রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) সম্প্রতি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষের সুষ্ঠু বিচার ও ছাত্র-ছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা এবং দায়ীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় রাকসু
আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে হাসিল করার জন্য
সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে এ সংঘর্ষে ব্যবহার করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে সংঘর্ষের পিছনের
দল গোষ্ঠী বা ভোটের রাজনীতি কাজ করেছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে। প্রশাসনের কাছে
সকল তথ্য ছিলো কিন্তু তারা তা দমানোর চেষ্টা করেনি ফলে আজকে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী
চোখ হারাতে বসেছে। এ সংঘর্ষে সকল আহত শিক্ষার্থীর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিতে
হবে এবং তাদের পরিবারের পাশে দাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল রয়েছে সেখানে বরাদ্দ
পেলেও শিক্ষার্থীরা তাদের আসনে উঠতে পারে না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সিট দখল করে আছে।
আমরা চাই ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অতিদ্রুত রাকসু কার্যকর করতে হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, বিনোদপুরের এতো বড় সংঘর্ষের ঘটনায়
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কারা ও স্থানীয়দের মধ্যে কারা জড়িত ছিলো তাদেরকে এখনো শনাক্ত করতে
পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীর মাধ্যমে এ সংঘর্ষের
সূত্রপাত এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ ঘটনা বড় রুপ দিয়ে তারা আড়ালে চলে গেছে। এসব ঘটনার
সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান তিনি।
অর্থনীতি বিভাগের
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, গণতন্ত্র ও প্রতিনিধিত্বশীল এ দুটো না থাকায় শিক্ষার্থীরা
শিক্ষকদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। এ সম্পর্কের অবনতির ফলেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও তেমন কোনো সুষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যকার সম্পর্কের কোন উন্নতি হয়নি।
প্রশাসনে যারা আছে তারা শিক্ষার্থীদের আবেগ ও অনুভূতিকে বুঝতে চেষ্টা করেননি। আগামী
প্রজন্ম এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসবে কিনা সেটি এখন চিন্তার বিষয়।
পদার্থ বিজ্ঞান
বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, আজকে মানববন্ধনের উপস্থিতি স্পষ্ট করে বলে
দেয় আমাদের মাঝে যে সংঘর্ষ ঘটছে তা নিয়ে আমরা বিচলিত না। যখন ঘটনা ঘটে তখন তীব্র উত্তেজনা
উগ্র কর্মকাণ্ড চালায় এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। সেই উত্তেজনাশ বহু শিক্ষার্থী
আহত হবে আমরা সেগুলোয় বারবার দেখবো। আমাদের মাঝে সুশিক্ষা না থাকলে এই মানসিকতা জন্ম
হতো না। এ সংঘর্ষের সময় মেয়র থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি, প্রক্টর দায়িত্বশীল
আচরণ দেখাতে ব্যর্থ। অবশ্যই এই ব্যর্থতার দ্বায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে। শিক্ষকের পবিত্র
দায়িত্ব যে পালন করতে পারে না সে শিক্ষক নামে কলঙ্ক।
এসময় উপস্থিত
ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ
খানসহ প্রমুখ।