আজঃ শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪
শিরোনাম

রিশাভকে শতরান করতে দিলেন না মিরাজ

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মিরপুর টেস্টের প্রথম সেশনে বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিল পান্ত-আয়ার জুটি। অবশেষে পান্তকে নার্ভাস ৯০ রানে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙলেন টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।

৯০ রানে নিয়ে স্নায়ু চাপ হয়তো পেয়ে বসেছিল রিশাভ পান্তকে। সেই চাপেই হয়তো ৯৩ রানে কট বিহাইন্ড হয়ে গেলেন ভারতীয় কিপার ব্যাটসম্যান।

অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম চার বল ডট খেলেন পান্ত। পরের বল জায়গা করে নিয়ে অফে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপার নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। ভাঙে ১৮২ বল স্থায়ী ১৫৯ রানের জুটি।

বাংলাদেশকে ২২৭ রানে থামানোর পর প্রথম দিনের শেষ বিকেলে বিনা উইকেটে ১৯ রান তুলেছিল ভারত। দ্বিতীয় দিনের খেলায় আজ ব্যাট করতে নামেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার লোকেশ রাহুল ও শুভমান গিল। কিন্তু দিনের শুরুটা ভালো করতে পারেননি এই দুই ব্যাটাররা। ১০ রানে লোকেশ রাহুল ও ২০ রানে শুভমান আউট হন।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে দারুণ খেলে যাচ্ছিলেন ভারতীয় দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা। কিন্তু ক্রিজে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি টাইগার স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ব্যক্তিগত ২৪ রানে তাইজুলের বলে মুমিনুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন পূজারা। ২৪ রানে ফেরেন কোহলিও।

৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খানিক চাপে ছিল ভারত। পঞ্চম উইকেটে সেই চাপ সামলে নেন রিশাভ পান্ত ও শ্রেয়াস আয়ার। দুজনই ব্যাট করতে থাকেন ওয়ানডে মেজাজে।  


আরও খবর
বৃষ্টিতে বন্ধ বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ

মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪




পাঁচ জেলায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব, নিহত ১০

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ জেলায় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ১০ জন নিহত ও কমপক্ষে ৩৩ জন আহত হয়েছেন এবং দুইজন নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি।

রোববার (৭ এপ্রিল) দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে এ তাণ্ডবলীলা ঘটে। ভোলার মনপুরা ও লালমোহন, পিরোজপুর, বাউফল, বাগেরহাট ও ঝালকাঠিতে এ ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়।

পিরোজপুর: পিরোজপুরে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঝড় শুরু হয়। এ ঝড়ে গাছচাপায় এক নারী ও ঝড়ে উড়ে গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। জেলার ওপর দিয়ে ১৫ মিনিট ঝড়ো গতিতে বাতাস বয়ে যায়। এতে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শত শত গাছ উপরে পড়ে কয়েকশত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পৌরসভার প্রায় সব সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

ভোলা: ভোলার মনপুরা ও লালমোহনে দুপুরের দিকে আকস্মিক ঝড় শুরু হয়। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় নিজ ঘরে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাতেও একজন মারা গেছেন। মনপুরার দুপুর ১২টা দিকে হওয় ঝড়ের তাণ্ডবে দাসের এলাকায় ছয় জেলেসহ একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। যাত্রীদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও ট্রলারটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

বাউফল: বাউফলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া ৩৫ মিনিট স্থায়ী ঝড়ে দুইজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে বাউফলে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতসহ ঝড় হয়েছে। এতে তেতুলিয়া নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

বাগেরহাট: বাগেরহাটে ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে অন্তত দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। 

নিউজ ট্যাগ: কালবৈশাখী ঝড়

আরও খবর



মঙ্গলবার যে ২৭ জেলার সব স্কুল-কলেজ বন্ধ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তাপপ্রবাহের কারণে আগামীকাল মঙ্গলবার দেশের ২৭টি জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সব জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে।

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ছুটি বাড়ানো হয়। এতে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে গতকাল রবিবার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী গতকাল সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলে।

তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় আজ দেশের ৫ জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এই নির্দেশনার বাইরে ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়।


