আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

পুত্রবধুর কোলে চড়ে ভোট দিতে এসে ঘুরে গেলেন শতোর্ধ মা

প্রকাশিত:সোমবার ৩১ জানুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ৩১ জানুয়ারী ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
Image

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

ষষ্ঠম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ছেলের বউয়ের কোলো চড়ে ভোট দিতে এলেন মতিজন বেওয়া(১৫০) নামের এক বৃদ্ধা। তিনি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের ফলেমারী ঠকেরহাট গ্রামের মৃত আয়োজুদ্দিনের স্ত্রী।

মতিজন বেওয়া চিলমারী উপজেলার থানা হাট ইউনিয়নের বজরা তবকপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর ও ছবি ঠিক থাকলেও হাতের ছাপ না মেলায় ভোট দেয়া হলো না মতিজন বেওয়ার।


মতিজন বেওয়া ছেলের বউ আমেনা বেগম বলেন, আমার শ্বাশুড়ি অনেক বয়স হয়েছে তিনি হাঁটতে পারে না। তাই কোলে করে ভোট দিতে নিয়ে আসলাম। অনেকক্ষন চেষ্টা করার পরেও হাতের ছাপে মিল না। তাই চলে যাচ্ছি পরে আসতে বলছে।

বজরাতবকপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব থাকা প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, ইভিএম মেশিনে ভোট হচ্ছে। মতিজন বেওয়ার ছবি স্কীনে দেখা গেলেও হাতের ছাপ না থাকায় আপাতত ভোট নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা উনাকে ৩টার দিকে ডাকলাম। শুধু হাতের আঙ্গুলের রেখার ছাপ মিলছে না এমন দু একজন আছে তাদের ভোট নিতে ঘন্টাখানেক পরে ডেকেছি। ওরা আসতে চাইছে।

উল্লেখ্য কুড়িগ্রামে ৬ষ্ঠ ধাপে চিলমারী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে উৎসব মুখর পরিবেশে ইভিএম এ মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল থেকে লাইনে দাড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি।

এদিকে দুর্গম চরাঞ্চলের এবারই প্রথম ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হওয়ায় ভোট গ্রহণে চলছে ধীর গতিতে।

নির্বাচনে চিলমারী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যানপদে ৩২ জন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যানপদে ১৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।

এই ৮ ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে এক লাখ ৬০হাজার ৬শ জন। এখন পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।


আরও খবর



নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরও ৫০ বিজিপি সদস্যের অনুপ্রবেশ

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমান সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) প্রায় ৫০ জন সদস্য। বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়া জানায়, গত কয়েক দিন ধরে দুই-একজন করে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনা সদস্য প্রবেশ করছিল। তবে আজ সকাল থেকে বিভিন্ন সময় ১৮ জন অনুপ্রবেশ করে। আর রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরকান আর্মির সঙ্গে ওই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেশ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির একপর্যায়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) প্রায় ৫০ সদস্য বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে।

এ নিয়ে গত কয়েকদিনে মিয়ারমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনা সদস্য মিলে প্রায় ৮০ জনের মত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ১৮ সদস্য পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মঙ্গলবার সকালে রেজু আমতলীপাড়া সীমান্ত দিয়ে ২ জন এবং জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশে ঢুকেছেন। এরপর দুপুরে বাইশফাড়ি সীমান্ত দিয়ে আসেন আরও ১ জন প্রবেশ করে।

সর্বশেষ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জমছড়ি সীমান্ত দিয়ে আরও ৫ জন ঢোকেন। এ ১৮ জনের মধ্যে বিজিপির ছাড়াও সেনা সদস্য রয়েছেন। আজ রাতে আরও প্রায় ৫০ জনের মত সদস্য নতুন করে অনুপ্রবেশ করে।

তবে কোনো বাহিনীর কত জন সদস্য তা এখন বলা যাচ্ছে না। এদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নিয়ে বিজিবি তাদের হেফাজতে নিয়েছে। এখন নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১১ বিজিবির হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


আরও খবর



ইতিকাফের সময় গোসল ফরজ হলে করণীয়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

ইতিকাফ বলা হয়, বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়।

ইতিকাফের মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভি রহ. বলেন, মসজিদে ইতিকাফ হচ্ছে হৃদয়ের প্রশান্তি, আত্মার পবিত্রতা ও চিত্তের নিষ্কলুষতা; চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও বিশুদ্ধতা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)

মদিনায় অবস্থানকালে রাসূলুল্লাহ সা. প্রতিবছরই ইতিকাফ পালন করেছেন। শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও রমজানে তিনি ইতিকাফ ছাড়েননি। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. প্রতি রমজানে ১০ দিন ইতিকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফে কাটান। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

ইতিকাফের সময় দুনিয়াবি সব কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হয়। এ সময় প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে কারো যদি স্বপ্ন দোষের কারণে গোসল ফরজ হয় তাহলে তার করণীয় বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো

