আজঃ রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

বাজারে আগুন, রোজার আগে সব নিত্যপণ্যের দামই চড়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র রমজান। আর এরই মধ্যে রোজার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ভোক্তারা। তবে এবার রোজা ঘিরে প্রয়োজনীয় প্রায় সব নিত্যপণ্য গত বছরের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গত এক বছরের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ছোলা, খেজুর, মসুর ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, বেসন, মাছ ও মাংসের দাম কেজিতে ৪ থেকে ১৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্য পেঁয়াজের দাম; এই পণ্যটি কেজিতে ১৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তবে গত এক বছরের ব্যবধানে সয়াবিন তেল ও ব্রয়লার মুরগির দাম ৭ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার রোজায় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার শুল্ক কমানোসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে সেই সুবিধাগুলো ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁচ্ছাচ্ছে না। তবে সরকার পাইকারি থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকিতে জোর দিলে সামনে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসব পণ্যের শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয়। শুল্ক কমানোর এক মাস পার হয়ে গেলেও বাজারে এই চার পণ্যের মধ্যে দুটি পণ্যের দাম উল্টো বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

শুল্ক কমানোর পরও বাজারে খেজুর ও চিনির দাম নতুন করে বেড়েছে। খেজুর মানভেদে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা এবং চিনি কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। তবে ভোজ্য তেল সয়াবিন আমদানিতে শুল্ক কমানোর পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ থেকে কমিয়ে ১৬৩ টাকা করা হয়। যা গত ১ মার্চ থেকে কার্যকর হলেও বাজারে নতুন দরের তেল পাওয়া যাচ্ছে দুই-তিন দিন ধরে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতিবছরই শুল্ক কমানোর সুবিধা আমদানিকারকা পেলেও ভোক্তাদের কাছে সেই সুবিধা পৌঁছায় না। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়।

ভোক্তারা বলছেন, প্রতিবছরই নানা অজুহাত দিয়ে রোজার আগে আগেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এবারও তাই হচ্ছে। এদিকে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ডলার সংকট এবং ঋণপত্র খোলা (এলসি) নিয়ে জটিলতার কারণে এবার পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) রাজধানী বাড্ডার কাঁচাবাজারে কথা হয় ক্রেতা ফিরোজা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর রোজার এক সপ্তাহ আগেই পুরো মাসের জন্য বাজার করা হয়। এবার বাজারে ইফতারের আইটেমসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেশি। যার কারণে প্রয়োজনমতো কিছুই কেনা যাচ্ছে না। আগে যেখানে দুই-তিন কেজি ছোলা কিনতাম এবার এক কেজি নিয়েছি। চিনি, ডাল, বেসন এগুলোও প্রয়োজনের চেয়ে কম কিনেছি এবার।’

তিনি বলেন, সরকার স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য টিসিবির মাধ্যমে কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু করার উচিত ছিল। কারণ আমাদের মতো নির্ধারিত আয়ের মধ্যবিত্তদের জন্য এই বাজারে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে। খাদ্যের তালিকটা কাটছাঁট করেও এখন চলা যাচ্ছে না।

একই বাজারের মুদি দোকানদার মো. আরমান বলেন, বাজারে পণ্যের দাম বেশি থাকায় ক্রেতারা এবার রোজার বাজার কমিয়ে কিনছেন। যারা আগে একসঙ্গে দুই-তিন কেজি করে ছোলা, চিনি ও ডাল কিনতেন তারাও এখন এক কেজির বেশি নিচ্ছেন না। যার কারণে বেচাকেনা কম এবার।’

কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ডলারের সঙ্গে টাকার যে পরিবর্তন হয়েছে, এতে টাকার আমদানি ব্যয় বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমদানি ব্যয় বাড়লে তার প্রভাব কিছুটা বাজারে পড়ে। এখন সবাই চেষ্টা করে তার যে ব্যয় বৃদ্ধি হলো, সেটি অন্যের ঘাড়ে কিভাবে চাপিয়ে দেওয়া যায়। ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা এখন তাদের লাভের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এবার বাজারে একটা নেতিবাচক প্রভাব আমরা দেখতেছি। সরকার অনেক উদ্যোগ নিয়েছে, তার সুফল এখন পর্যন্ত ভোক্তা পর্যায়ে তেমনভাবে পৌঁছায়নি।’

ক্রেতাদের হুমড়ি খেয়ে পণ্য না কেনার পরামর্শ দিয়ে গোলাম রহমান বলেন, রমজানকে সামনে রেখে ক্রেতারা যদি হুমড়ি খেয়ে পণ্য না কিনে একটু সংযমী হয়ে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু কেনেন, তাহলে বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে না। আমরা আশা করছি, সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তার প্রভাবে বাজারে পণ্যের দাম কমবে। কারণ এবার বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।’

