রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (২০ জুন)। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা চলবে ভোটগ্রহণ।
ইতোমধ্যে ভোটগ্রহণ উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
দুই সিটিতেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে
(ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটারদের সুবিধার জন্য ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ
ছুটিও।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
জানিয়েছেন, নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। এছাড়া ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন
ভবন থেকে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভোটের মাঠে থাকবে নিজস্ব পর্যবেক্ষক টিমও। ইসির
নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানিয়েছে, রাজশাহীতে ২ হাজার ৫শ’টি ও সিলেট সিটিতে
৩ হাজার ২০৪টি ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এক হাজার ৪৬৩টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে রাজশাহী
সিটিতে এবং ১ হাজার ৭৪৭টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে সিলেট সিটির ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করবে
কমিশন।
রাজশাহী সিটি ভোট:
রাজশাহী সিটিতে ১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার
১৫৩টি ভোটকক্ষে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
এরমধ্যে ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন পুরুষ, ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন নারী এবং ছয়জন হিজড়া ভোটার
রয়েছেন।
মেয়র পদে চারজন, ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর
পদে ১১১ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মো.
সাইফুল ইসলাম স্বপন, আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের
মো. মুরশিদ আলম এবং জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার।
ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ কেন্দ্রে
১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে
মোট ৩০টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডের একটি করে মোট ১০টি স্ট্রাইকিং
ফোর্স প্রতি থানায় একটি করে মোট ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি দুইটি সাধারণ
ওয়ার্ডের জন্য একটি করে মোট ১৬টি র্যাবের টিম ও পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য এক প্লাটুন
করে মোট সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও বুধবার পর্যন্ত ৩০ জন এক্সিকিউটিভ
ম্যাজিস্ট্রেট এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকবেন।
সিলেট সিটি ভোট:
সিলেট সিটিতে ১৯০টি ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার
৩৬৭টি ভোটকক্ষে ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।
এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৩৬ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭
জন এবং ছয়জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্বরূপকাঠিতে গ্রামীণ উন্নয়নে পর্যটন শীর্ষক কর্মশালা
ওই সিটিতে মেয়র পদে আটজন, ৪২টি সাধারণ
ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৯৪ জন এবং ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন।
মেয়রপ্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির মো.
নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান, আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান
চৌধুরী, জাকের পার্টির মো. জরিহুল আলম, স্বতন্ত্র মো. আব্দুল হানিফ, মো. ছালাহ উদ্দিন
রিমন, মো. শাহজাহান মিয়া এবং মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণের জন্য সাধারণ কেন্দ্রে
১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে
মোট ৪২টি মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডের একটি করে মোট ১৪টি স্ট্রাইকিং
ফোর্স প্রতি থানায় একটি করে মোট ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি দুইটি সাধারণ
ওয়ার্ডের জন্য একটি করে মোট ২২টি র্যাবের টিম ও পাঁচটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য এক প্লাটুন
করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও বুধবার পর্যন্ত ৪২ এক্সিকিউটিভ
ম্যাজিস্ট্রেট এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৪ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভোটের মাঠে থাকবেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা, সন্তানকে নিয়ে পলাতক স্বামী
এদিকে দুই সিটি নির্বাচন উপলক্ষে ৭২ ঘণ্টার
জন্য মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ভোটের দিন সীমিত থাকবে যন্ত্রচালিত
যান চলাচল। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সব ধরনের মিছিলের ওপরও।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান
আরও বলেন, তফশিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে বিধি-বিধান প্রতিপালন নিশ্চিত কল্পে আমাদের
অবস্থান কঠোর ছিল, আগের মতো রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপেই আমরা সুতীক্ষ্ণ নজর রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে
সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি।
এছাড়াও আমরা সরাসরি সিসি ক্যামেরায় এ নির্বাচন
ঢাকা থেকে পর্যবেক্ষণ করবো। নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও নির্বাচনোত্তর অনিয়ম, গোলযোগ
ও সহিংসতা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে সব প্রার্থী
সমান, সব দলও সমান। ভোটারদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরিতে আমরা বদ্ধপরিকর। সব অংশীজনের
সক্রিয় এবং আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।