আজঃ রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

রূপগঞ্জে দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম

প্রকাশিত:সোমবার ২২ নভেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ নভেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে সাইফুল ইসলাম (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে এলোপাথারী কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। এসময় তার সাথে থাকা নগদ ৬ লাখ টাকাও লুটে নিয়ে যায় তারা। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সাইফুল ইসলাম রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের চাচাতো ভাই।

আহতের বড় ভাই মজিবুর রহমান জানান, কিছু দিন ধরে রূপগঞ্জের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসীরা মোশারফ বাহিনীর সদস্যরা তার ছোট ভাই সাইফুলের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। দাবি করা চাঁদার টাকা না পেয়ে সোমবার সকাল ১০ টার দিকে ৬ লাখ টাকা নিয়ে সাইফুল তার ব্যবসায়িক কাছে যাবার সময় ওৎ পেতে থাকা মোশারফ বাহিনীর সদস্য আনোয়ার, আব্বাস, মুসা, নাজমুল, আলাদী, আমির হামজা, সাখাওয়াতউল্যাহ, আবুল, রুবেল, শাহা, রিফাত, ওয়াসিমসহ অন্যান্য সদ্যসরা । দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বাড়ি থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় নাওড়া পশ্চিমপাড়া মসজিদের সামনে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার উপড় হামলা করে।

এসময় তাকে এলোপাথারী কুপিয়ে ও হাতুড়ি পেটা করে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা সাইফুলের সাথে থাকা নগদ ৬ লাখ টাকা লুটে নেয়। পরে তাকে ফেলে রেখে সন্ত্রাসী এলাকায় আতঙ্ক তৈরী করতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন সাইফুলকে উদ্ধার করে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করে। সাইফুলের অবস্থা আশংকা জনক বলে, তার বড় ভাই মজিবুর রহমান আরো জানান, সে বর্তমানে সে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মজিবর রহমান বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, হামলার ঘটনাটি শুনে সাথে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।


আরও খবর



ভোটের আগে পিটার হাসের ‘আত্মগোপন’ প্রশ্নে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র দফায় দফায় বেশ জোরালোভাবেই নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছিল।

এমনকি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে দেওয়া হয়েছিল ভিসা-বিধিনিষেধসহ অন্যান্য নানা পদক্ষেপের হুমকিও। বাইডেন প্রশাসনের পাশাপাশি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও ছিলেন এ বিষয়ে সক্রিয়।

তবে নির্বাচনের আগ দিয়ে হঠাৎ করেই দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যান তিনি। আর এ নিয়ে সম্প্রতি একটি দাবি সামনে এসেছে, আর সেখানে বলা হচ্ছে- ভোটের আগে ভারতের চাপেই পিটার হাস আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন।

আর এই বিষয়টিই উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে। তবে নির্বাচনের আগে ভারতের চাপে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আত্মগোপন করেছিলেন- এমন দাবি নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় সোমবার (৮ এপ্রিল) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ভোটের আগে পিটার হাসের আত্মগোপন নিয়ে ভারতের এক কূটনীতিকের দাবি সম্পর্কে জানতে চান।

তিনি বলেন, এটা কি সত্য যে, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশের একতরফা নির্বাচনের ঠিক আগে ভারতের কথিত চাপের কারণে আত্মগোপনে ছিলেন? নয়াদিল্লিতে একটি বইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের একজন সিনিয়র কূটনীতিক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত এই অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি নয়াদিল্লিতে প্রতিটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের দিকে নজর রাখি না।

তিনি হাসতে হাসতে আরও বলেন, কিন্তু না, এটি (ভোটের আগে ভারতের চাপে পিটার হাসের আত্মগোপন) সঠিক নয়।


আরও খবর



উদ্বোধনের ৫ মাস পরও খুলনা-মোংলা রুটে চালু হয়নি ট্রেন

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

উদ্বোধনের ৫ মাস পরও খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চালু হয়নি। কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল শুরু হবে তা এখনও অনিশ্চিত। ৮টি স্টেশন ও রেল ক্রসিংসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জায়গায় এখনও জনবল নিযুক্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই রুটে ট্রেন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে মোংলা ও খুলনার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল করে। এরপর ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কিন্তু এরপর ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, এই রেলপথে ৮টি স্টেশন নির্মাণ করা হলেও সবগুলোতে এখনও আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম দেয়া হয়নি। রেল স্টেশন ও রেল ক্রসিংগুলোতে নিযুক্ত করা হয়নি কোনো জনবল। এছাড়া মোট কতটি ট্রেন চলবে, ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়া এখনও নির্ধারণ হয়নি।

খুলনা-মোংলা রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম জানান, উদ্বোধনের সময় কিছু ফিনিশিং কাজ বাকি ছিল। সেগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এখনও জনবল নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। এই রুটে পণ্য পরিবহনকে প্রাধান্য দেয়া হবে, সেই সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনও চলবে।

খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, খুলনা-মোংলা রেল লাইন এখন যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত। ঈদের পরে ট্রেন চলাচল শুরু করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এই রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ভারতীয় দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। ভারতের ঋণ সহায়তায় এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

এই রেলপথে রূপসা নদীর উপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ৯টি স্থানে ভেইকেল আন্ডারপাস-ভিইউপি (রেল লাইনের নিচ দিয়ে যাওয়ার রাস্তা) নির্মাণ করা হয়েছে। ভিইউপি এর কারণে ট্রেন চলাচলের সময় রেল ক্রসিংগুলোতে যানবাহন আটকা পড়বে না। এছাড়া দুর্ঘটনারও ঝুঁকি থাকবে না। এই রেলপথে স্টেশন রয়েছে ৮টি। সেগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, দ্বিগরাজ, কাটাখালি, চুলকাঠি, বাঘা ও মোংলা।

খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, আমরা চাই দ্রুত এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হোক। ট্রেন চালু হলে মোংলার সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে মোংলা বন্দর। পর্যটকরাও খুলনা থেকে ট্রেনে করে সুন্দরবনে যেতে পারবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুর পর রেল সংযোগ মোংলা বন্দরের জন্য একটা আশীর্বাদ। এখন নদী ও সড়কপথে পণ্য বন্দরে আনা-নেয়া করা যায়। তবে রেলের মাধ্যমে কন্টেইনার পরিবহন সবচেয়ে সাশ্রয়ী একটা মাধ্যম। মোংলার সঙ্গে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের কন্টেইনার পরিবহন সহজ হবে। কমলাপুর আইসিডি ও ঢাকা থেকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য কন্টেইনারে মোংলা বন্দরে আনা-নেয়া সহজ হবে। মোংলা বন্দরে জাহাজের আগমন বৃদ্ধি পাবে।


আরও খবর



আবারও কমলো জ্বালানি তেলের দাম

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করলো সরকার। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশে দ্বিতীয়বারের মতো জ্বালানি তেলের মূল্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার (৩১ মার্চ) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত নতুন মূল্যের তথ্য জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। যা আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

নতুন হিসাব অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে কেরোসিন ও ডিজেলের খুচরা মূল্য ১০৮ টাকা থেকে কমে ১০৬ টাকা, অকটেন ১২৬ ও পেট্রোল প্রতি লিটার ১২২ টাকা দরে বিক্রি হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানায়।

এর আগে গত ৭ মার্চ স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ তালিকা প্রকাশ করা হয়। যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ১০৮, কেরোসিন ১০৮, অকটেন ১২৬ ও পেট্রোল ১২২ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় হয় ২৯ আগস্ট, ২০২২। এরপর কোভিড মহামারি-উত্তর সরবরাহ সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে সমুদ্রপথে জ্বালানি পণ্যের  প্রিমিয়াম, পরিবহন ভাড়া, বিমা ও ব্যাংক সুদের হার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে শুধু মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের (প্রধানত ডিজেল) মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।

আরও বলা হয়, ফর্মুলা বা গাইডলাইন অনুসারে এখন থেকে প্রতি মাসেই জ্বালানি তেলের আমদানি বা ক্রয়মূল্যের আলোকে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রয়মূল্য সমন্বয় করা হবে।


