রাজবাড়ী জেলার মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কগুলো বালুবাহী ও মাটিভর্তি ট্রাকের দখলে থাকার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হালকা বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বেশিভাগ মোটরসাইকেল চালক দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে।
রবিবার সরেজমিন রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলায় প্রায় শতাধিক অনুমতি-বিনাঅনুমতিতে ইটভাটা চলছে। এসকল ইটভাটাগুলো মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ঘেষে গড়ে উঠেছে। ইটভাটাগুলোতে অবাদে মাটি নেওয়ার কারণে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে এখন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে। সারাবছর ধুলা-বালিতে এই সড়ক দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পরে। আবার একটু বৃষ্টিতে ঘটে দুর্ঘটনা। এ যেন উভয় সংকট হয়ে পরেছে।
শনিবার দুপুরে এক মোটরসাইকেল চালক রাজবাড়ী শহর থেকে গোয়ালন্দ বাজারে আসার পথে খানখানাপুর এলাকায় পরে যায়। এসময় মোটরসাইকেলে থাকা দুইজন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত মোটরসাইকেল চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটু বৃষ্টিতে এই সড়কে চলাচল করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এই রকম নিশ্চিত দুর্ঘটনা শুধু ইট ভাটাতে মাটি নেওয়ার কারণে হয়।
গড়ে উঠা ইট-ভাটার পাশে অবস্থিত একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইট ভাটার কারণে আমরা স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে পারি না। আবাসিক এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটাগুলো। তবে প্রশাসনিক থাকে নিরব। তিনি বলেন, আজ একটু বৃষ্টিতে শতশত মটরসাইকেল চালক দুর্ঘটনায় পরে। রাস্তায় কাঁদা না থাকলে এমন দুর্ঘটনায় কেউ পরতো না। সুতরাং সর্বসাধারণের স্বার্থে নিয়ম মেনে ইটভাটাগুলো চলা উচিত।
আবু সাঈদ মন্ডল নামের এক ব্যক্তি বলেন, অফিস করার কারণে প্রতিদিন ৫০ কিলোমিটার মটরসাইকেলে চলাচল করতে হয়। তবে সারাবছর ধুলা-বালিতে দুর্ভোগ হয়। আবার বৃষ্টিতে চলাচল করা সম্ভব হয় না। এ যেন উভয় সংকট হয়ে উঠেছে। এটা নিয়ন্ত্রনে আনা প্রয়োজন।
যাত্রীবাহী বাস রয়েল পরিবহনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. রফিক মুন্সী বলেন, খানখানাপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক ইট-ভাটা। যে কারণে রাস্তায় পিঁজ দেখা যায় না। শুধু মাটি। একটু বৃষ্টিতে এই সড়কে যানবাহন চলাচল করা সম্ভব হয় না। ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। একটু গতিতে চালাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে। তিনি বলেন, এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া প্রয়োজন।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওয়াজিস রহমান বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে আমি আইন শৃংখলা মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছি। জেলা সমন্বয় মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছি। এই বিষয়টি নিয়ে শুধু আমি নয় বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যানগন উপস্থাপন করেছেন। আমি ইট ভাটার মালিক সমিতির চিঠি দিয়েছি। তবুও কেন বন্ধ হচ্ছে না? তিনি আরোও বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে অবশ্যই ইটভাটার মালিকদের এমন কাজ বন্ধ করতে হবে।
আঞ্জলিক সড়কের পাশে গঠে উঠা ইট ভাটার ব্যাপারে রাজবাড়ী এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলামের সাথে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিফ করেনি।