মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পৃথিবীর বাইরে প্রথম মঙ্গলগ্রহে ইনজেনুইটি নামে একটি হেলিকপ্টার
পাঠিয়েছিল। গ্রহটিতে প্রায় ৩ বছর কাজ করার পর গত ১৮ জানুয়ারি মঙ্গলগ্রহের একটি অঞ্চলে
এটি বিধ্বস্ত হয়েছে। নাসা হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিজ্ঞান
বিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হেলিকপ্টারটি
মূলত বাক্স আকৃতির এক বিশেষ ধরনের ড্রোন। এর কার্বন ফাইবারে তৈরি এর পাখাগুলোর দৈর্ঘ্য
১ দশমিক ২ মিটার। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি, অন্যগ্রহের হালকা
বায়ুমণ্ডলে চলার উপযোগী করে পরীক্ষামূলকভাবে এটিকে তৈরি করেছিল। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি
নাসার তৈরি পারসিভিয়ারেন্স মহাকাশের সঙ্গে এই হেলিকপ্টারটিকে মঙ্গলে পাঠানো হয়েছিল।
মূলত মঙ্গল
গ্রহের জেজেরো খাদ বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণার জন্য এই ইনজেনুইটিকে পাঠানো হয়েছিল। অবশেষে
প্রায় ৩ বছর ধরে কাজ করার পর গত ১৮ জানুয়ারি ইনজেনুইটি জেজেরো খাঁদের কাছেই বিধ্বস্ত
হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগের প্রধান লোরি গ্লেজ বলেছেন,
‘ভেঙে
পড়ার মাধ্যমে ইনজেনুইটি আমাদের (মঙ্গলগ্রহে) আকাশপথে চলাচলের যে নতুন ডাইমেনশন তৈরি
হয়েছিল তা একেবারে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করে দিয়েছে।’
নাসা জানিয়েছে,
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে ইনজেনুইটির মাত্র পাঁচবার ফ্লাই করার কথা ছিল। কিন্তু ২০২১
সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৭২ বার উড্ডয়ন করেছে এবং এটি লাল গ্রহে অন্তত
১৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছিল।
নাসা জানিয়েছে
সম্ভবত হেলিকপ্টারটির ব্লেড মাটিতে আঘাত করায় সেটি বিধ্বস্ত হয়েছে। মজার ব্যাপার হলো
বিধ্বস্ত হওয়ার আগে হেলিকপ্টারটি নিচের মাটির ছবি তুলেছে এবং তাতে হেলিকপ্টারটি একটি
ব্লেডের ছায়া দেখা গেছে কিন্তু সেই ব্লেড বা পাখাটির ছায়ায় ব্লেডটি অন্তত এক-চতুর্থাংশ
দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, হেলিকপ্টারটি এখনো পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে
তবে আপাতত এটি আর উড়বে না।