সফলভাবে দেশে এসেছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাশিয়া থেকে ঢাকায় আসে ইউরেনিয়ামের এই চালান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক ও পরমাণু বিজ্ঞানী ড. মো. শৌকত আকবর।
আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এ জ্বালানি হস্তান্তর করবেন।
রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে। রাশিয়ার ওই কারখানা থেকে বিশেষ বিমানে জ্বালানি ঢাকায় হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আনা হয়েছে। এরপর তা সড়কপথে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রকল্পে নেওয়া হবে। এ ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
এর আগে গত ৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ব্যাচের ইউরেনিয়াম চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করতে একটি প্রটোকল সই হয়। সাইবেরিয়াতে হওয়া ওই চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর ও রাশিয়ার পক্ষে এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের (এএসই) ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সি দেইরি স্বাক্ষর করেন।
পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পদ্মা নদীর পাড়ে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেশের ইতিহাসে এককভাবে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পে রাশিয়া ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও কন্ট্রাক্টর রাশিয়ার রোসাটম করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা। এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি ইউনিটে থাকছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর রিঅ্যাক্টর, যেগুলো সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। প্রকল্পের নির্মাণকাজ তিন ভাগ শেষ হয়েছে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালে এবং পরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।