পুলিশ সুপার
পরিচয় দিয়ে প্রতারণা এবং বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নওগাঁ ও রাজশাহী
জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের একজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন
পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। এ সময় তার নিকট হতে
অপরাধ কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম জব্দ করা হয়।
বিকাশ এবং নগদ
মোবাইল অ্যাপ থেকে ৪৮৩টি নাম্বার কালেক্ট করে, এসব একাউন্ট প্রতারণা মাধ্যমে মোটা অঙ্কের
টাকা আদায় করতো এই চক্র।
শনিবার (২ ডিসেম্বর)
দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দামপাড়া পুলিশ লাইন্সস্থ মিডিয়া সেন্টারে
এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব জানান সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম উপ-পুলিশ কমিশনার লিয়াকত
আলী খান। এসময় বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসিফ মহিউদ্দিন, এসি মো. শফিকুল ইসলাম,
ইন্সপেক্টর মাহফুজ উপস্থিত ছিলেন।
অজ্ঞাতনামা
ব্যক্তি উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা (এসপি/এডিশনাল এসপি) পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা
হাতিয়ে নেওয়া ঘটনার ভুক্তভোগী বিকাশ এজেন্ট গত ২৭ নভেম্বর সিএমপির সদরঘাট থানায় একটি
অজ্ঞাতনামা প্রতারকের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। যা সদরঘাট থানার মামলা নং-১৫, ধারা-১৭০/৪০৬/৪২০
পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু হয়। পরে মামলাটি তদন্তভার সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের নিকট
দেওয়া হয়।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার রহস্য উদঘাটন
করে ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত ব্যক্তিদের গ্রেফতার অভিযানে নামে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের
একটি চৌকস টিম। নওগাঁ জেলার মান্দা থানা এবং রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানা এলাকায় অভিযান
পরিচালনা করে অত্র মামলার ঘটনার মুলহোতা মোঃ সাগর প্রকাশ রিমন (২৩) গ্রেফতার করা হয়।
এসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল, সিম উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে
জানা যায়, প্রতারক চক্রটি নিজেকে উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা, এসপি, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশ ও নগদ একাউন্ট ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের
ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রথমে সে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে পুলিশের বিভিন্ন
ইউনিটের "পুলিশ কন্ট্রোল রুম" এর নাম্বার নিয়ে নিজেকে পুলিশের এসপি, এডিশনাল
এসপি পরিচয় দিয়ে কল দেয়। পরবর্তীতে "পুলিশ কন্ট্রোল রুম" হতে উক্ত থানা এলাকায়
দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারের মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে কল দিয়ে নিজেকে পুলিশের উদ্ধর্তন
কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। সে পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে এলাকার বিকাশ এজেন্টের সাথে কৌশলে
বিকাশ এজেন্টের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করতো। পরে নিজেকে পুলিশের এসপি/এডিশনাল
এসপি পরিচয়ে বিশ্বাস করিয়ে কৌশলে উক্ত বিকাশ এজেন্টের নিকট হতে প্রতারণার মাধমে মোটা
অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন।
গ্রেফতারকৃত
ব্যক্তি প্রতারণা চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডিএমপি, রাজশাহী,
পাবনা ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন থানায় মাদকদ্রব্য, জালিয়াতি ও প্রতারণা সংক্রান্তে ০৫টি
মামলা তদন্তাধীন এবং আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার
অভিযান অব্যাহত রয়েছে।