রূপগঞ্জ
প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে টানা ২০ দিন যাবৎ
চলছে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা। প্রতিদিন ঘটছে হামলা মারধর, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ আর
বোমা ও গুলি বর্ষণের ঘটনা। বহিরাগত সন্ত্রাসী সেখানে এক সন্ত্রাসীর পক্ষ নিয়ে তান্ডব
চালাচ্ছেন। সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। বসানো হয়েছে অস্থায়ী
পুলিশ ক্যাম্প। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে ঘটছে এসব ঘটনা।
পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শী আর সেখানকার বাসিন্দারা
জানান, গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার
১ নং ওয়ার্ড থেকে মেম্বার পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে হেরে যান রূপগঞ্জের অন্যতম সন্ত্রাসী
ও মোশা বাহিনীর প্রধান মোশারফ। এরপর থেকেই নির্বাচনী পরাজয়ের বদলা নিতে গ্রামে একের
পর এক তান্ডব চালাচ্ছেন। রূপগঞ্জের এমপি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর (বীর
প্রতিক) সরাসরি তার পক্ষ নেওয়ায় মোশারফ হয়ে উঠেছেন আরও বেপরোয়া। গত ২০ দিন ধরে টানা
সংঘর্ষ চলছে কায়েতপাড়ার নাওড়া গ্রামে। গ্রামবাসীও মোশারফের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছেন সশস্ত্র
প্রতিরোধ। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে মোশা বাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় গ্রামবাসীর।
এসময় মোশা বাহিনীর দুটি বাড়ি আর গ্রামের আরও ৪টি বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মোশা
বাহিনীর হামলায় আহত হয় অন্তত ১২ জন। এসব ঘটনা পরিদর্শনে বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে যান
রূপগঞ্জের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক)। এসময় তিনি সরাসরি মোশারফ আর তার পালিত লোকজনের ক্ষতিগ্রস্ত
বাড়িঘর পরিদর্শন করে ক্ষতিপূরণ দেন। গ্রামবাসী বারবার আবদার করলেও গ্রামের লোকজন তার
প্রতিপক্ষ রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের অনুসারী দাবি করে মন্ত্রী গ্রামের
অন্য কোন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করে নাই। খোঁজ নেননি আহত ব্যক্তিগণেরও। মন্ত্রীর
এমন আচরণে ক্ষুব্ধ সেখানকার মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী
লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। এরপক্ষে মন্ত্রী গাজী আর তার ছেলে পাপ্পা ও অন্য পক্ষের নেতৃত্ব
দেন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। রফিককে কোনঠাসা করতে মন্ত্রী সন্ত্রাসী
মোশারফের পক্ষ নিয়ে কায়েতপাড়ার সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছেন বলে দাবি তাদের। এ কারনে গত ২০
দিনেও থামেনি কায়েতপাড়ার নাওড়া গ্রামের সংঘাত। সে এলাকা যেন এখন আতংকের নগরী। অন্য
এলাকার কোন মানুষ সেখানে প্রয়োজন হলেও যাচ্ছেন না। হামলা আর গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছেড়ে
পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বহু মানুষ।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ
সুপার (গ- অঞ্চল) আবির হোসেন বলেন, নাওড়া গ্রামের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে
পুলিশ র্যাব আর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাতদিন সেখানে পরিশ্রম করছে। এসব হামলা সংঘর্ষে
একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। নাওরায় একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেছি। আমরা সংঘাত
থামানোর সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।