আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে জমে উঠেছে কেনাকাটা। নগরীর জহুর হকার্স মার্কেটে প্রত্যেক দিন সকাল থেকে মধ্যরাতে সাহরির আগ পর্যন্ত ভিড় করছেন ক্রেতারা। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে। দোকানিরা বলছেন, ২০ রোজার পর থেকে দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। শেষ রোজা পর্যন্ত এভাবে চললে গত দুই বছর করোনার কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে পারবেন তারা।
সরেজমিনে জহুর হকার্স মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে মাঝরাতেও নানা শ্রেণি-পেশার অসংখ্য ক্রেতা কেনাকাটা করছেন। এ মার্কেটের পাঁচ শতাধিক দোকানে ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন ব্র্যান্ডের শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুদের পোশাকের তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় এ মার্কেটের প্রতি বরাবরই সবার আগ্রহ বেশি থাকে। ক্রেতাদের বাড়তি চাপ সামালাতে দোকানে বিক্রয়কর্মীও বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ হকার্স মার্কেটে ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট ও গেঞ্জি পাওয়া যায়। আবার মানভেদে অনেক পোশাক ১ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। ছেলেমেয়েকে নিয়ে হকার্স মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা হাফিজুল আহমদ জানান, ছেলেমেয়ে ও আত্মীয়স্বজনদের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন তিনি। দিনে ব্যস্ত থাকতে হয় বলে রাতে এসেছেন। গত দুই বছর করোনার কারণে তেমন কেনাকাটা করা হয়নি। প্রতি বছর এ মার্কেট থেকেই কেনাকাটা করেন। এখানে কাপড়ের দাম একটু কম। তবে এবার কাপড় অনুসারে দোকানিরা দাম কিছুটা বেশি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ফাহিমা সরকার নামে এক গৃহবধূ জানান, অন্যান্য মার্কেটের চেয়ে হকার্স মার্কেটে পোশাক কম দামে পাওয়া যায়। তা ছাড়া অন্যান্য মার্কেট আগেভাগে বন্ধ হয়ে গেলেও এটি চলে সারা রাত। এজন্য পরিবারের সবার জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন বলে জানান তিনি। বিক্রয়কর্মী শাহেদ আহমেদ জানান, ১০ রোজা পর্যন্ত বেচাকেনা একেবারেই ছিল না। তবে ১৫ রোজার পর থেকে মানুষ আসছেন। বেচাকেনাও খুব ভালো হচ্ছে। আশা করছি করোনায় দুই বছর যে ব্যবসায়িক ধাক্কা খেয়েছি, তা এবার পুষিয়ে যাবে। তবে এবার ক্রেতারা একটু বেশি দর কষাকষি করছেন বলে অভিযোগ তার।
চট্টগ্রামের সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি মিরন হোসেন মিলন জানান, করোনা সংক্রমণ তেমন না থাকায় এবার মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। মার্কেটগুলোতে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। জহুর হকার্স মার্কেটের ছোট-বড় পাঁচ শতাধিক দোকানে ১৫ রোজার পর থেকে ক্রেতা ঠেলে নড়ানো যাচ্ছে না। সাহরির আগ পর্যন্ত বিকিকিনি চলছে। ঈদ উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা দোকানে বিক্রয়কর্মী বাড়িয়েছেন। তারা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। এমন বেচাবেনা চাঁদরাত পর্যন্ত চলবে বলে আশা করছেন তিনি।