রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিল এবং ফেল করা পরীক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। আলোচনা শেষে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান বলেন, শিক্ষকদের অযোগ্য ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। পাস মার্ক ৪০ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হয়েছে কোন যৌক্তিতে তা আমাদের জানা প্রয়োজন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কি তাহলে শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাতে হবে? পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য এ কোটা সিস্টেম তাহলে কি আমরা ভেবে নিবো আমাদের শিক্ষরাও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী।
তিনি আরও বলেন, আজকে যে ক্ষমতার বলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে একই ক্ষমতা বলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী হবেন। বিশ্ববিদ্যালয় দিনদিন সংকীর্ণের দিকে হাটছে। আগের উপাচার্য ৪১ জন শিক্ষার্থীকে পোষ্য কোটায় ভর্তি করালেও বর্তমান উপাচার্য তা বৃদ্ধি করে ৭১ জনে রূপান্তর করেছেন। আমরা পোষ্য কোটা বাতিল চাই এবং ফেল করা ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল চাই।
নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, ভর্তি জালিয়াতি করে যে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম তদন্ত করছে না। তাহলে শিক্ষার্থীরা কি ধরে নিবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত আছে? রাবি ক্যাম্পাস পোষ্য কোটায় নামে যে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার কাঠামোগত পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিলসহ পোষ্য কোটা বাতিল করা হোক। আমরা অসাংবিধানিক পোষ্যকোটা বাতিল চাই। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এভাবে অকৃতকার্য ফেল করা শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রশাসন মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যায় করছে। কোটা যদি দরকার হয়, তবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে শ্রমিক, মজুর ও কৃষক পরিবারের সন্তানদের দিতে হবে। পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পোষ্য কোটার মাধ্যমে অকৃতকার্যদের ভর্তি করায় সেটি আমাদের অজানা।
রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরি করছে বর্তমান প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের ট্যাক্সে চলে কারো পৈতৃক সম্পত্তি না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৬০ মার্ক পেয়েও চান্স পাচ্ছে না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অযোগ্য ছেলে মেয়েরা যারা ফেল করেও পৈতৃক কোটা নামে পোষ্য কোটায় ভালো সাবজেক্টে চান্স পেয়ে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারী হচ্ছেন। আমরা পোষ্য কোটা নামে এমন প্রহসন আর চাইনা। আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ ধারাবাহিক কর্মসূচি চলমান থাকবে।