২০২৩ সালের মার্চ মাসের বাজারদর এবং বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার এবং ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ছোলার দাম গত এক বছরের ব্যবধানে ১১ থেকে ১৬ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়ে খুচরায় কেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১৫৭ থেকে ১৭৫ শতাংশ দাম বেড়ে মানভেদে ৯০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক বছরের ব্যবধানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি।

বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৭ থেকে ১০ শতাংশ কমে ১৬৩ থেকে ১৭৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি কেজিতে ২২ থেকে ২৫ শতাংশ দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট দানার মসুর ডাল কেজিতে ৭ থেকে ৮ শতাংশ দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। সাধারণ মানের খেজুর প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ দাম বেড়ে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা ভালোমানের খেজুর আজোয়া ও মরিয়ম মানভেদে কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন সুপারশপে উন্নত মানের খেজুর তিন হাজার টাকা পর্যন্তও বিক্রি করতে দেখা গেছে।

আমদানিকারক ও পাইকারি শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ বলেন, দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতির কারণে এখন দাম বাড়তি। প্রতিবছরই বড় এই ঘাটতি আমদানির মাধ্যমে পূরণ করতে হয়। যখনই এসব পণ্যের আমদানি ব্যাহত হয়, তখনই দেশের বাজারে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়ে দাম বেড়ে যায়। এবারও তাই হচ্ছে। বাজারে দাম কমাতে হলে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে হবে এবং সরবরাহ বাড়াতে হলে আমদানির বিকল্প নেই। সরকার ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু এখনো আমদানি শুরু হয়নি। যার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম তেমনভাবে কমছে না।’

চিনির বাড়তি দামের বিষয়ে মেঘনা গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) তসলিম শাহরিয়ার বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারেই বাড়তি চিনির দাম। এখন একমাত্র ব্রাজিল থেকেই আমাদের চিনি আমদানি করতে হচ্ছে। একটি জাহাজ আসতেই দেড় থেকে দুই মাস সময় লেগে যাচ্ছে। এতে জাহাজ ভাড়া কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নসহ বিভিন্ন কারণে এখন আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। চিনি আমদানিতে নামমাত্র শুল্ক কর কমানোর কারণে দেশের বাজারে চিনির দাম কমানো যাচ্ছে না।’

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএম এন্টারপ্রাইজের হাজী মো. মাঈন উদ্দিন মিয়া বলেন, সরকার নামমাত্র ডিউটি কমিয়েছে। আগে এক কনটেইনার ২৫ টন খেজুরে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা ডিউটি ছিল। মাঝারি মানের খেজুর এক কনটেইনারে ডিউটি আসে ৬৪ লাখ টাকা। সেখান থেকে বর্তমানে সরকার মাত্র ১০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে। এটাকে কমানো বলে না।’

এদিকে চাল আমদানিতে শুল্ক কমেছে প্রতি কেজিতে সাড়ে ২৩ টাকা। তবে আমদানি মূল্যের চেয়ে বাজারে চালের দাম কম থাকায় আমদানি করতে সাহস পাচ্ছে না আমদানিকারকরা। এই কারণেই চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে।

রাজধানীর চালের পাইকারি সবচেয়ে বড় বাজার বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের পরপরই চালের বাজারে অস্থিরতা শুরু হলেও সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নিয়মিত বাজার অভিযানের কারণে এখন বাজার স্থির রয়েছে। পাইকারিতে কেজিতে দুই-তিন টাকা পর্যন্ত দামও কমেছে। বাজারে পর্যাপ্ত চালের মজুদ থাকায় রমজানে নতুন করে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।’ আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার, কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশে চালের বাড়তি দামের কারণে এখন আমদানি হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

রমজানের আগে নতুন করে বাজারে বাড়ছে মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি কেজি মানভেদে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শবেবরাতের দিন রাজধানীর বাজারে হঠাৎ দাম বেড়ে গরুর মাংস ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল।

কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, মুরগির বাজার এখন আগুন। এক সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে। সামনে মুরগির বাজার যে কী হয়, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

এদিকে আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবৈধ মজুদদার ও বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

