
মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের । গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা এই প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের নিন্দা ও প্রতিবাদ
গতকাল বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের এক বিবৃতিতে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য। কিন্তু আমরা মনে করি গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন, স্বাধীন সাংবাদিকতা নীতিমালা এবং বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিপন্থি ও অপরাধমূলক। সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলো যেভাবে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন করে রাষ্ট্র এবং জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, অবশ্যই পত্রিকাটির যে কোনো সংবাদ পরিবেশনের অধিকার আছে কিন্তু সে সংবাদ যদি হয় মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক তা অবশ্যই সাংবাদিকতা নীতিমালার পরিপন্থি নিন্দনীয় ও অপরাধ মূলক কাজ। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট মামলা হতে পারে তবে একজন সাংবাদিককে রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তুলে নেয়াটাও সমর্থনযোগ্য নয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা থেকে সবাইকে বিরত থাকার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতারা হলেন- বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন ও সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ তালুকদার।
বিবৃতিতে বলা হয়, উল্লেখিত প্রতিবেদনটিতে মূলত একজন শিশুর ছবির নিচে ক্যাপশনের পরিবর্তে একজন দিনমজুরের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে, যে বক্তব্যে দেশের স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাপশনে একজন দিনমজুরের বক্তব্য হিসেবে ওই মন্তব্য প্রকাশ করা হলেও ছবিতে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দেখা যাচ্ছে না। অন্য একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে ওই শিশুকে তার দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে প্রলুব্ধ করে ছবিটি তোলা হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে একাধিক পক্ষ থাকলেও সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের বক্তব্য না নেয়া, অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া এবং অভিভাবকের অনুপস্থিতি অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ছবির তোলা কিংবা তার বক্তব্য ধারণ করা সংবাদপত্রের নীতিমালা পরিপন্থি। একজনের ছবির সঙ্গে আরেকজনের উদ্ধৃতি প্রকাশ ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর ছবি ও বক্তব্য প্রকাশ পাঠকের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। তারা বলেন, এ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বাসন্তী নামের একজনকে জাল পরিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ওই বাসন্তীকাণ্ড যে দেশে-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সাজানো হয়েছিল তা পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সংকট মোকাবিলা করে যে মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, সেই মুহূর্তে দেশের একটি জাতীয় দৈনিক সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অপচেষ্টা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং সেই সঙ্গে ওই গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।