলেটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাওয়া হচ্ছে এই
ভিজিটিং কার্ড সে কোথা থেকে করল এবং কোথায় কোথায় এই কার্ড বিলি করেছে। আর এই কার্ডের
মাধ্যমে কাজের অর্ডার মিলেছে কি না সেটাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।