প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি ভারী বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ,
তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং ক্যাম্পে নতুন শিশুর জন্মের
ফলে তাদের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি বলেন,
সবচেয়ে বড় কথা হলো রোহিঙ্গাদের অনেকেই মাদক ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা (রোহিঙ্গা
অভ্যন্তরীণ দল) একে অপরের সঙ্গে মারামারি ও হত্যা করছে। মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের
ফিরিয়ে নিতে হবে। খবর বাসসের।
গতকাল বুধবার
সন্ধ্যায় গণভবনে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে
এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল
করিম এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
এ সময় তাকেই
শুনসুকে বলেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের
টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপান বাংলাদেশকে সমর্থন করে। রোহিঙ্গাদের
টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাপান মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলতে পারে।
বৈঠকে শেখ হাসিনা
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ককে বিস্ময়কর উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান এ সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক
ক্রমবর্ধমান হারে বিকশিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পরপরই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুর্নগঠনে জাপানের অবদানের
কথা স্মরণ করেন।
তিনি বাংলাদেশের
উন্নয়ন প্রচেষ্টায় জাপানের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, তারা এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন
উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছে যার মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ি এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে
‘বাংলাদেশের
মহান বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
এ সময় জাপানের
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গর্ববোধ করে। জাপান বাংলাদেশকে
উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
তাকেই শুনসুকে
বলেন, পাঁচ বছর আগে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল
ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নে বিস্মিত হয়েছেন।
তিনি বলেন,
জাপান সরকার জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কর্তৃক ২০১৪ সালে চালু করা জাপান ও বাংলাদেশের ব্যাপক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য ঢাকা থেকে টোকিওর মধ্যে
ফ্লাইট পরিচালনার ফলে আগামী দিনে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।
এ সময় অ্যাম্বাসেডর
এ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।