বেতন ভাতা বৃদ্ধির
দাবিতে রংপুর থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল
৬টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকদের এ আন্দোলনের ফলে দুর্ভোগে
পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে শাহ ফতেহ আলী, নাবিল, এনা পরিবহন রংপুর কামারপাড়া ঢাকা
বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছে। এদিকে শ্রমিকদের কর্মবিরতি মটর শ্রমিক
ইউনিয়নের নয়, মটর মালিকদের ডাকা বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
পরিবহন শ্রমিকরা
জানান, নিত্য পণ্যের উর্ধ্বগতির বাজারে পরিবহন শ্রমিকদের আগের বেতন ভাতা প্রদান করা
হচ্ছে। ফলে একজন দিনমজুরের চেয়ে পরিবহন শ্রমিকরা কম বেতন পাচ্ছেন। এতে তাদের সংসার
চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। আসন্ন রমজানে নিত্য পণ্যের দাম দ্বিগুণবেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন
পরিবহন শ্রমিকরা। মালিক পক্ষকে একাধিকবার বলেও বেতন-ভাতা বাড়েনি। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার
সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায়
কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিকদের অলস সময় পার করতে দেখা গিয়েছে।
শ্যামলী পরিবহনের
বাসের সহকারী জনি মিয়া (৩৫) বলেন, কাউন্টার ম্যানেজার বলছে বাস চলাচল করবে না। তাই
বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছেড়ে যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে
আসছি। কিছু পরিবহনের মালিক তাদের কর্মচারীদের বেতন বাড়ালেও বেশির ভাগ মালিকই বাড়ায়নি।
আমাদের বাসের চালক একদিনে পান ১ হাজার ১০০ টাকা, বাসের সহকারী পান ৩৮০ টাকা, সুপার
ভাইজার পান ৪২০ টাকা। বাজারে নিত্য পণ্যের যে দাম,এ বেতন দিয়ে আমাদের সংসার চলে না।
মঙ্গলবার স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি চলাচল করবে না এটি সোমবারই মাইকিং করে জানানো হয়েছিল।
বাসযাত্রী ও
গার্মেন্টস কর্মী মামুন মিয়া (২৫) বলেন, রংপুরের পীরগাছার চৌধুরানী থেকে কামারপাড়া
ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এসেছি ঢাকা যাব বলে। কিন্তু এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজই
ঢাকায় ফিরতে না পারলে কাল অফিস করতে পারব না। তাই বাধ্য হয়ে অন্য বাসে বেশি ভাড়ায় যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে
জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদ বলেন, মটর শ্রমিক ইউনিয়ন কোন পরিবহন
ধর্মঘট ডাকেনি। জেলা মটর মালিক শ্রমিক সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান রাঙ্গাই বাস চলাচল
বন্ধ রাখতে বলেছেন। ফলে কিছু বাস ছাড়া অধিকাংশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গামী বাস
কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড ছেড়ে যায়নি। রমজানে জনদূর্ভোগ হোক এটা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন চায়
না।
মটর মালিক সমিতির
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফতাবুজ্জামান লিপন বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব জেলা
মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদ দিয়েছিলেন। মূলত তারই নির্দেশনায় বাস
শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বাস-ট্রাক ও ওনার্স
অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের মধ্যে বৈঠক চলছে।