নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ধারাল অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ সময় হামলাকারীরা এক পক্ষের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সশস্ত্র মহড়া, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে আটজনকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন বাজারে এলাকায় ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাঞ্চন পৌর এলাকার রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসূল কলির সঙ্গে কাঞ্চন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম লিটুর দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। প্রায় সময়ই তাদের দুই গ্রুপের লোকজনের মাঝে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় দুই গ্রুপই মাঠে রয়েছে। এখানে উভয় গ্রুপ পেশি শক্তি দেখাতে এবং গ্রুপের লোকের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের লোকজনকে বিভিন্ন কৌশলে এবং বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে টেনে আনছেন। এসব বিষয় নিয়ে ইদানিং তাদের দুদলের মধ্যেই চরম বিরোধ চলছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাতটার দিকে আব্দুর রহিম লিটুর লোকজন রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্যে গোলাম রসুল কলির ছোট ভাই নূর হোসেনের মালিকানাধীন কাঞ্চন বাজারে অবস্থিত মুসলিম সুইটস এন্ড হোটেল নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় পুরো বাজার এলাকায় ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে বাজার এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। এক পর্যায়ে গোলাম রসুল কলির লোকজন এসে প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের স্থানীয় ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটজনকে আটক করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী নুর হোসেন জানান, কোন কারণ ছাড়াই অহেতুক আব্দুর রহিম লিটুর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
নাম না প্রকাশ শর্তে কাঞ্চন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে জানান, তারা এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন। কয়েকদিন পরপরই বিভিন্ন আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাজার এলাকায় সশস্ত্র মহড়া ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটায়। এতে করে ব্যবসায়ী এবং বাজারে আগত ক্রেতারা সবসময় আতঙ্কে থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপঙ্কর সাহা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত উভয় গ্রুপের আটজনকে আটক করা হয়েছে। আরও আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোন অপরাধীকে ছাড় নয়।