অল্পদিনেই শতকোটি টাকা ও স্বর্ণের পুতুল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। জিনের বাদশা সেজে এ রকম প্রতারণা করে হয়েছেন কোটি টাকার মালিক। প্রতিবন্ধী হওয়ায় সব সময় ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে। অবশেষে এক ভুক্তভোগীর মামলায় পুলিশ কথিত জিনের বাদশা বাবুলকে গ্রেপ্তার করে।
এ রকম ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কবীর ভোলসোমা গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে বাবুল মিয়া (৪৫)। গত প্রায় ১০ বছর আগে এক দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে দুই পা ও ডান হাতে পঁচন ধরে। পরে তাকে বাঁচাতে চিকিৎসক দুই পা ও হাতের কবজি কেটে ফেলেন। এ অবস্থায় জীবিকা নির্বাহ করতে প্রথমে বাড়ির পাশে একটি পান দোকান দিলেও বেশি আয়ের আশায় কবিরাজি শুরু করেন। এতে আশানুরুপ কোনো ফল না পেয়ে ঘরের মধ্যে জিনের বাদশা সেজে আস্তানা গড়ে তোলেন। জিন নামিয়ে মানুষকে অল্প দিনেই ধনী বানানোর প্রচারণা শুরু করেন। সাধারণ মানুষ তার এই ফাঁদে পড়ে যায়। নাম হয় ল্যাংড়া জিনের বাদশা। স্বর্ণের পুতুল ও মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দিতে তার নিজস্ব লোক দিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে থাকেন।
সম্প্রতি ধোবাউড়া উপজেলার কিতাব আলীর ছেলে শওকত আলী তার ফাঁদে পড়ে যান। এক পর্যায়ে তাকে দ্রুত এক শ ২০ কোটি টাকা ও স্বর্ণের বেশ কয়েকটি পুতুল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। সপ্তাহ গড়িয়ে মাস গেলেও টাকা বা স্বর্ণ না পাওয়ায় জিনের বাদশা ল্যাংড়া বাবুলের বাড়িতে এসে অবস্থান নেন শওকত। প্রথমে গ্রামের লোকজনকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বাবুলকে গ্রেপ্তার করে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পীরজাদা মোস্তাছিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কথিত জিনের বাদশা বাবুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।