আসন্ন রমজানে ঢাকা সিটিতে কেউ যাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কারসাজি করতে না পারে, সে জন্য নজরদারি করা হচ্ছে উল্লেখ করে সিআইডিপ্রধান বলেন, আমরা ১২টি টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা মাঠে কাজ করছে, নজরদারি চালাচ্ছে। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে, তাদের ওপর বিশেষ নজরদারি থাকছে।’


আরও খবর



পাথরঘাটায় দু’টি চিত্রা হরিণ উদ্ধার

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনা পাথরঘাটায় লোকালয়ে আসা দুইটি চিত্রা হরিণ উদ্ধার করা করেছে বন বিভাগ। বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯ টার সময় পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের বান্দাকাটা নামক এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয় ঢুকে পড়া হরিণ দুটি উদ্ধার করা হয়।

বন বিভাগের জ্ঞানপাড়া বিশেষ শহর টিমের ভারপ্রাপ্ত অফিসার্স ইনচার্জ ওবায়দুল রহমান আজকের দর্পণকে বলেন, হঠাৎ করে সকালে দুইটি চিত্রা হরিণ সুন্দরবন থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। মানুষ দেখে হরিণ দুটি ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। এক পর্যায়ে বেরিবাদের পাশে থাকা জালে একটি হরিণ বেঁধে যায়। কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় হরিণটিও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উদ্ধার করে ফরেস্ট ক্যাম্পের নিয়ে যাওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে সুন্দরবন একেবারেই কাছাকাছি হওয়ায় হয়তো হরিণ দুটি ভুল করে খাবারের সন্ধানে এই এলাকায় এসেছে।

হরিণ দুটি দ্রুতই সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি কারণ চিত্রা হরিণ বেশি মানুষ দেখলে স্টক করে মারা যায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই এলাকায় কয়েকটি সক্রিয় হরিণ চোরা কারবারি গ্রুপ আছে হয়তো তারাও এই হরিণ দুটি লোকালয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসতে পারে। তাই হরিণ রক্ষায় বন বিভাগের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে দাবি করেন তারা।


আরও খবর



বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে উত্তাল গাজীপুর

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও বার্ষিক ছুটির টাকার দাবিতে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। সোমবার (০১ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে কোনাবাড়ী-কাশিমপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শ্রমিকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেডের আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, ফেব্রুয়ারির বকেয়া বেতন, ছুটির টাকা ও ঈদ বোনাস দিতে চেয়েও দেয়নি। এ কারখানায় প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক আছে। বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও বার্ষিক ছুটির টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানায় শ্রমিকরা।

সাইফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক বলেন, আর কয়েক দিন পর ঈদ। এখনও বেতন-বোনাস পাচ্ছি না। ছেলেমেয়ে নিয়ে কীভাবে ঈদ করব? কয়েক দিন পর ছুটি হয়ে যাবে, টাকা না দিলে বাড়ি যাব কীভাবে? আজকের মধ্যেই আমাদের টাকা পরিশোধ করতে হবে।’

তবে এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, একটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন-বোনাসের দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে সকাল থেকে বিক্ষোভ করছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষের সঙ্গেই আলাপ-আলোচনা চলছে৷’


আরও খবর



কোরবানির আগে ব্রা‌জিল থেকে আনা হবে জীবন্ত গরু: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন কোরবানির ঈদে ব্রা‌জিল থেকে জীবন্ত গরু আনার সম্ভাব্যতা নিয়ে ভাবছে সরকার বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। রবিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর এক‌টি হোটেলে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার স‌ঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। বৈঠক শে‌ষে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

আহসানুল ইসলাম টিটু ব‌লেন, আমরা আগামী কোরবানি সামনে রেখে তাদের (ব্রাজিলকে) ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছি, যদি সস্তা হয় তাহলে জীবন্ত গরু আনার ব্যবস্থা করা যায় কি না। আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই ক‌রে দেখ‌তে পা‌রি।

বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে গরুর মাংস রপ্তানিতে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার দেশটি প্রতি কেজি গরুর মাংস সাড়ে চার মার্কিন ডলারে (৪৯৫ টাকা) বাংলাদেশকে দিতে চায়। গত বছর বিশ্বের ১২৬টি দেশে গরুর মাংস রপ্তানি করেছিল ব্রাজিল।

এদিকে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ব্রাজিল থেকে গরু আমদানি করছে মুন্সিগঞ্জের ডাচ ডেইরি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা ব্রাজিল থেকে ৫০০ গরু আমদানি করছে।


আরও খবর
১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোটগ্রহণ

রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪




তাপমাত্রা বাড়তে পারে তিন বিভাগে

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের তিন বিভাগে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এতে রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মোংলা ও ঈশ্বরদীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার রাজধানীর তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ গতকাল জানান, বুধবার তাপমাত্রা মঙ্গলবারের মতোই থাকতে পারে। তবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।


