শরীয়তপুরের
গোসাইরহাট উপজেলা সড়কের জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর সংলগ্ন স্থানে রাস্তার পাশের জায়গাটি
এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তাটি দিয়ে গার্লস্কুল, মাদ্রাসা, ইদিলপুর পাইলট
বিদ্যালয়সহ ১০-১৫ টি বেসরকারি স্কুল মাদ্রাসা, থানা, কলেজ, উপজেলা নির্বাহী অফিস, হাসপাতালসহ
প্রতিদিন প্রায় ৫০০টি আবাসিক বাড়িঘরের বসবাস করা সকল শ্রেণির লোকজনের যাতায়াতের জন্য
এই রাস্তাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ন রাস্তা হিসেব পরিচিত।
গোসাইরহাট পৌরসভার
ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) না থাকায় সড়কের পাশ ঘেঁষেই শহরের
সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।
প্রায় এক বছর
বেশি সময় ধরে সড়কের পাশে ময়লা ফেলতে ফেলতে স্থানটি ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এর দুর্গন্ধে
পাশ দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুরো এলাকা দূষিত করছে।
এ রাস্তায় প্রতিদিন
শত শত মানুষের চলাচল থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। এতে পরিবেশ দূষণসহ মানুষের
মধ্যে বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তার পাশে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে পৌরসভার ময়লার স্তূপ। আবর্জনার স্তূপে দুর্গন্ধের কারণে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে রোগ বালাই। দুর্গন্ধের স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে এলাকাটি। নবঘোষিত গোসাইরহাট ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও স্থায়ী ময়লা ফেলার ব্যবস্থা না হওয়ার ফলে পৌরবাসীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই থাকতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানিয়েও কোন কাজে আসেনি। পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এনে এর প্রতিকার চেয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা
যায়, দাশের জঙ্গল বাজারের পূর্ব এলাকায় ডাকবাংলোর রাস্তার উত্তর পাশ ঘেঁষেই ময়লার ভাগাড়।
তার পাশেই অবস্থিত পোস্ট অফিস বহু বাড়িঘর। চার পাশেই ঘনবসতি। সেই রাস্তায় স্কুল ও কলেজ
পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাসহ নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের।
দীর্ঘদিন ধরে
পৌর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক, হোটেল ও রেস্তোঁরার বর্জ্য ফেলায় এ সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার
ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এখান দিয়ে যাতায়াতকারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে
হচ্ছে।
ওই রাস্তায়
চলাচলকারী জয়নাল মিয়া নামের এক ভ্যান চালকসহ কয়েকজন বলেন, আমার সবসময় এই সড়ক দিয়ে চলাচল
করা লাগে। এই দুর্গন্ধে ভ্যান চালাইতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এক হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে
এই জায়গাটুকু পার হই। এই ময়লাগুলো যদি এখান থেকে সরানো হতো তাহলে আমাদের চলাচলে আর
কষ্ট হতো না।
পথচারী সজিব
হাওলাদার বলেন, রোদের সময় ময়লার দুর্গন্ধ আরো রেড়ে যায়। সে সময় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের
ক্লাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। এছাড়া এ থেকে মশা-মাছির উপদ্রব্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে মাদ্রাসার
আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমির হোসেন ও সুমন সাহা বলেন, আমার বাড়ির পাশেই পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। এটার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। স্থানীয়রা প্রতিনিয়তই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। আমরা পৌরসভা অফিসে অবহিত করা হলেও তাতেও কোন লাভ হয়নি। আমরা অতি দ্রুতই এর একটা সমাধান চাই।
গোসাইরহাট উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা.হাফিজুর রহমান বলেন, এসব ময়লা আবর্জনা জনস্বাস্থ্য এর জন্য
মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব থেকে বায়ুদূষণসহ পরিবেশ মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ এবং বিপর্যয় নেমে
আসতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা শ্বাসকষ্টে দ্রুত আক্রান্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে গোসাইরহাট
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আলিম মোল্লা বলেন, পৌরসভার আধুনিক ডাম্পিং ষ্টেশনের
জন্য যায়গা খুঁজা হচ্ছে, পেলেই নির্মান করা হবে ফলে ময়লা সেখানে ফেলা হবে ।
জানতে চাইলে
গোসাইরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল আউয়াল সরদার বলেন, পৌরসভা কর্তৃক ময়লা ফেলা নির্ধারিত
স্থান নাই তাই এখানে মালা ফেলা হচ্ছে। যায়গা পেলে নির্ধারিত ডাস্টবিন (ডাম্পিং স্টেশন)
নির্মাণ করা হলে সেখানে ময়লা ফেলা হবে।