আরও খবর



ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৩

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষের ঘটনায় আরও ২ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে ১১ জন নিহত হন। এরপর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরে অ্যাবলুম ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহতের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বেজিডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা তারা মোল্লার ছেলে রফিক মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমী বেগম (২৩), দুই ছেলে রুহান মোল্লা (৬) ও হাবিব মোল্লা (৩) এবং শেখর ইউনিয়নের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম। বাকিদের নাম এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা থেকে মাগুরা যাচ্ছিল। সকাল ৮টার দিকে কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় পৌঁছালে ঢাকাগামী একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। ওই পিকআপ ভ্যানটি ভাড়া করে কয়েকজন ঢাকায় যাচ্ছিলেন। এতে পিকআপ ভ্যানে থাকা ১১ জন যাত্রী ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। আরও পাঁচজন আহত রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, এই ঘটনায় জেলা প্রশাসন ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং আহতদের তিন লাখ টাকা দেওয়া হবে।

নিউজ ট্যাগ: ফরিদপুর

আরও খবর



মাথাপিছু ঋণ বেড়ে দেড় লাখ টাকা: সিপিডি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

গত তিন বছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখ টাকা। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, ফলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, আশির দশকে অনেক আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান দেশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছিল। সম্প্রতি এর বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে এ দেশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণের বড় বাধা এখন ঋণগুলোর শর্ত এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন।

আমরা যদি আশির দশকে ওপেকের সময় ঋণের সংকটের দিকে তাকাই, সেখানে দুটি পরিস্থিতি ছিল। একটি, লাতিন আমেরিকায় খুব বেশি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়া। তারা বিপদে পড়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণে, সেগুলো তাদের খুব সস্তায় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা একসময় গিয়ে ঋণসংকটে পড়েছিল। একই ঘটনা শ্রীলঙ্কার ঋণ সংকটের। শ্রীলঙ্কার অনেক ঋণ স্বল্পমেয়াদি। শ্রীলঙ্কার একই সময় অনেক আফ্রিকান দেশেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’

ড. রেহমান সোবহান বলেন, একইভাবে বাংলাদেশও স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে সংকটের পথেই আছে। এটা খুবই উল্লেখ করার মতো, এ ধরনের ঋণ এখন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের রপ্তানি আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো, তাই এ জায়গায় তেমন সংকট নেই।’

মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমাদের বিদেশি ঋণ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। আমরা এখন যদি সতর্ক না হই, তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সরকার যে সতর্ক তা আইএমএফের কাছে ৪.৭ বিলিয়নের জন্য যে গেল সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বিদেশি ঋণ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, ১৯৮০ সালের দিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিদেশি ঋণ নিয়ে এ ধরনের বড় সমস্যায় পড়েছিল। সাম্প্রতিক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রিস বড় উদাহরণ। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও ঘানার মতো দেশের উদাহরণ তো আছেই।’

আন্তর্জাতিকভাবে এ প্রভাব পড়ার বৈশ্বিক কারণগুলো হলো—কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্বে মালামাল ও সেবার চাহিদা কমে যাওয়া। দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কারণ—ঋণ ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, অনেক দেশ অদূরদর্শী ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছে, মুদ্রার ওঠানামাও অনেক দেশে হয়েছে। এসব কারণ অভ্যন্তরীণ।’

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত ও বেশি বিদেশি ঋণ নিয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়েছে। ঋণের চাপে অনেকে আছে, অনেকে খেলাপি হয়েছে।

উন্নয়নশীল এসব দেশের সরকারি ঋণ ২০১০ সালে জিডিপির তুলনায় ৩৫ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। এর মধ্যে একই সময় দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। এসব বিদেশি ঋণের মধ্যে ব্যক্তি খাতের ঋণও একইভাবে বেড়েছে। একই সময় ব্যক্তি খাতের ঋণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণার একটি অংশ তুলে ধরে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যেটি দেশগুলোর জিডিপির ৩৩ শতাংশ। পাবলিক অ্যান্ড পাবলিকলি গ্যারান্টেড (পিপিজি) ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

আইএমএফের সতর্কবাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এসব দেশকে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন বানিয়েছে। আমরা কি আরেকটি ঋণ সংকটের দিকে যাচ্ছি?

