আজঃ বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম
গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা

পিটার হাসের সঙ্গে ভিন্নমত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

দুই দিন আগে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে বাংলাদেশি গণমাধ্যমকর্মীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। তবে তার এ বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বা ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব নয়, বরং বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যদের ওপরই ভিসা নীতি কার্যকর হয়েছে।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উত্থাপন করেন বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ওয়াশিংটন প্রতিনিধি। এ সময় পিটার হাস যা বলেছেন, তার সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। বলেন, যারা ভিসা নীতির আওতায় পড়েছেন, তাদের নাম নির্দিষ্ট করে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এ তালিকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা রয়েছেন। 

আরও পড়ুন>> এবার বিশ্বের ২৮ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই এ ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান মিলার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো পক্ষ নেওয়ার জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়নি। বরং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ।

এদিন ভিসা নীতি ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ইস্যুতে দলটি ৪৮ ঘণ্টার যে আলটিমেটাম দিয়েছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চান খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী। তবে, সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি মিলার। 

আরও পড়ুন>> ভিসানীতিতে পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব পড়বে না: বিজিএমইএ

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে নজরদারির কথা বলে গত মে মাসে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে এই ভিসা নীতির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তবে এ নীতির আওতায় পড়া ব্যক্তিদের নামের তালিকা এখনো প্রকাশ করেনি হোয়াইট হাউজ।


আরও খবর



কক্সবাজারের মতো রেলস্টেশন ইউরোপেও কম আছে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ১১ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেল চলাচল এবং ঝিনুকের আদলে নির্মিত সৈকতনগরী কক্সবাজার রেলস্টেশন উদ্বোধন এ অঞ্চলসহ সারা দেশের মানুষের স্বপ্নকে হার মানিয়েছে।

আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী এই নতুন ১০০ কিলোমিটার রেলপথ ও কক্সবাজার রেলস্টেশন উদ্বোধন শেষে তথ্যমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ আসনের এমপি হাছান মাহমুদ ট্রেনে বসে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন নিয়ে আসবেন, আজ সেই ওয়াদা পূর্ণ হলো। কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হলো।

কক্সবাজারে এমন একটি আইকনিক রেলস্টেশনের কথা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আমি ইউরোপে পড়াশোনা করেছি, সেখানেও এত সুন্দর রেলস্টেশন খুব কম আছে।

সুতরাং এটি কক্সবাজারসহ সারা দেশের মানুষের স্বপ্নকে হার মানিয়েছে এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ হিসেবে আমি সবাইকে ট্রেনে কক্সবাজার আসার আমন্ত্রণ জানাই, বলেন তথ্যমন্ত্রী।


আরও খবর
শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাপার ৩ নেতা

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩




ভূমিকম্পে কুবিতে সব আবাসিক হলের দেয়ালে ফাটল

প্রকাশিত:শনিবার ০২ ডিসেম্বর 2০২3 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ ডিসেম্বর 2০২3 | অনলাইন সংস্করণ
Image

কুবি প্রতিনিধি

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানা ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সবক'টি আবাসিক হলের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের দক্ষিণ ব্লকের দুই করিডরের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচতলাব্যাপী, একই হলের দ্বিতীয় ও পঞ্চম তলা, নতুন ও পুরাতন ব্লকের সংযোগস্থল, কাজী নজরুল ইসলাম হলের দোতলা, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের ছাদ এবং চতুর্থ ও পঞ্চম তলা, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের পঞ্চম তলা ও নবনির্মিত শেখ হাসিনা হলের রিডিং রুমে ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব ফাটলের কোথাও স্থায়ীভাবে চিড় ধরা দিয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

আব্দুর রহমান নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ভূমিকম্প আর কিছুক্ষণ স্থায়ী হলেই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। মাত্র ৫ মাত্রার ভূমিকম্পেই সবগুলো ভবন যেভাবে দুলে উঠেছে, ৬ বা ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে সকল ভবন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে মনে হয়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী এসএম শহিদুল হাসান বলেন, ভূমিকম্পে যেসব ভবনে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো ঝুঁকিপূর্ণ নয়। কারণ এই ভবনগুলোর দেয়াল এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ভূমিকম্প হলে মূল কাঠামোতে সরাসরি প্রভাব পড়ার আগেই দেয়ালে প্রভাব পড়বে এবং ঝাঁকুনিটা দেয়ালেই লাগবে।

হলগুলোর প্রাধ্যক্ষরা বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।


আরও খবর



দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

৪৭ ইউএনওকে বদলির সিদ্ধান্ত ইসির

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৭ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বদলির অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ইসি এই প্রস্তাবে সম্মতি দেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, প্রথম পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জন, বরিশাল বিভাগের ২ জন, খুলনা বিভাগের ৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৬ জন, সিলেট বিভাগের ৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ৬ জন এবং রংপুর বিভাগের ২ জন ইউএনওকে বদলির প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে দেশের সব ইউএনওকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ইউএনওদের বদলির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে গত ৩০ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে যেসব ইউএনওর বর্তমান কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়ে গেছে, তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসিতে পাঠানো প্রয়োজন। ইউএনওদের পাশাপাশি সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে ইসি।

গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর থেকে বাছাই শুরু হয়েছে, বাছাই চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। আর আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।


আরও খবর
শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাপার ৩ নেতা

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩




‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশিত:সোমবার ২০ নভেম্বর ২০23 | হালনাগাদ:সোমবার ২০ নভেম্বর ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন সম্পাদিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ (সোমবার) দুপুরে গণভবনে মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জানা গেছে, গ্রন্থটিতে জাতির পিতার মোট ৫৮টি ভাষণ রয়েছে। প্রতিটি ভাষণের পূর্ণাঙ্গ অডিও ভার্সনের কিউআর কোড সন্নিবেশিত রয়েছে। কিউআর কোডগুলো স্ক্যান করলে প্রতিটি ভাষণ পুরোপুরি শোনা যাবে। গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছেন শেখ হাসিনা। প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্স। গণভবনে বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে সম্পাদক মো. আকরাম-আল-হোসেন এবং মাওলা ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী আহমেদ মাহমুদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

গ্রন্থটির প্রকাশক জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ইতিহাসের অমূল্য উপাদান। বাঙালি জাতির দুই সহস্রাব্দ প্রাচীন সংগ্রামী রাজনৈতিক ইতিহাসের ভেতর বঙ্গবন্ধু জ্যোতির্ময় প্রতিভায় উজ্জ্বল হয়ে আছেন তার অসামান্য সব ভাষণ গুণে। তার ভাষণসমূহ একদিকে সংগ্রামী জীবনের পরিচয়কে উদ্ভাসিত করে অন্যদিকে বাঙালির আত্মত্যাগের মহিমা এবং স্বাধীনতা প্রাপ্তির স্বার্থক অভিপ্সাকে তুলে ধরেছে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঙালির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির দীপ্ত সনদ।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ঐতিহাসিক বজ্রকণ্ঠ ভাষণের ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। ঐতিহাসিক সেই ভাষণ সূত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বঙ্গবন্ধু অর্জন করেছিলেন পোয়েট অব পলিটিক্স অভিধা। শুধু তাই নয়, সেই ভাষণটিকে ইউনেস্কো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে (এমওডব্লিউ) অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি হেরিটেজ (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সার্বিক বিচারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণে বাংলাদেশের মানুষের আত্ম-পরিচয়ের ইতিহাস দ্যুতিময় আলোক রেখায় গ্রন্থিত হয়েছে।

এই গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত তার ভাষণসমূহ শুধু বাংলাদেশের মানুষের নয় সারা পৃথিবীর মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির দিশারী হিসেবে পথ দেখাবে বলে বিশ্বাস করা যায়।


আরও খবর
হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিন আজ

সোমবার ১৩ নভেম্বর ২০২৩




অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের অভিমত

রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে অর্থনীতিতে ধস নামার শঙ্কা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বৈশ্বিক মন্দা এবং দেশে ডলারের তীব্র সংকটে অর্থনীতি এমনিতেই নাজুক। ইতোমধ্যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পড়েছে দেশ। এ অবস্থায় অস্থিরতা আরও বাড়লে অর্থনীতিতে ধস নামার আশঙ্কা করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা।

তারা বলেছেন, অর্থনীতির এ দুঃসময়ে রাজনৈতিক সমঝোতা যেখানে জরুরি, সেখানে অস্থিরতা বাড়লে অর্থনীতিতে শুধু ধসই নামবে না, আরও অনেক কিছু হতে পারে। কারণ, পরপর তিনটি একই ধরনের নির্বাচন বিদেশিরা মানবে না। এটি ইতোমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে। এতে দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি বৈদেশিক ও সামাজিক খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তারা আরও বলেছেন, দেশের স্বার্থে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের কোনো বিকল্প নেই। তা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। এজন্য দ্রুত রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।