ইতিকাফের সময় কারো গোসল ফরজ হলে এমন ব্যক্তি তাৎক্ষণিক তায়াম্মুম করে মসজিদ থেকে বের হয়ে গোসল করে নেবেন। আর যদি তায়াম্মুম করার মত কোনো কিছু না পায় তাহলে দ্রুত মসজিদ থেকে বের হয়ে গোসল করে আসবে। মসজিদের বাইরে গোসল ছাড়া অন্য কোনো কাজ বা বিষয়ে সামান্য সময়ও ব্যয় করা যাবে না। (রদ্দুল মুহতার ১/৪১০;)

নিউজ ট্যাগ: ইতিকাফ

আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




ছাত্রলীগ নেতার আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস, কমিটি বিলুপ্ত

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
Image

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:

বরগুনার তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেছে জেলা ছাত্রলীগ।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরানের যৌথ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়টি উল্লেখ না করে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে।

জানা যায়, গত দুই তিন দিন আগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়। ভিডিওটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এক মিনিট ৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নারীর সঙ্গে মিঠুকে অন্তরঙ্গ সময় কাটাতে দেখা যায়। এই ভিডিওটি ফাঁসের পরে উপজেলা ছাত্রলীগের ভেতরে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এর জেরেই শেষমেশ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এর আগে, গত গত ১২ এপ্রিল উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া তালতলী থানায় ওই নারীসহ দুই জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বর্তমানে জেল-হাজতে রয়েছেন ওই নারী। ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল আবেদীন মিঠু ওই মামলায় ২নং সাক্ষী।

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সংগঠনকে গতিশীল করতে মেয়াদোত্তীর্ণ তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। দ্রুত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে।


আরও খবর



এক বছরে চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ কৃষক

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে দেশ। তবে দেশের খাদ্যের জোগানদাতা কৃষকই এখন সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল ২৬.৫ শতাংশ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হিসেবেও সামনে আসছে কৃষি। এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণে গত এক বছরে কৃষি পেশা ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ মানুষ।

কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের কৃষকরা উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও নিজের জন্য কিছুই রাখতে পারেন না। এমনকি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে উৎপাদিত ফসল মাঠেই বিক্রি করতে বাধ্য হন। পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে কৃষক নিজে যে খাদ্য ফলান, একটি পর্যায়ে গিয়ে তিনি তা-ই বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিবিএসের খাদ্য নিরাপত্তা পরিসংখ্যান ২০২৩-এ বলা হয়েছে, পেশাগত জায়গায় শুধু কৃষির ওপর নির্ভরশীল পরিবারের মধ্যে গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২৬.৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক-চতুর্থাংশেরও বেশি কৃষক পরিবার নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সংকটে রয়েছেন। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অন্য পেশাগুলোর ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কৃষির ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোর চেয়ে অনেক কম। যারা শিল্প খাতে কাজ করেন তাদের খাবারের বিপদ সব পেশার মধ্যে সবচেয়ে কম।

শিল্পের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ১৬.৬৪ শতাংশ। সেবা খাতের ওপর নির্ভরশীলদের ক্ষেত্রে তা ২০.২৮ শতাংশ, প্রবাসী আয় গ্রহণকারী পরিবারের ২০.০৩ শতাংশ, অন্য পেশার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২১.৫৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে দেশের গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ২১.৯২ শতাংশ। আর চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ০.৮৩ শতাংশ।

বিবিএসের শ্রমশক্তি জরিপের ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কৃষিকাজ ছেড়েছেন ১৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ।

বিভিন্ন হতাশার কারণে তারা এ পেশাই ছেড়ে দিয়েছেন। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, আয়ের বৈষম্য, যান্ত্রিকীকরণের কারণে কাজের ক্ষেত্র কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে কৃষি পেশা ছাড়ছে মানুষ। অনেক কৃষকই এখন নিজের দেশে চাষ করার বদলে বিদেশে গিয়ে অন্যের জন্য ফসল ফলাচ্ছে। বর্তমানে বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশই যাচ্ছেন কৃষিকাজে।

শ্রমশক্তি জরিপ (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তথ্য অনুযায়ী, কৃষি পেশায় যুক্ত কর্মী তিন কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষেও সংখ্যাটি ছিল তিন কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার।

কৃষকদের নিজের পেশা ছেড়ে দেওয়ার প্রভাব পড়েছে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে। বিবিএস এখন জিডিপির হিসাব প্রতি প্রান্তিকেই দিয়ে থাকে। সর্বশেষ চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশের জিডিপি দাঁড়ায় ৬.০৭ শতাংশ। এ প্রান্তিকে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি এতটা কমেছে যে দেশের খাদ্য উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ০.৮৪ শতাংশ। অথচ এর আগের অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই প্রান্তিকে দেশের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ২.০৭ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৯৬ শতাংশ। অর্থাৎ কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই ধারাবাহিকভাবে কৃষি খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমছে। ফলে খাদ্যপণ্যের আমদানিনির্ভরতা আরো বাড়ছে।