আরও খবর
১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোটগ্রহণ

রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪




পাহাড়ে সক্রিয় ভয়ংকর বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রাণ প্রকৃতির নিসর্গ পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) শান্তির পাহাড়ে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পরপর দুই দিনে তিনটি সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় ঢুকে টাকা লুটে নেওয়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাহাড়ে শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে অনেকগুলো ভার্চুয়াল বৈঠকের পর গত বছরের ৫ নভেম্বর শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের প্রথম সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গত ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সরাসরি বৈঠক। এর মধ্যে পাহাড়ে বড় ধরনের কোনো সশস্ত্র তৎপরতা দেখা যায়নি। হঠাৎ করে পরপর তিনটি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় কেএনএফ সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের শুরুতে দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্রের গর্জন শোনা যায়। গত বছরের ৭ এপ্রিল বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের অতর্কিত গুলিবর্ষণের ঘটনায় আটজন নিহত হন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কেএনএফের সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সদস্যরা সম্প্রতি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের ওপর নির্বিচারে হামলা, লুটপাট ছাড়াও সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তদের খুন, জখম ও অপহরণের ঘটনাও ঘটায় কুকি সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় নিরীহ পাহাড়ি বাসিন্দাদেরও হুমকি-ধামকি ও নির্যাতন করে তারা। কেএনএফের এ তাণ্ডবের কারণে জীবন বাঁচাতে নিজ পাড়া বা বসতভিটা ছেড়ে উপজেলা সদরে আশ্রয় নিয়েছেন বহু পাহাড়ি বাসিন্দা। স্থানীয় পর্যায়ে আতঙ্ক ছড়াতে পাহাড়ের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি রক্ষায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপরও তারা অতর্কিত সশস্ত্র হামলা চালায়। কিন্তু গত মঙ্গল ও বুধবার তিনটি সরকারি ব্যাংকের শাখায় ঢুকে নগদ টাকা লুটে নেওয়ার ঘটনায় নতুন বার্তা পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। টাকার অভাবে কেএনএফ লুটপাটে জড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ব্যাংক লুটের আগে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচি বাজারে গুলি ছুড়তে ছুড়তে দোকানগুলো থেকে মোবাইল সেট ও নগদ টাকা কেড়ে নেয় অস্ত্রধারীরা। পরে সোনালী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংকে ঢুকে ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা লুটতরাজ করে চলে যায়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের পর কথিত বিচ্ছিন্নতাবাদী কেএনএফের কুকিল্যান্ডের সেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। কেএনএফের সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) পার্বত্য এলাকায় যেসব আস্তানা গেড়েছিল সেগুলোর অধিকাংশই এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। ফলে সশস্ত্র তৎপরতার শক্তি ও সুযোগ হারিয়ে কুকি সন্ত্রাসীরা এখন বিচ্ছিন্নভাবে চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণের জন্য অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। বাজারে হামলা ও ব্যাংক লুটের ঘটনা তারই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগেও বেশকিছু অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনার সঙ্গে কেএনএফ বা কেএনএর সম্পৃক্ততা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কেএনএফ বা কেএনএ ছাড়াও পার্বত্য তিন জেলায় চাঁদাবাজির আধিপত্য নিয়ে জেএসএস, ইউপিডিএফসহ অন্য আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোও বেপরোয়া সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি তৎপরতা গত এক বছর ধরে সক্রিয় ছিল। তারই অংশ হিসেবে গত ৫ নভেম্বর প্রথম সরাসরি বৈঠক করে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে নেতৃত্ব দেন কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। গত ৬ মার্চ দ্বিতীয় সরাসরি বৈঠক হয় তাদের সঙ্গে। দ্বিতীয় দফা সরাসরি আলোচনায় ৭টি বিষয় নিয়ে সমঝোতা হয়েছিল। এর মধ্যে কেএনএফের মামলা প্রত্যাহার, জেলে আটক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া, মিজোরামে পালিয়ে যাওয়া নাগরিকদের ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসন করা, চাঁদাবাজি বন্ধ, কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে এসে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলার পর গতকাল কেএনএফের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। ১৯ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনু গতকাল বিকালে বলেন, আমরা অনেকগুলো বৈঠক করে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংলাপ ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলাম। এই সময়ে কোনো বড় ঘটনাও ঘটেনি। তিনি বলেন, হঠাৎ তাদের এই কর্মকাণ্ডে মনে হচ্ছে, কমান্ড পর্যায়ে কোনো পরিবর্তন এসেছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে সশস্ত্র এই সংগঠনটি। নগদ টাকার প্রয়োজন থেকেই তারা বাজার ও ব্যাংক ডাকাতির মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নেমেছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় তাদের সাংগঠনিক শক্তি অনেকটা পর্যুদস্ত অবস্থায় রয়েছে। তারা হয়তো মনে করছে, পৃথক কুকিল্যান্ডের স্বপ্নপূরণ সম্ভব নয়। সেজন্যই তারা শক্তির জানান দিতে চাইছে। এদিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অপহৃত সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন রাসেলকে অপহরণের দুই দিন পর গতকাল সন্ধ্যায় উদ্ধার করা হয়েছে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে পার্বত্য গণপরিষদের উদ্যোগে বান্দরবান প্রেস ক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুর রহমান অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বিভিন্ন স্পর্শকাতর পয়েন্টে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, পার্বত্য এলাকায় তারা (কেএনএ) এখনো তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের তাণ্ডবের কারণে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় যাতায়াত ও পর্যটকদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সবখানেই একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেও নিরাপত্তা বাহিনীর মোটামুটি শক্ত অবস্থান রয়েছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবেশ ও বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর কোনো বিকল্প নেই। পার্বত্য অঞ্চলের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে আরও অনেক সেনা ক্যাম্প চালু করা এখন সময়ের দাবি। যেসব স্থান থেকে একসময় সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছিল সেগুলোও দ্রুত চালু করা প্রয়োজন। শুধু পুলিশ দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।


আরও খবর
১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোটগ্রহণ

রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪




ভোক্তাপর্যায়ে কমলো এলপি গ্যাসের দাম

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ভোক্তাপর্যায়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ দফায় ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ১ হাজার ৪৮২ টাকা থেকে ৪০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

বুধবার (৩ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ দর ঘোষণা করে সংস্থাটি, যা আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে মার্চ মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৭৪ টাকা থেকে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।


আরও খবর
আরও কমলো স্বর্ণের দাম

রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