করোনা কিংবা যুদ্ধের অজুহাতে পণ্যের মূল্য ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়ালে, সংকট না থাকলেও সংকট সৃষ্টি করলে সেই অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা গত কয়েকদিন ধরে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলছেন। করোনা এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে সরকার পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে এবং একইসাথে যে অসাধু ব্যবসায়ীরা কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারণ কোনো দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া কোনো সৎ ব্যবসায়ীর কাজ নয়।
‘আজকের দিনে কেউ যদি কাউকে বাসি ভাত দেয়, তাহলে সেই ভাত তার মুখের ওপর ছুঁড়ে মারার সম্ভাবনা আছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা বলছেন দেশে না কি নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে, এটি তিনি কোথায় অনুসন্ধান করে পেলেন, সেটা আমার প্রশ্ন। আজকে বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে থাকে না। সন্ধ্যার পরে কিংবা ভর দুপুরে ঢাকা বা অন্য শহরের অলিতে গলিতে কিংবা গ্রাম গ্রামান্তরে ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দাও’ ডাক শোনা যায় না। কারণ বাসি ভাতের সমস্যা আমাদের নেই। কাউকে এক মুষ্টি চাল ভিক্ষা দেবেন, সেই দিনও চলে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে কোনো মানুষ না খেয়ে নেই।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সমস্ত মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে বরং মির্জা ফখরুল সাহেবরা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন সারের দাবিতে যখন মানুষ বিক্ষোভ করছে, তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে, কৃষকের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে, মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। শুধু যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের উন্নয়ন হয়েছে। আজকে প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে।
ড. হাছান বলেন, ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো ৬শ’ ডলার আর এখন প্রায় ২ হাজার ৬শ’ ডলার। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে মানুষের মাথাপিছু আয় গত ১৩ বছরে সাড়ে চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৩ বছর আগে একজন শ্রমিক সারাদিন কাজ করে তিন-চার কেজি মোটা চাল কিনতে পারতেন, এখন একজন শ্রমিক সারাদিন কাজ করে সেই চাল ১২ থেকে ২০ কেজি কিনতে পারেন। অর্থাৎ আগের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি চাল কিনতে পারে। তাই মির্জা ফখরুল সাহেবদের বলবো যে, এই ধরনের বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে আপনারা বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক জিয়ার শাস্তির মধ্যে আটকে থাকা থেকে আপনাদের রাজনীতিটাকে মুক্ত করুন।
প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আইয়ুব ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সমিতি-ডাকসু’র প্রথম নারী সহ-সভাপতি মাহফুজা খানমকে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।