তার মতে, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে, যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা পাকলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

সিপিডি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮.৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরো কঠোর হচ্ছে।

বিশেষ করে জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থপাচারের সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বড় আকারের অনেক প্রকল্পই অতিমূল্যায়িত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আবার প্রকল্পের ভেতরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোনো না কোনো স্বার্থগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অন্যান্য দেশে জনগণের প্রাথমিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিয়ে ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে জনসাধারণের টাকা লুটের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠেছে। বিদেশি ঋণ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মাধ্যমেও ব্যক্তি খাতে পুঁজি গড়ে উঠেছে। এটা বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজি সঞ্চয়কারী অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক নেতারা যে আশায় এই প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন, সেটায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশি-বিদেশি ঋণ থেকে সরকারের দায় বৃদ্ধির প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের মাথাপিছু বিদেশি ঋণ তিন হাজার ১০ ডলার। আর অভ্যন্তরীণ উৎসর ঋণ মিলে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় আট হাজার ৫০ ডলারে। স্বাধীনতার এত বছর পরে সরকারের মাথাপিছু ঋণ এক লাখ টাকায় উঠেছিল অথচ তা পরের তিন বছরেই দেড়গুণ হয়ে গেছে।

কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করলেও প্রকৃত কারণ ভিন্ন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ঋণ পরিশোধের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালেও সরকারের আদায় হওয়া রাজস্বের ২৬ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হতো। অথচ এই হার এখন ৩৪ শতাংশে উঠেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ যাচ্ছে ২৮ শতাংশ আর বিদেশি ঋণ সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে অনেকেই দাবি করলেও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মোডি বা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস হিসেবে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমছে বলে দাবি করেন ড. দেবপ্রিয়। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতাসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ফলাফলের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ ঋণে নেওয়া মেগাপ্রকল্প প্রকৃত সুফল দিতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, বিনিয়োগ না বাড়লে প্রকল্পের ফলাফল পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৪ থেকে ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। গত দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হয়নি? এফডিআই কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে আছে? প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ২০২৩ সালের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে সরকারের হিসেবেই কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, ট্রেনিং বা কর্মে নেই এমন মানুষের হার বেড়েছে, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে। ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঋণ করে চলে।

বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করতে গিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি হয়েছে মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শিক্ষায় গত ১৫ বছরে কোনোভাবেই জিডিপির ২ শতাংশের বেশি এবং স্বাস্থ্যে ১ শতাংশের বেশি বরাদ্দ হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অবহেলার প্রতিফলন এই এসভিআরএস প্রতিবেদনেও এসেছে বলে তিনি জানান। এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথাযথ কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তিন মাস পর আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কেবিনেটের সাব কমিটি ক্রয় কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরও খবর



তানজানিয়ায় বন্যা: নিহত ৫৮

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় গত দুই সপ্তাহে বন্যায় ৫৮ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে। রবিবার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে দেশটির সরকার নিহতের এ সংখ্যা জানিয়েছে।

সরকারের মুখপাত্র মোভারে মাতিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে; যার ফলে ৫৮ জন নিহত হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে এ পর্যন্ত ১১ জন নিহত হয়েছে। এ বন্যায় অন্তত ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩১ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাতিনি জানান, তানজানিয়া ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধ করার জন্য ১৪টি বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দেশটির উত্তরাঞ্চলে একটি বাস বন্যার পানিতে পড়ে আট স্কুল শিক্ষার্থী ডুবে যায়। উদ্ধার অভিযানে এক স্বেচ্ছাসেবীও নিহত হয়েছেন।

অর্থনৈতিক রাজধানী দারুসসালাম থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে উপকূলীয় ও মোরোগোরো এলাকায় ৭৫ হাজারের বেশি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

পূর্ব আফ্রিকার অন্যান্য অংশেও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পূর্ব আফ্রিকার প্রতিবেশী দেশ কেনিয়ায় বন্যায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

মাত্র চার মাস আগে তানজানিয়ার উত্তরাঞ্চলে বন্যায় অন্তত ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

তানজানিয়ায় এপ্রিল মাস সবচেয়ে বেশি বর্ষামুখর থাকে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত এ মাসেই হয়। এ বছর এল নিনোর ঘটনা তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে; যা বিশ্বজুড়ে খরা ও বন্যা সৃষ্টি করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে চলতি মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিপাত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে।


আরও খবর