আরও খবর



অন্যকে বাঁচাতে জীবন দেওয়া নাজিউল ছিলেন মায়ের একমাত্র সন্তান

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

অপরিচিত এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে জীবন দেওয়া সেই কলেজছাত্র তার মায়ের একমাত্র ভরসা ছিলেন। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যাওয়া যুবকের নাম জোবায়ের রহমান নাজিউল (১৮)।

সোমবার (১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাইবান্ধা শহরর মাঝিপাড়া এলাকার রেললাইনে সন্তানসহ দাঁড়িয়ে থাকা গৃহবধূ রাজিয়া বেগমেকে বাঁচাতে গিয়ে নাজিউলের মৃত্যু হয়।

জোবায়ের রহমান নাজিউল গাইবান্ধা সাঘাটা উপজেলার ভরখালী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম ও জেবা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিলেন। ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তার বাবা-মা। জোবায়ের রহমান নাজিউলের এমন ত্যাগে তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ এলাকাবাসী শোকে কাতর হয়ে পড়ছেন।

নাজিউলের মা জেবা বেগম অচেনা মানুষ দেখেই চিৎকার করে আহজারী করছেন। আর বলছেন, আমার কলিজার টুকরাকে এনে দাও। আমার ধনকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখতাম। আমার একমাত্র ভরসা ছিল আমার ছেলে। ভালো করে লেখাপড়া করবে, সেজন্য শহরে ভালো স্কুলে ভর্তি করালাম। মাসে মাসে এখন আমি কার কাছে টাকা পাঠাব। এখন আমি কাকে নিয়ে বেঁচে থাকব।

নাজিউলের এই ত্যাগে মৃত রাজিয়া বেগমের কোলে থাকা শিশুটি বেঁচে গেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে অনেকেই এই তাকে মানবিক কিশোর হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, নিহত গৃহবধূ রাজিয়া বেগমের স্বামী আনোয়ার হোসেন মাদকাসক্ত ও কর্মহীন। মোবাইল ফোনে প্রেম করে সুনামগঞ্জের রাজিয়াকে বিয়ে করে আনোয়ার। পেশা হিসেবে আনোয়ার হোসেন অন্যের রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন। আবার কিছু সময় দিনমজুরের কাজ করেন। তবে বেশিরভাগ সময়ে কাজ না করে আনোয়ার হোসেন প্রায়ই বাড়িতে বসে থাকতেন। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। শিশু সন্তানের খাবার ঠিকমতো দিতে পারত না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো। 

ঘটনার আগের রাতে স্বামীকে কাজ করতে বলায় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। সোমবার রাজিয়া বেগম সকালে তার শিশুকে কোলে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে কলেজছাত্র জোবায়ের মিয়া ওই গৃহবধূকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মারা যান। ওই গৃহবধূর কোলে থাকা ওই শিশু আবির হোসেনসহ তিনজনকে প্রথমে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত গৃহবধূ ও কলেজছাত্র জোবায়েরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওযার পথে তারা মারা যান। তবে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে আহত দেড় বছরের শিশু আবির হোসেন বর্তমানে শঙ্কা মুক্ত রয়েছে। পরিবারের লোকজন তার দেখভাল করছেন।

স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত রাজিয়া শিশু সন্তানের গায়ে হাত তুলত। এ নিয়ে ঘটনার আগের রাতে তাকে গালিগালাজ করি। এরপর রাতেই আমার স্ত্রী ঘর থেকে বের হয়ে যায়। সকালে আমি কাজে যাই। পরে সাড়ে ১১টার দিকে শুনতে পাই আমার স্ত্রী ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা গেছে। আমি এই ছোট শিশুকে নিয়ে তার মা ছাড়া কিভাবে বেঁচে থাকব।

নাজিউলের সহপাঠী জিয়াম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, জোবায়ের রহমান নাজিউল নিজের জীবন দিয়ে যে কাজটি করেছে তা ভোলার মতো না। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে তার স্বপ্ন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন। কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই তবুও তরতাজা জীবন দুটো বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিতে হলো।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এ এস এম রুহুল আমিন জানান, দেড় বছরে শিশু আবির হোসেন মাথায় ও পেটে কিছুটা আঘাত পেয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসায় শিশু আবির হোসেন শঙ্কামুক্ত রয়েছে।

এসব বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনায় সদর খানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর গৃহবধূর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরও খবর