কৃষকদের এত বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষকরা বিশেষ করে এখন যে উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য এসেছে সেগুলো উৎপাদন করে বিক্রি করে ফেলেন। তারা নিজের খাবারের জন্য যা রাখেন সেগুলো খুবই সামান্য, অপুষ্টিকর। কাজেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তাদেরই বেশি হবে। যেমনতারা দুধ বিক্রি করে ফেলেন, নিজের জন্য রাখেন না। দুধ পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় খাবার হওয়া সত্ত্বেও নিজের জন্য রাখেন না। তারা দুধ বিক্রি করে খাদ্য, কাপড়সহ অন্য কিছু কেনেন।

খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় কম। সে হিসাবে তারা মাছ-মাংস কিনে খেতে পারেন না। তারা যেসব শাক-সবজি খান সেগুলোও একেবারেই নিম্নমানের, সব বিক্রি করার পর যা থাকে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পুষ্টি নিয়ে তাদের শিক্ষা বা সচেতনতা কম। সে জন্যও তাদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেশি।

দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়লেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা যে রয়েছে তা সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন কৃষিমন্ত্রী আবদুস শহীদ নিজে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ফসল সংগ্রহের পর বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৩০ শতাংশ ফসল ও খাদ্য নষ্ট এবং অপচয় হয়। খাদ্য নষ্ট হওয়া ও অপচয় কমাতে পারলে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে।


আরও খবর



ইফতার পার্টি না করে নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনীতিতে আসে চরম ধাক্কা। যার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমরা এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেছি। আমাদের সরকারি কর্মকর্তা এবং দলীয় নেতাদের বলেছি, ইফতার পার্টি না করে নিম্নআয়ের মানুষকে সহযোগিতা করতে। ইফতার পার্টি করে খাওয়া বড় কথা না, মানুষকে দেওয়াই বড় কথা। আমরা সেটাই করছি।

সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্বউদ্যোগে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন, তাদের পুরস্কৃত করাই সব থেকে বড় কথা। এই পুরস্কার শুধু পুরস্কার নয়, আরও অনেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে আগ্রহী হবে, সেটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা দেশের বিভিন্ন স্তরে মানুষের কল্যাণে কাজ করা এমন আরও লোকদের বের করে পুরস্কৃত করতে চাই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব লক্ষ্য স্থির করে আমরা আগাচ্ছি। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। স্বাধীণতার মাসে এটাই আমাদের প্রত্যয়। স্বাধীনতার মাসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, গণহত্যায় জড়িতদের প্রতি ঘৃণা জানাই। আর যেনো এরকম না হয়। এখনও ফিলিস্তিতে গণহত্যা চলছে, আমরা এটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা চাই এই গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের ভয়াবহতা কেমন আমরা জানি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি করায় অনেক কষ্ট করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাবার কাছ থেকে তার স্বপ্ন জনতাম বলে সে আলোকে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। আমরা বাংলাদেশের সে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, বাংলাদেশে ভাগ্য পরিবর্তনে। এখানে কেউ ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না। সবাই খাদ্য, চিকিৎসা পাবে, সেই ব্যবস্থা করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা দেশে এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছে, আমরা বিজয়ের কথা বলতে পারিনি। মু্ক্তিযোদ্ধা নিজের পরিচয় দিতে পারেনি। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। একদিকে খুনি, আরেকদিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজত্ব ছিল। জাতির পিতা চেয়েছিলেন, একটি স্বাধীন জাতি। যে জাতি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ ভুখণ্ড পাবে। তিনি এজন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি অল্প সময় পেয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনি একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। এটা এত সহজ ছিল না। কিন্তু জাতির পিতা শেখ মুজিবের মতো নেতৃত্ব ছিল বলে সম্ভব হয়েছে। তিনি মাত্র তিন বছরের মধ্যেই দেশকে স্বল্পোন্নোত দেশের স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ঘুনে ধরা সমাজ তিনি ঢেলে সাজাবেন। তাই করেছেন। কিন্তু সেই সময়ই আসল আঘাত। স্বপরিবারে তাকে জীবন দিতে হলো। দুর্ভাগ্য আমাদের।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় এতে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিচারপতি, জাতীয় সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী এবং দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিতে পুরস্কার পাওয়া মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান প্রতিক্রিয়া জানান।

এবার স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তিনজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একজন, চিকিৎসাবিদ্যায় একজন, সংস্কৃতিতে একজন, ক্রীড়ায় একজন এবং সমাজসেবায় তিনজনকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ এ পদক দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন কাজী আব্দুস সাত্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট সার্জেন্ট মো. ফজলুল হক (মরণোত্তর) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবু নঈম মো. নজিব উদ্দীন খাঁন (খুররম) (মরণোত্তর)।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে ড. মোবারক আহমদ খান, চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান এবং ক্রীড়ায় ফিরোজা খাতুন, সমাজসেবা/জনসেবায় অরন্য চিরান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোল্লা ওবায়েদুল্লাহ বাকী এবং এস এম আব্রাহাম লিংকন পুরস্কার পেয়েছেন।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।


আরও খবর