এদিকে অর্থনীতির কথা চিন্তা করে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংস কর্মসূচি পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের মতে, অর্থনীতি ও রাজনীতি একে অন্যের পরিপূরক। তাই সংহিস কর্মসূচি দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করলে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার বোঝা দেশের সব মানুষকে বহন করতে হবে। তফশিল ঘোষণার পর অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা এসব পরিহারের আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বুধবার রাতে নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। এ তফশিল অনুযায়ী আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে একতরফা তফশিল ঘোষণা করা হলে তারা লাগাতার হরতাল-অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন। এ ধরনের কর্মসূচিতে অর্থনীতি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, করোনার সময়ে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করার আগেই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বৈশ্বিক সংকট। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। দেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। দেশেও সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে মূল্যস্ফীতির হার। একই সঙ্গে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এতে দেশের প্রায় সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়লে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এতে পুরো দেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, বৈশ্বিক ও দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে অর্থনীতির অবস্থা এমনিতেই খারাপ। এর মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠছে। সব ধরনের পরিবহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মানুষ ও পণ্যের বিপণন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার আরও হ্রাস পাবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে বিনিয়োগ ব্যাহত হবে। করোনা, বৈশ্বিক মন্দা ও ডলার সংকটের কারণে এমনিতেই বিনিয়োগ কমে গেছে। অস্থিরতা চলতে থাকলে বিনিয়োগ আরও কমবে। দেশে বিনিয়োগের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে গেছে। এর মানে হচ্ছে, বিনিয়োগও কম হচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়লে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও বাড়ে। বিনিয়োগ কমার কারণে বেসরকারি খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এতে কর্মসংস্থানের হার কমবে। সব মিলে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো দেশে বিনিয়োগ বাড়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, সন্তোষজনক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এসব না থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে না। বিনিয়োগ না বাড়লে গতিশীল হবে না অর্থনীতি। আর অর্থনীতি গতিশীল না হলে বেকারদের ভালো কর্মসংস্থান হবে না। উন্নতি হবে না মানুষের জীবনমানের।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম বলেছেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা লাগামহীনভাবে বাড়লে অর্থনীতিতে ধস নেমে যাবে। বৈশ্বিক মন্দা ও দেশে ডলারের তীব্র সংকটের কারণে অর্থনীতি এমনিতেই কঠিন সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে। করোনার কারণে অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েনি। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। চলমান অস্থিরতা আরও বাড়লে দেশের অর্থনীতি ধসে পড়বে।

তিনি বলেন, নির্বাচন একতরফা হলে বা অংশগ্রহণমূলক না হলে শুধু অর্থনীতিতে নয়, আরও বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব আসতে পারে দেশের ওপর। বিদেশিরা একতরফা নির্বাচনকে মেনে নেবে না। তখন অর্থনীতিতে নানা জটিলতা দেখা দেবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। সমঝোতার মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এমনিতেই অর্থনৈতিক চাপ চলছে, তার ওপর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটা বলার জন্য অর্থনীতিবিদ হওয়ার প্রয়োজন নেই। এ অবস্থায় চলমান ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি, ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরের সমস্যা এবং খেলাপি ঋণসহ জটিল সংকটগুলো মোকাবিলায় কতটা মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হবে, সেটিও বড় প্রশ্ন। এখন বিষয়টি হলো বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি কতটা সংঘাতময়, কতটা ব্যাপক, গভীর ও কতটা স্থায়ী হয়, তার ওপরই নির্ভর করবে আর্থিক ক্ষতি কতটা হবে। তবে স্বাভাবিকভাবেই দেখা যাচ্ছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সব পক্ষের আন্তরিকতা দরকার। কেননা ২০১৪ সালের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে বলা হয়েছিল, সে সময়ে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অন্যের পরিপূরক। তাই তফশিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর এমন কোনো কর্মসূচি দেওয়া উচিত হবে না, যাতে রপ্তানিমুখী শিল্প তথা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমনিতে বৈশ্বিক কারণে তৈরি পোশাকশিল্প একটি কঠিন সময় পার করছে, মূল্যস্ফীতির কারণে রপ্তানির অর্ডার কমে যাচ্ছে। গত কয়েকদিনের শ্রমিক অসন্তোষের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে অর্ডার হারানোর আশঙ্কা তৈরি হবে। কর্মসূচি দেওয়ার আগে রাজনীতিবিদরা দেশের অর্থনীতির কথা ভাববেন বলে আশা করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা এমন কোনো কর্মসূচি প্রত্যাশা করে না, যাতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কখনোই কোনো সংহিস কর্মসূচি প্রত্যাশিত নয়, হোক সেটা নির্বাচনকেন্দ্রিক বা অন্য কোনো কারণে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি দেওয়ার আগে অর্থনীতির কথা ভাবা উচিত। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রেতারা আগের দেওয়া অর্ডার সময়মতো ডেলিভারি পাবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, নতুন অর্ডার তো দিচ্ছেই না। তাই আগামী তিন মাসে রপ্তানিমুখী শিল্প কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সার্বিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থনীতির বিষয় মাথায় রেখে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক বলেন, সত্যি বলতে ব্যবসায়ীরা অতল সমুদ্রে আছে, কেউ ভালো নেই। সব খাতেই একই অবস্থা। দেশ এখন ক্রান্তিলগ্ন সময় পার করছে। তাই বৃহত্তর স্বার্থে দলমতনির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশকে বাঁচানো উচিত। কারও সঙ্গে কারও মতানৈক্য থাকলে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। যে কোনো দলেরই কর্মসূচি দেওয়ার আগে দেশের অর্থনীতির কথা চিন্তা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।


আরও খবর
শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাপার ৩ নেতা

মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